সুমিত বিশ্বাস ও সুনীপা চক্রবর্তী: অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের কর্মসূচির মাঝে ‘জয় শ্রীরাম’ স্লোগান দিয়ে ‘কুড়মি’ বিক্ষোভ ঘিরে উত্তাল রাজ্য রাজনীতি। শুক্রবার সন্ধের ঘটনায় ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে বিবৃতি জারির কথা বলেছিলেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক। তবে ১৮ ঘণ্টার মধ্যে নিজেদের অবস্থান স্পষ্ট করলেন আদিবাসী কুড়মি সমাজের মূল মানতা অজিতপ্রসাদ মাহাতো। হামলার অভিযোগ অস্বীকার করেছেন ঘাঘর ঘেরাও কমিটির সদস্য রাজেশ মাহাতোও। যদিও পুলিশের এফআইআরের ভিত্তিতে বিকেলের পর তাঁকে আটক করা হয়েছে। অভিষেকের কনভয়ে হামলার সময় তিনি ওখানেই ছিলেন বলে পুলিশের অভিযোগ।
গত ১৯ মে থেকে চিকিৎসার কারণে ভেলোরে রয়েছেন আদিবাসী কুড়মি সমাজের মূল মানতা অজিতপ্রসাদ মাহাতো। শুক্রবার সন্ধের ঘটনার পর ভিডিও বার্তা দেন তিনি। মন্ত্রী ও বিধায়কের গাড়িতে হামলার তীব্র নিন্দা করেন। ঘটনায় কড়া আইনি ব্যবস্থার দাবিও জানান। আর এই এই ভিডিও বার্তা থেকে আরও একবার পরিষ্কার হয়ে গেল কুড়মি আন্দোলনের বিভাজন। শুক্রবার কুড়মিদের যে কর্মসূচি থেকে হামলার ঘটনা ঘটেছিল, তা কুড়মিদের চারটি সংগঠন নিয়ে গঠিত ঘাঘর ঘেরাও কেন্দ্রীয় কমিটির। এই সংগঠনের সঙ্গে কুড়মিদের দাবিদাওয়ার ভিত্তিতে আদিবাসী কুড়মি সমাজের সঙ্গে বেশ কিছু মতপার্থক্য রয়েছে।
[আরও পড়ুন: দুর্ঘটনা নাকি অন্য কিছু? দুর্গাপুরে সিভিক ভলান্টিয়ার ও তাঁর ২ বোনের অগ্নিদগ্ধ দেহ উদ্ধারে চাঞ্চল্য]
ঘাঘর ঘেরাও কেন্দ্রীয় কমিটির মধ্যে কুড়মিদের যে চারটি সংগঠন রয়েছে সেগুলি হল ‘কুড়মি সমাজ, পশ্চিমবঙ্গ,’ ‘কুড়মি সেনা’, ‘আদিবাসী জনজাতি কুড়মি সমাজ’, ‘হামরা ৮১ গুষ্ঠীর আগদেহলি।’ গত এপ্রিলে খেমাশুলিতে যে আন্দোলন হয়েছিল সেই রেল ও সড়ক অবরোধ শেষে এই ঘাঘর ঘেরাও কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্যরা নবান্নে বৈঠক করতে যান। সেই বৈঠক ফলপ্রসূ হয়নি। তার ফলে আন্দোলনের ঝাঁজ বাড়ে। ‘ঘাঘর ঘেরাও’ করে জঙ্গলমহলে যাঁরা সব রাজনৈতিক দলের কর্মসূচি বন্ধ করে দেন, তাঁরাই দিলীপ ঘোষ, মানস ভুঁইয়া, জুন মালিয়া, একাধিক বাম নেতা ও পুরুলিয়া জেলা তৃণমূলের চেয়ারম্যান হংসেশ্বর মাহাতোকে ঘেরাও করেন। ইতিমধ্যেই তাঁরা রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী শান্তিরাম মাহাতোকেও ঘেরাও করবে বলে কর্মসূচি নিয়েছে।
তাঁরা নিজেদের দাবির ভিত্তিতে শাসকদলের বিরুদ্ধে আন্দোলন করছে। বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাদের সামাজিক সংগঠনে আসার আহ্বান জানান। গৃহস্থের দেওয়ালে রাজনৈতিক প্রচার বন্ধে দেওয়াল লিখন করেন। একইভাবে এই কর্মসূচি পালন করছে ঘাঘর ঘেরাও কেন্দ্রীয় কমিটিও। কিন্তু তারা সংশ্লিষ্ট নেতাকে ঘন্টার পর ঘন্টা ঘেরাও করে বিক্ষোভ দেখাচ্ছে। আদিবাসী কুড়মি সমাজ তা করছে না। নিজেদের দাবিদাওয়ার ভিত্তিতে রেল-সড়ক অবরোধ এবং বিক্ষোভ কর্মসূচি নিয়েছে।
দেখুন ভিডিও: