সুমন করাতি, হুগলি: নিখোঁজ হওয়ার দিনদুয়েক পর ওড়িশার কেওনঝড় থেকে উদ্ধার বাংলার কলেজ ছাত্রের দেহ। শনিবার সকালে তারাশংকর সরকারের দেহ উদ্ধার করা হয়। দুঃসংবাদ পৌঁছতেই আশুতোষ কলেজের ছাত্রের আরামবাগের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের ব্যানার্জিপাড়ার বাড়িতে নেমেছে শোকের ছায়া। চোখের জল বাঁধ নামছে না কারও।
ওড়িশার কেওনঝড়ের ঝরনায় পড়ে গিয়ে নিখোঁজ হন দক্ষিণ কলকাতার আশুতোষ কলেজের ছাত্র তারাশংকর সরকার। তাঁর সঙ্গে পড়ে গিয়েও একটি পাথরে আটকে কোনওমতে বেঁচে যান নীলাব্জ। যদিও মাথা ফেটে আহত হন তিনি। গত মঙ্গলবার আশুতোষ কলেজের পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের স্নাতকোত্তর দ্বিতীয় বর্ষের ৩৮ জন ছাত্রছাত্রীকে নিয়ে ওড়িশার কেওনঝড় ও বারবিলে শিক্ষামূলক ভ্রমণে রওনা হন অধ্যাপকরা। বৃহস্পতিবার ট্রেন ধরার আগে প্রোজেক্টের অংশ হিসাবেই কেওনঝড়ের পুন্ডুল ঝরনায় যান ছাত্রছাত্রীরা। অধ্যাপকরা অন্য গাড়িতে করে সেখানে পৌঁছনোর আগেই ঘটে যায় দুর্ঘটনাটি। ঝরনাকে ব্যাকগ্রাউন্ডে রেখে সেলফি তোলার চেষ্টা করছিলেন দুই ছাত্র। তখনই ঝরনার জলে পা পিছলে পড়ে যান দুই ছাত্র।
[আরও পড়ুন: লিভ ইন পার্টনারকে ধারালো অস্ত্রের কোপ! গড়িয়ায় তরুণীর হাতের শিরা কাটল যুবক]
পুলিশের কাছে নীলাব্জর দাবি, জুতো পরা অবস্থায় পা পিছলে ঝরনার জলে পড়ে যান তারাশংকর। সে মুহূর্তে বন্ধুর হাত ধরে বাঁচাতে গিয়ে নীলাব্জও জলে পড়ে যান। প্রচণ্ড স্রোতে দু’জন মিলে এগিয়ে যেতে থাকেন। কিছুটা এগিয়ে গিয়েই ঝরনার কয়েকটি ধাপ। প্রায় ১৫ ফুট লাফিয়ে ঝরনা পড়েছে নিচের সরোবরে। প্রথমে দুজন হাত ধরে থাকলেও ঝরনা বেয়ে সরোবরে পড়ার সময় তাঁদের হাত ছেড়ে যায়। কোনওমতে সামনে একটি পাথর দেখতে পেয়ে নীলাব্জ তা ধরে ফেললে পাথরের খাঁজে ঢুকে তাঁর মাথা ফেটে যায়। কিন্তু প্রচণ্ড জলের তোড়ে ভেসে যান তারাশংকর। এনডিআরএফ এবং ওড়িশা পুলিশ যৌথভাবে ঝরনায় তল্লাশি চালায়। টানা দুদিন ধরে তল্লাশির পর হুগলির আরামবাগের বাসিন্দা প্রাক্তন পুলিশ আধিকারিকের ছেলে তারাশংকরের দেহ উদ্ধার হয়।