সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: দৈনিক সংক্রমণের সংখ্যায় গত ২৪ ঘণ্টায় বিশ্বরেকর্ড গড়েছে ভারত। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত দেশে নতুন করে করোনা (COVID-19) আক্রান্ত হয়েছেন ১ লক্ষ ৬৮ হাজার ৯১২ জন। এর মধ্যেই করোনা বিধির তোয়াক্কা না করে কুম্ভমেলায় মানুষের ঢল।সূত্রের খবর মানলে, সোমবার কুম্ভমেলায় (Kumbh Mela) প্রায় ২৮ লক্ষ মানুষের জমায়েত হয়েছিল। যার মধ্যে ১০২ জনের করোনা (Corona Virus) পরীক্ষার ফল পজিটিভ এসেছে। তবে এই সংখ্যা মাত্র ১৮,১৬৯ জন ভক্তের পরীক্ষার পরই জানা গিয়েছে। বাকিদের পরীক্ষার খবর এখনও পর্যন্ত মেলেনি। কুম্ভমেলার এই ছবি সামনে আসার পরই রীতিমতো আতঙ্ক ছড়িয়েছে দেশে।
সোমবার সকাল এগারোটার আশপাশেই গঙ্গায় ডুব দেওয়া ভক্তের সংখ্যা দশ লক্ষ পেরিয়ে যায়। হিন্দুদের বিশ্বাস, এই শুভ তিথিতে গঙ্গাস্নান করলে সব পাপ ধুয়েমুছে যায়। গঙ্গাস্নানের সময় তো বটেই, তার আগে-পরেও অনেক ভক্ত মাস্ক পরার ধার ধারেননি। কুম্ভমেলার নিরাপত্তার ভারপ্রাপ্ত অন্যতম পুলিশ কর্তা সঞ্জয় গুগিয়াল সংবাদসংস্থা রয়টার্সকে বলেছিলেন, “এখানে ভিড় প্রতি মুহূর্তে বেড়ে চলেছে। পরিস্থিতি সামলানো ক্রমশ কঠিন হয়ে যাচ্ছে। পুলিশের তরফ থেকে বারবার সবাইকে বলা হচ্ছে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে। কিন্তু এই অবস্থায় তা কতটা সম্ভব?” হরিদ্বারের প্রতি ঘাটে কোভিডবিধি মেনে চলার নোটিস টাঙানো হয়েছে। বিশেষজ্ঞরা বারবার জনসাধারণের কাছে আবেদন করছেন, তাঁরা যেন বড় জমায়েত না করেন। তেরো সাধু আখড়ার জন্য আলাদা আলাদা সময়ে ঘাটের ব্যবস্থা করা হয়েছে। যখন সব ঘাটে সাধারণ ভক্তদের প্রবেশ নিষেধ। কিন্তু ১২ বছরে একবার যে মহাপুণ্যের সুযোগ পাওয়া যায়, তার আলোয় সব নিষেধাজ্ঞা বোধহয় ফিকে হয়ে গিয়েছে।
কুম্ভমেলায় অংশ নিতে হলে কোভিড নেগেটিভ সার্টিফিকেট দেখাতে হবে, উত্তরাখণ্ড সরকারের এই নির্দেশই তাঁদের রক্ষাকবচ হবে বলে দাবি অনেক ভক্তের। তাঁদের মনে হচ্ছে, কোভিড এখন অতটাও মারাত্মক নয়।পরিসংখ্যান অবশ্য অন্য কথা বলছে। গত চব্বিশ ঘণ্টায় হরিদ্বারে নতুন করে করোনা আক্রান্ত হয়েছেন ৩৮৬ জন। শহরে সক্রিয় কেসের সংখ্যা ২,০৫৬। কুম্ভমেলার সৌজন্যে মাত্র এক সপ্তাহের ব্যবধানে দৈনিক আক্রান্ত এবং সক্রিয় কেস, দু’টো সংখ্যাই একশো শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে গঙ্গাতীরের শহরে। গত ৪ এপ্রিল এই শহরে দৈনিক আক্রান্ত হয়েছিলেন ১৭৩ জন। সক্রিয় কেসের সংখ্যা ছিল ৮৩৭।
[আরও পড়ুন: ভরতি নেয়নি গুজরাটের হাসপাতাল, চিকিৎসার অভাবে বাঙালি অধ্যাপিকার মৃত্যু!]
উত্তরাখণ্ডের ডিজি অশোক কুমারের দাবি, কুম্ভমেলা নাকি একেবারেই সংক্রমণপ্রবণ ছিল না। কারণ মেলায় আসা ৫৩ হাজার মানুষের করোনা পরীক্ষা করা হয়েছিল। যা কিনা ৯০ শতাংশ ভক্ত বলে দাবি করেছেন তিনি। আবার পুণ্যস্নানের আশায় হরিদ্বারে আসা মানুষ সেখানে থাকবেন না বলেই দাবি তাঁর। কিন্তু তাঁর এই দাবি কতটা ধোপে ঢিকবে, তা অদূর ভবিষ্যতেই জানা যাবে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।