সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: বাজেট বক্তৃতায় ছিল প্রস্তাব। তা পেশ হওয়ার সাতদিনের মধ্যে রাজ্যে প্রথম ‘মা কিচেনে’র (Maa Kitchen) উদ্বোধন করে ফেললেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এই কিচেনগুলি থেকে মাত্র পাঁচ টাকায় পাওয়া যাবে ডিম-ভাতের থালি। আপাতত সেই নিয়েই সরগরম রাজ্য রাজনীতি। বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ (Dilip Ghosh) ‘মা কিচেন’ নিয়ে রীতিমতো বিতর্কিত মন্তব্য করেছেন। তাঁর দাবি, বাংলার মানুষকে গরিব করে রেখেছে এই সরকার। তাই লঙ্গরের ধাঁচে ৫ টাকায় ডিমভাত খাওয়ানো হচ্ছে।
সোমবার ‘চায়ে পে চর্চা’য় বিজেপির (BJP) রাজ্য সভাপতি বলেন,”দিদিমণি একবার বললেন আমি ৮০ শতাংশ মানুষকে ২ টাকা করে চাল খাওয়াবো। কারণ বাংলার মানুষের কাছে ৩০ টাকা করে চাল কেনার পয়সা নেই। দিদিমণি চাকরি-বাকরি কাউকে দেননি। বাংলার মানুষকে গরিব করে রেখেছেন। তাই ৮০ শতাংশ লোককে ২ টাকা কিলো চাল খাইয়েছে। একটা সময় বাংলায় লঙ্গর চলত ৭০-৭২ সালের দিকে। মানুষ খেতে পেত না তাই লঙ্গর চলত। আজকে বাংলার সাধারণ মানুষের কাছে খাওয়ার পয়সা নেই। রোজগার নেই। তাই ৫ টাকা করে ক্যান্টিনে খাবার খাওয়াতে হচ্ছে। এই পাঁচ টাকা করে খাবার বিলি করে নিজের সরকারেরই ব্যর্থতা তুলে ধরলেন মুখ্যমন্ত্রী।” দিলীপ ঘোষ একা নন, বিধানসভার বিরোধী দলনেতা আবদুল মান্নানও এই ক্যান্টিন নিয়ে তোপ দেগেছেন সরকারকে। তাঁর অভিযোগ, “গরিব মানুষকে আহার দেওয়ার নাম করে কোটি কোটি টাকা লুঠ করার ছক করছে সরকার। আর লোককে দেখাচ্ছে আমি ৫ টাকার খাবার দিচ্ছি। সাহস থাকলে মুখ্যমন্ত্রী জানান, মার্চ মাস পর্যন্ত যে হিসেব আপনি বিধানসভায় পেশ করেছেন, তাতে এই প্রকল্পের খরচের হিসেব আছে কিনা।” সরকার পক্ষ অবশ্য বিরোধীদের কটাক্ষকে পালটা দিচ্ছে না। রাজ্যের পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিমের (Firhad Hakim) মতে, এই মা কিচেন গরিব মানুষের জন্য আশীর্বাদ হতে চলেছে। বিজেপি এসব বুঝবে না।
[আরও পড়ুন: মইদুলের মৃত্যুতে পুলিশ ও রাজ্যকে নিশানা সুজন-মান্নানের, রাজ্যজুড়ে প্রতিবাদ কর্মসূচি DYFI-এর]
প্রসঙ্গত, সরকারের প্রস্তাব অনুযায়ী, মা কিচেনে ৫ টাকার যে থালি দেওয়া হচ্ছে তাতে ২০০ গ্রাম চালের ভাতের সঙ্গে থাকবে সবজি এবং ডালও। সঙ্গে অবশ্যই থাকছে ডিমের ঝোল। আপাতত কলকাতার ১৬টি বরোতেই দুপুরে এই খাবারের জোগান দেবে পুরসভা। পরে পর্যায়ক্রমে মহানগরের ১৪৪টি ওয়ার্ডেই এই ‘মায়ের রান্নাঘর’ চালু হবে। রাজ্যের সব জেলার সদর শহরগুলিতেও চলবে এই ক্যান্টিন। পরে রাজ্যের অন্যান্য প্রান্তেও এই ধরনের ক্যান্টিন খোলা হবে। সেজন্য বাজেটে ১০০ কোটি টাকার বরাদ্দও করেছে সরকার। ভোটের আগে মমতা সরকারের এই সিদ্ধান্তকে অনেকে মাস্টারস্ট্রোক হিসেবে বিবেচনা করছেন। এ নিয়ে রাজনৈতিক তরজাও কম হচ্ছে না।