অভিরূপ দাস: বিদেশ নয়, শাপমুক্তি হল এ দেশেই। পৃথিবীর বৃহত্তম টিউমার (Tumor) অস্ত্রোপচার করে শিরোনামে ফর্টিস মেমোরিয়াল রিসার্চ ইনস্টিটিউট।
পঁচিশ বছরের তরতাজা যুবক। দম নিতে পারছিলেন না। ওজন বেড়ে গিয়েছিল মারাত্মক। বুকের সিটি স্ক্যান করতেই ধরা পড়ল রহস্য। গোটা বুক জুড়ে সিংহাকৃতি এক মাংসপিণ্ড। চিকিৎসকরা বলছেন এই টিউমার পৃথিবীর বৃহত্তম। মেডিক্যাল জার্নাল তেমনটাই বলছে। বুক থেকে কেটে দাঁড়িপাল্লায় বসানোর পর যার ওজন ১৩.৮৫ কিলোগ্রাম।
[আরও পড়ুন: মালিকের ৫০ লক্ষ টাকা চুরি চালকের, বেশিরভাগ অর্থই উদ্ধার করল ভবানীপুর থানার পুলিশ]
এর আগে সর্ববৃহৎ যে টিউমারের অস্ত্রোপচার হয়েছিল তা গুজরাটে। ওজন ছিল ৯.৫ কিলোগ্রাম। ভয়ঙ্কর বুকব্যথা আর শ্বাসকষ্ট নিয়ে আগস্টের শেষে হাসপাতালে আসেন দেবেশ শর্মা (২৫)। এর আগে তিন মাস তিনি চিত হয়ে শুতে পারেননি বাড়িতে। টিউমারটি এতই বড় হয়ে গিয়েছিল যে ফুসফুস তার ৯০ শতাংশ কাজ করতে পারছিল না। ডিরেক্টর এবং কার্ডিও থোরাসিক ভাসকুলার সার্জারি বিভাগের বিভাগীয় প্রধান ডা. উদগেথ ধীর জানিয়েছেন, টিউমারটিতে ক্যানসারের কোষ ছিল। চিকিৎসা পরিভাষায় এই টিউমারকে বলা হয় লার্জ অ্যান্টেরিয়র মেডিয়াস্টাইনাল টিউমার।
সিটি স্ক্যান করার পর বায়োপসি করা হয় রোগীর। করোনা আবহে এমন অস্ত্রোপচার বড় সহজ ছিল না। বিশেষ করে টিউমারের আকৃতি এতটাই বড় ছিল যে তাকে বের করা বড় সহজ ছিল না। দীর্ঘ চার ঘণ্টা অস্ত্রোপচারের পর বের করার পর বের করা যায় টিউমারটি। এরপর শুরু হয় দ্বিতীয় লড়াই। টানা ৩৯ দিন ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিটে ছিলেন রোগী। ট্র্যাকিওস্টমি হওয়ার দরুন কথা বলতে পারতেন না। লিখে লিখেই কথা বলতেন চিকিৎসকদের সঙ্গে। ফুসফুস মেরামতের জন্য দ্বিতীয়বার অস্ত্রোপচার করা হয় তাঁর। অস্ত্রোপচারের পর প্রথমে দিনে দু’লিটার অক্সিজেন লাগত রোগীর। এখন ধীরে ধীরে তিনি সম্পূর্ণ সুস্থ। অতিকায় টিউমার কেটে বাদ দেওয়ায় ওজনও কমে গিয়েছে অনেকটাই।