shono
Advertisement

করোনা মোকাবিলায় মুখ্যমন্ত্রীর পাশে দুস্থরাও, ত্রাণ তহবিলে সাহায্য দিলেন ভিক্ষুকরা

সহানুভূতি নিয়ে বাঁচেন যাঁরা, তাঁরা এবার আর্তদের পাশে। The post করোনা মোকাবিলায় মুখ্যমন্ত্রীর পাশে দুস্থরাও, ত্রাণ তহবিলে সাহায্য দিলেন ভিক্ষুকরা appeared first on Sangbad Pratidin.
Posted: 09:00 PM Mar 27, 2020Updated: 09:00 PM Mar 27, 2020

শুভময় মণ্ডল: খোলা আকাশের নিচে থাকা ভিখারি, সহায় সম্বলহীনদের মাথায় একটা ছাদের ব্যবস্থা করেছেন উল্টোডাঙার ১৩ নম্বর ওয়ার্ড এলাকার এক সমাজসেবী রবি পাল। থাকা খাওয়া সঙ্গে সাবান স্যানিটাইজেশন সব ব্যবস্থাও করেছেন রবিবাবু। লকডাউনে ঘরে থাকবার নির্দেশ। তাই রোজকার দিনের মতো যেতে হয় না বাবুর বাড়ির কাজে বা মন্দিরের সামনে ভিক্ষা করতে। এখন রোজকার রুটিন একটু অন্যরকম। নজর সবসময় টিভির দিকে এবং চেহারায় আতঙ্কের ছাপ। দিনে চারবার চলছে মাইকিং। ঘর থেকে বাইরে না বেরনোর নির্দেশ। করোনার আতঙ্ক শুধু গ্রাস করেনি, চিন্তা কীভাবে আগামীদিনে পেট চলবে। বারবার শুনছেন চাল-ডাল-আটা পাবে তিন মাস বিনা পয়সায়। কিছুটা স্বস্তির নিঃশ্বাস। বারবার রবিবাবুকে প্রশ্ন করছেন কবে থেকে কাজে যেতে পারবেন। কিন্তু তার মধ্যেও মুখ্যমন্ত্রীর আবেদনের কথা লোকমুখে পৌঁছে গেছে তাদের কাছেও। অদ্ভুত। অবাক করা ঘটনা। কত মানুষ করোনার জন্য মারা যাচ্ছেন। তাদের সহানুভূতি দরকার। সারা বছর তো ওঁদের পেট চলে সহানভূতি দিয়েই। তাই এবার ওনাদেরও সহানুভূতি দেখানোর সময়।

Advertisement

এই অসময়ে একে একে সকলের ফাটা পুঁটলি, ছেড়া বস্তা থেকে দু-দশ টাকা বেরিয়ে এসেছে। উনি এত করছেন। উনি এভাবে বলছেন, যতটুক পারি না দিলে শান্তি পাব না। লক্ষ্মী অধিকারী, মনিকা নাথ বীণাপাণি দাস, বেলা নাথ, মনি দাস সবার মুখে এক কথা। উদ্যোক্তা সমাজসেবী রবিবাবু বলছেন, এ এক অপূর্ব অভিজ্ঞতা। রবিবাবু পেশায় একজন কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মচারী। ৪০ বছর উল্টোডাঙা এলাকায় ১৩ নম্বর ওয়ার্ডে বসবাস করেন। রবিবাবুর কথায়, করোনার ভয়ে উনিও আতঙ্কে আছেন। বারবার যখন কেন্দ্র এবং রাজ্য সরকার এত পদক্ষেপ নিচ্ছে। তাই উনিও মানবিক না হয়ে থাকতে পারলেন না। এলাকার একটি বাড়ি ফাঁকা দেখে সমস্ত ব্যবস্থা করে সেখানে এনাদের নিয়ে আসেন। এবং নিজে সমস্ত দায়িত্ব নিয়ে বার বার সাবান দিয়ে হাত ধুতে বলেন, সবাইকে দূরত্ব বজায় রেখে ঘুমাতে দেন।

[আরও পড়ুন: সংকটের সময় এগিয়ে এল ‘সংবাদ প্রতিদিন’ও, রাজ্যের করোনা তহবিলে অর্থদান কর্মীদের]

ওঁদের মধ্যে লক্ষ্মী অধিকারী তাঁকে বলেন, ‘বাবা, একটা ভাঁড় এনে দিও তো। আমরা কিছু টাকা মুখ্যমন্ত্রীকে দেব। তবে সৌরভ গাঙ্গুলির মতো দিতে পারব না। ওঁদের মধ্যে একজনের প্রশ্ন ছিল, ১০ টাকা দিলে কি আর মুখ্যমন্ত্রী নেবেন বা কীভাবে দেব সেটাও তো জানি না। নাহয় আমরা সবাই মিলে একটা টাকা যোগাড় করে দেব। তুমি একটু ব্যাংকের মারফত টাকাটা দিয়ে দেবে। ঠিক যেভাবে দেখাচ্ছে টিভিতে।’ তাই রবিবাবু চিন্তা করলেন, এঁরা যদি দিতে পারেন তাহলে আমরাও তো কিছু না কিছু দিতে পারি। পাড়ার ক্লাব গুলোকে তো মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রী ৫ লক্ষ টাকা করে দেন। তাই পাড়ার পনেরোটা ক্লাবকেও আমি ৫ হাজার টাকা করে দিতে বলেছি। তার মধ্যে সাত থেকে আটটা ক্লাব তাঁর হাতে হাত মেলাবে। তিনি নিজেও কিছু দেবেন। পরিবার ও বন্ধুদের কাছেও আবেদন জানিয়েছেন সাহায্যের।

আগে প্রশ্ন ছিল, অসহায় মানুষগুলো খাবে কী, থাকবে কোথায়। কিন্তু ওরাই তাঁর চোখটা খুলে দিয়েছেন। আরও দশটা মানুষকে সাহায্য করার সুযোগ করে দিয়েছেন। তাই আর পিছিয়ে থাকতে পারলেন না। এনে দিলেন ভাঁড়। সবাই এক এক করে তাতে নিজেদের সাধ্যমতো টাকা দিয়েছেন। সবথেকে বেশি টাকা দিয়েছেন বীণাপাণিদি। ১৮ টাকা। চলছে সংগ্রহের কাজ। আগামিকাল বা পরশুর মধ্যে খুচরো টাকাগুলোকে নিয়ে নোট করে মুখ্যমন্ত্রী তহবিলে জমা করবেন রবিবাবু।

[আরও পড়ুন: ‘আমরা করব জয়’, গৃহবন্দিদের গানে একটুকরো ইটালি হয়ে উঠল কলকাতার বো ব্যারাক]

The post করোনা মোকাবিলায় মুখ্যমন্ত্রীর পাশে দুস্থরাও, ত্রাণ তহবিলে সাহায্য দিলেন ভিক্ষুকরা appeared first on Sangbad Pratidin.

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement