সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: চলে গেলেন কিংবদন্তি ফ্যাশন ডিজাইনার মেরি কোয়ায়েন্ট। মিনিস্কার্টের উদ্ভাবন করে গত শতকের পাঁচের দশকে তিনি হইহই ফেলে দিয়েছিলেন ব্রিটেনে। পাশাপাশি হটপ্যান্ট কিংবা ওয়াটারপ্রুফ মাস্কারাও তাঁরই মস্তিষ্কপ্রসূত। বিংশ শতাব্দীর অন্যতম খ্যাতিমান এই ফ্যাশন ডিজাইনার বৃহস্পতিবার শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করলেন ৯৩ বছর বয়সে, সারেতে নিজের বাড়িতে। তাঁর মৃত্যুর সঙ্গে সঙ্গে যেন যবনিকার পড়ল এক যুগের।
[আরও পড়ুন: জাতীয় দলের তকমা হারিয়েছে তৃণমূল, আদালত চত্বরে দাঁড়িয়ে কী বললেন পার্থ?]
গত শতকের পাঁচের দশক থেকে একটু একটু বদলাতে শুরু করেছিল ফ্যাশন (Fashion)। ১৯৫৭ সালে সেই সময়ের অন্যতম হাই প্রোফাইল মডেল লেসলি লসন, যিনি টুইগ্গি নামেই খ্যাতিমান ছিলেন, তিনি মেরির তৈরি মিনিস্কার্ট (Miniskirt) পরে কেবল লন্ডন নয়, সাড়া দেন বিদেশেও। যদি এই পোশাকটির উদ্ভাবক হিসেবে ফরাসি ডিজাইনার আন্দ্রে কারের সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরে তিক্ত লড়াই ছিল মেরির। কিন্তু শেষ পর্যন্ত ব্রিটিশ এই ফ্যাশন ডিজাইনার তাঁর অবদানের জন্য সকলকে পিছনে ফেলে দিয়ে নিজস্ব এক পরিচিতি তৈরি করেন। তিনি মিনিস্কার্টের উদ্ভাবক হোন বা না হোন, তিনিই যে এই উরুমুক্ত পোশাককে বিখ্যাত করে তুলেছিলেন তাতে কোনও সন্দেহ নেই।
স্বামী আলেকজান্ডার প্লাঙ্কেট গ্রিনের সঙ্গে মিলে একটি বুটিক খুলেছিলেন মেরি। সেটা ১৯৫৫ সাল। সেই বুটিকের তিনি নাম দিয়েছিলেন ‘বাজার’। এমন ভারতীয় নামকরণের পিছনে যে কারণই থাক, দ্রুত সেই বুটিক লন্ডন শহরে সাড়া ফেলে দেয়। তরুণ যুগল ও শিল্পীরা ভিড় করতে থাকেন তাঁর বুটিকে। সেখান বেসমেন্টের রেস্তোরাঁতেও তাঁরা বহু সময় কাটাতেন। সেই শুরু। একের পর এক উদ্ভাবনে লন্ডন ‘জয়’ করার পর ছয়ের দশকে আমেরিকাতেও পা রাখেন মেরি। আর জয় করেন অনায়াসে।
[আরও পড়ুন: জাল ওষুধ তৈরির অভিযোগ, ১৮ ফার্মা কোম্পানির লাইসেন্স বাতিল করল কেন্দ্র]
তবে কাজটা খুব সহজ ছিল না মেরির। ‘কোয়ায়েন্ট বাই কোয়ায়েন্ট’ বইতে তিনি লিখেছিলেন, কীভাবে তাঁর বুটিকের শপ উইন্ডোতে ঝুলন্ত মিনিস্কার্ট দেখে হাতের ছাতা দিয়ে কাচে বারি মারত ক্ষুব্ধ জনতা। চিৎকার করত ‘অসহ্য’ বলে। যদিও সেই সঙ্গেই বহু মানুষ ভিড় করতেন মেরির দোকানে, মিনিস্কার্ট কিনতে। নিজের বব কাট চুলের মতোই ফ্যাশনের নয়া ভাষ্য রচনা করে সকলের মন জিতে নিয়েছিলেন মেরি। তাঁর মৃত্যু হলেও রয়ে গেল সেই ইতিহাস। আগামী পৃথিবী যাকে শ্রদ্ধাবনত হয়ে স্মরণ করবে।