গোবিন্দ রায়: নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় এবার সিবিআইয়ের মামলাতেও জামিন পেলেন সুজয়কৃষ্ণ ভদ্র (Sujay Krishna Bhadra) ওরফে 'কালীঘাটের কাকু'। একাধিক শর্তসাপেক্ষে তাঁর জামিন মঞ্জুর করেন কলকাতা হাই কোর্টের বিচারপতি শুভ্রা ঘোষ। এর আগে ইডির মামলায় আগেই জামিন পেয়েছেন তিনি। শারীরিক সমস্যার জেরে বেশ কয়েকমাস অন্তর্বর্তী জামিনে মুক্ত রয়েছেন 'কালীঘাটের কাকু'।
সিবিআইয়ের মামলায় এদিন জামিন দিয়ে কলকাতা হাই কোর্ট বেশ কয়েকটি শর্ত বেঁধে দেয়। জানানো হয়েছে, কোনও প্রয়োজনে কলকাতার বাইরে যেতে পারবেন না তিনি। বিশেষ আদালতের প্রত্যেক শুনানিতে সশরীরে হাজিরা দিতে হবে তাঁকে। কোনও নথিপত্র কিংবা তথ্য বিকৃত করতে পারবেন না 'কালীঘাটের কাকু'। তাঁর ব্যক্তিগত মোবাইল নম্বর আদালত এবং তদন্তকারী সংস্থাকে জানাতে পারবেন। আচমকা নম্বর বদলাতে পারবেন না। সপ্তাহে একবার তদন্তকারী আধিকারিকের সঙ্গে দেখা করতে হবে। তদন্তে সহযোগিতা করতে হবে। জামিন পেলেও আপাতত পাসপোর্ট আদালতে জমা রাখতে হবে 'কালীঘাটের কাকু'কে।
উল্লেখ্য, নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় গ্রেপ্তার হন ‘কালীঘাটের কাকু’। কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার দাবি, নিয়োগ দুর্নীতির কয়েকশো কোটি টাকা লেনদেন প্রায় সবই জানা ছিল তাঁর। কীভাবে চাকরিপ্রার্থীদের কাছ থেকে টাকা তোলা হবে, অযোগ্য প্রার্থীদের তালিকা কোন কোন জায়গায় পাঠাতে হবে, সেই পরিকল্পনা করতে সুজয়কৃষ্ণ প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের অফিসে যেতেন। পর্ষদের প্রাক্তন সভাপতি মানিক ভট্টাচার্যর অফিসে বসেই নিয়োগ দুর্নীতির ছক কষতেন সুজয়কৃষ্ণ ভদ্র (Sujay Krishna Bhadra)। তাঁরই নির্দেশে কুন্তল, তাপসদের হাত দিয়ে টাকা যেত। এমনকী, সুজয়কৃষ্ণ পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গেও যোগাযোগ রাখতেন। ইডির গোয়েন্দাদের মতে, সুজয়কৃষ্ণর যে তিনটি সংস্থার সন্ধান পাওয়া যায়, সেগুলির মাধ্যমেই নিয়োগ দুর্নীতির বিপুল কালো টাকা সাদা করা হয়েছে। সে কারণে তাকে জেলবন্দি করে দফায় দফায় জিজ্ঞাসাবাদ করেন তদন্তকারীরা।
অসুস্থতার কারণ দেখিয়ে এর আগে একাধিকবার বেহালার সুজয়কৃষ্ণ ভদ্র জামিনের আবেদন করেছিলেন। কিন্তু কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার একাধিক যুক্তিতে বারবার তা খারিজ হয়েছে। অবশেষে চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে কলকাতা হাই কোর্ট তাঁর জামিন মঞ্জুর করে। তবে বিচারপতি অরিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় এবং বিচারপতি অপূর্ব সিনহা রায়ের ডিভিশন বেঞ্চ সুজয়কৃষ্ণবাবুকে জামিনের একাধিক শর্ত বেঁধে দিয়েছিলেন। তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য, এখনই এলাকার বাইরে যেতে পারবেন না। এরপর মার্চে একই কারণে জামিনের মেয়াদ বাড়াতে চেয়ে হাই কোর্টের দ্বারস্থ হন সুজয়কৃষ্ণ ভদ্র। শারীরিক পরিস্থিতির কথা বিবেচনা করে অনুমোদন দেয় বিচারপতি অরিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়ের বেঞ্চ।
