রূপায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়: জ্যোতি বসু গবেষণা কেন্দ্রে বর্তমান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রসঙ্গ কীভাবে থাকবে তা নিয়ে ধন্দে সিপিএম। নিউটাউনে এই গবেষণা কেন্দ্রের ভবনের প্রথম পর্যায়ের উদ্বোধন হতে চলেছে আগামী ১৭ জানুয়ারি। জ্যোতি বসু সেন্টার ফর সোশাল স্টাডিজ এন্ড রিসার্চের ভবনে মুখ্যমন্ত্রী থাকাকালীন বা পরবর্তী সময়ে জ্যোতিবাবুর সঙ্গে যাঁদের রাজনৈতিক বা ব্যক্তিগত সুসম্পর্ক কিংবা সখ্য ছিল তাদের প্রসঙ্গও থাকবে।
১৭ জানুয়ারি এই রিসার্চ সেন্টারের ভবনের প্রথম পর্যায়ের উদ্বোধন উপলক্ষে মঙ্গলবার নিউটাউনে এক সাংবাদিক সম্মেলনে ছিলেন বামফ্রন্ট চেয়ারম্যান বিমান বসু ও সিপিএম রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম, সিপিএম নেতা রবীন দেব, সুখেন্দু পানিগ্রাহী। সেখানে বিমানবাবুকে প্রশ্ন করা হয়েছিল, জ্যোতি বসু গবেষণা কেন্দ্রে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রসঙ্গ থাকবে কি না? এই প্রশ্নের সরাসরি উত্তর এড়িয়ে গিয়ে বিমান বসু বলেন, ‘‘যেসব বিষয়গুলি প্রাসঙ্গিক সেগুলো থাকবে। আমরা অনেকে চলে যাব। কিন্তু সমাজ প্রগতির ধারা অগ্রসর হবেই। তার সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত যে বিষয়গুলি আছে, তার সঙ্গে যে চরিত্রগুলি আছে, সেগুলো গবেষণা কেন্দ্রের গ্রন্থাগার ও প্রদর্শনী কক্ষে থাকবে।’’
প্রসঙ্গত, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আন্দোলন ছিল জ্যোতি বসুর বিরুদ্ধে। কিন্তু কেন্দ্রে মন্ত্রী হয়ে এসে মমতা প্রথম প্রণাম করেছিলেন জ্যোতি বসুকে। সিপিএমের হাতে বারবার আক্রান্ত হয়েছেন মমতা। জ্যোতি বসুর অবসরের পর বুদ্ধবাবুর বিরুদ্ধে নালিশ জানাতে মমতা জ্যোতিবাবুর কাছে গিয়েছিলেন। সিঙ্গুর-নন্দীগ্রামের সময়। কাজেই এই গোটা টানাপোড়েনটা সিপিএম গবেষণা কেন্দ্রের প্রদর্শনী কক্ষে কীভাবে রাখবে সেটা নিয়েই কার্যত ধন্দ। এদিন বিমানবাবুর বক্তব্য থেকেই তেমনটাই স্পষ্ট বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল।
এদিকে, ১৭ জানুয়ারি নিউটাউনে সিপিএমের এই অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসাবে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে বাংলাদেশের সঙ্গীত শিল্পী রেজওয়ানা চৌধুরি বন্যাকে। বর্তমান বাংলাদেশ আবহে যা নিয়েই রাজনৈতিক মহলে শুরু হয়েছে বিতর্ক। পাশাপাশি ওইদিন অনুষ্ঠানে সঙ্গীতও পরিবেশন করার কথা রয়েছে রেজওয়ানার। বাংলাদেশ আবহে রেজওয়ানাকে আমন্ত্রণ করা প্রসঙ্গে রিসার্চ সেন্টারের সভাপতি বিমান বসুর বক্তব্য, ‘‘এটা নিয়ে গবেষণার দরকার নেই। রেজওয়ানা বহু বছর শান্তিনিকেতনে থেকেছে। এখন কলকাতায় আছেন। রবীন্দ্র সংগীত শিল্পী হিসেবে তিনি প্রতিষ্ঠিত। বাংলাদেশের মানুষের সঙ্গে পশ্চিমবঙ্গ তথা ভারতের মানুষের সম্পর্ক থারাপ হোক আমরা কেউ চাই না। চাই না বলেই প্ররোচনামূলক কথা বলি না।’’ সেন্টারের সম্পাদক রবীন দেব জানান, গত ১৭ জানুয়ারি প্রয়াত সীতারাম ইয়েচুরি শিলান্যাস করেছিলেন জ্যোতি বসু রিসার্চ সেন্টারের। আগামী ১৭ জানুয়ারি প্রথম পর্যায়ের কাজ শুরু করব ভবনের উদ্বোধন করে।
প্রসঙ্গত, জ্যোতি বসু গবেষণা কেন্দ্রের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকার কথা সিপিএমের পলিটব্যুরোর কো-অর্ডিনেটর প্রকাশ কারাটেরও। তিনিই উদ্বোধন করবেন প্রথম পর্যায়ের কাজের। পাশাপাশি ১৭ থেকে ১৯ জানুয়ারি নিউটাউনেই বসছে সিপিএমের কেন্দ্রীয় কমিটির বৈঠকও।