সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: রাজ্য মেডিক্যাল রেজিস্ট্রার পদে মানস চক্রবর্তীকে অপসারণের নির্দেশ স্বাস্থ্য ভবনের। রেজিস্ট্রার পদে নতুন কাউকে নিয়োগ করার নির্দেশ দিয়ে রাজ্য মেডিক্যাল কাউন্সিলের চেয়ারম্যান ডা. সুদীপ্ত রায়কে চিঠি লিখলেন স্বাস্থ্যসচিব। চিঠিতে স্বাস্থ্য ভবনের তরফে জানানো হয়েছে, রাজ্য মেডিক্যাল কাউন্সিলের রেজিস্ট্রারের যে পুনর্নিয়োগ হয়েছিল তা নিয়ম মেনে হয়নি।
ওয়েস্টবেঙ্গল মেডিক্যাল কাউন্সিলের রেজিস্ট্রারের নিয়োগ নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে সরব ছিল রাজ্যের সমস্ত সরকারি বেসরকারি চিকিৎসক সংগঠন। দেশ তো বটেই, রাজ্যের সর্ববৃহৎ ডাক্তারদের সংগঠন আইএমএ (ইন্ডিয়ান মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশন) থেকেও দফায় দফায় স্বাস্থ্য ভবনে চিঠি পাঠিয়ে রেজিস্ট্রারের 'পুনর্নিয়োগ' নিয়ে সরব হয়েছিল। এই ইস্যুতেই এবার স্বাস্থ্য ভবন থেকে রাজ্য মেডিক্যাল কাউন্সিলকে চিঠি দিয়ে জানানো হল, ২০১৯ সালে রেজিস্ট্রার পদে মানস চক্রবর্তীর যে 'পুনর্নিয়োগ' হয়েছিল, তা অবৈধ। অবিলম্বে মেডিক্যাল কাউন্সিলের সভাপতিকে নতুন রেজিস্ট্রার নিয়োগ করতে নির্দেশ দিয়েছে স্বাস্থ্যদপ্তরের অতিরিক্ত সচিব ডা. অনিরুদ্ধ নিয়োগী। এই পদক্ষেপের ফলে ২০২১ সালে কাউন্সিলের নির্বাচন পর্ব থেকে শুরু করে সম্প্রতি সন্দীপ ঘোষের রেজিস্ট্রেশন বাতিল-সহ রেজিস্ট্রারের সই করা একগুচ্ছ সিদ্ধান্ত ও কার্যকলাপ আইনি বৈধতা হারাল।
উল্লেখ্য, রেজিস্ট্রারের অপসারণের দাবিতে অন্তত ৫২ টি সরকারি চিকিৎসক সংগঠন ২০১৯ সাল থেকে দফায় দফায় অভিযোগ জানিয়েছে। তাদের দাবি ছিল, আইন অনুযায়ী মেয়াদ উত্তীর্ণ হওয়ার পর কোনও একজন ব্যক্তিকে এতদিন ধরে রেজিস্ট্রার পদে রাখা যায় না। মানস চক্রবর্তীর নিয়োগ অবৈধ হওয়ার জেরে প্রশ্নের মুখে ২০১৯ সালের পর যে চিকিৎসকরা পাশ করে রেজিস্ট্রেশন নম্বর পেয়েছেন, তাঁদের ভবিষ্যৎ। কারণ তাঁদের রেজিস্ট্রেশন নম্বর এসেছে মানস চক্রবর্তীর হাত থেকে। ফলে সেই রেজিস্ট্রেশনের আইনি বৈধতা বড়সড় প্রশ্নের মুখে পড়ল। যদিও রেজিস্ট্রার মানস চক্রবর্তীকে রাখতে পালটা চিঠি পাঠিয়েছেন স্বাস্থ্য কমিশনের সভাপতি ডা. সুদীপ্ত রায়। কিন্তু সেই চিঠিকে গুরুত্ব দিতে রাজি নয় স্বাস্থ্য ভবন। একাধিক তথ্য তুলে ধরে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে স্বাস্থ্য কমিশনের সংবিধানের বিরোধী এই নিয়োগ।
অন্যদিকে, রাজ্য মেডিক্যাল কাউন্সিলের মনোনীত সদস্য শান্তনু সেনকে পদ থেকে সরাতে স্বাস্থ্য ভবনে চিঠি দিয়েছেন ডা. সুদীপ্ত রায়। চিঠিতে তাঁর অভিযোগ, কারণ না দেখিয়েই রাজ্য মেডিক্যাল কাউন্সিলের শেষ ৩টি বৈঠকে গরহাজির ছিলেন শান্তনু। ৬টি বৈঠকে গরহাজির থাকায় মেডিক্যাল কাউন্সিলের আইন অনুযায়ী ওই পদটি এখন ফাঁকা। স্বাস্থ্য কমিশনের সভাপতির দাবি, শান্তনুর জায়গায় ওই পদে নতুন কাউকে মনোনীত করা হোক।