shono
Advertisement
Katwa

স্কুলেই শ্রাদ্ধের রান্না! কাজে হাত লাগিয়েছে পড়ুয়ারা, আজব ছবি কাটোয়ায়

বিতর্কের মাঝেই আজব সাফাই প্রধান শিক্ষকের।
Published By: Paramita PaulPosted: 06:07 PM Dec 03, 2024Updated: 06:07 PM Dec 03, 2024

ধীমান রায়, কাটোয়া: সকালে এসেই ছাত্রছাত্রীরা স্কুল চত্বর ঝাঁট দিচ্ছে। কেউ ধুলোর কারণে উঠানে জল ছেটাচ্ছে। আবার কেউ কেউ ছুটে গিয়ে বড়দের সঙ্গে হাত মিলিয়ে ত্রিপলটা ধরে দিচ্ছে টাঙানোর জন্য। মঙ্গলবার সকাল থেকেই চরম ব্যস্ততা কাটোয়া থানার গাঁফুলিয়া অবৈতনিক প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। স্কুলে ছাত্রছাত্রীদের কোলাহল। তার মাঝে চলছে বড় বড় কড়াইয়ে রান্নার তোড়জোড়। আচমকা ঢুকে মনে হবে হয়তো স্কুলের মিড ডে মিল মিলে স্পেশাল কিছু আয়োজন করা হয়েছে। কিন্তু ভুল ভাঙল নেড়া মাথায় এক ব্যক্তিকে দেখে। তিনি রাঁধুনীদের কাছে গিয়ে জিজ্ঞাসা করলেন,"দুপুর বারোটা থেকেই কিন্তু লোকজন চলে আসবে দাদা। সব রান্না তার আগে রেডি হয়ে যাবে তো?"

Advertisement

আসলে প্রশ্নকর্তা হলেন গাঁফুলিয়া গ্রামের বাসিন্দা সনৎ দাস নামে এক ব্যক্তি। তার পরই জানা গেলে, স্কুলের মধ্যে মিড ডে মিলের রান্না নয়, সনৎবাবুর বাবার শ্রাদ্ধানুষ্ঠানের রান্না হচ্ছে গাঁফুলিয়া পশ্চিমপাড়া অবৈতনিক প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। তবে এই শ্রাদ্ধানুষ্ঠানের জন্য স্কুল ছুটি দেওয়া হয়নি। স্কুল চালু অবস্থাতেই কাটোয়ার স্কুলে মঙ্গলবার স্থানীয় এক পরিবারের আত্মীয় বিয়োগের শ্রাদ্ধানুষ্ঠান হল। যা নিয়ে বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে এলাকায়।

যদিও ওই স্কুলের প্রধান শিক্ষক প্রশান্ত মণ্ডলের সাফাই, "আসলে এই পাড়ার লোকজন ভীষণ গরিব। ভোজের আয়োজন করার মতন তাঁদের নিজেদের জয়গা নেই। তাই এই ধরনের অনুষ্ঠান হলে স্কুলের জায়গা ব্যবহারের অনুমতি চান। আমার কাছে বলার পর আমি স্থানীয় অভিভাবকদের সঙ্গে কথা বলে অনুমতি দিয়েছি। তবে বিতর্ক হলে অনুষ্ঠান করতে নিষেধ করে দেব।" এদিকে অনুষ্ঠানের আয়োজক সনৎ দাস বলেন,"বাবার শ্রাদ্ধানুষ্ঠানের আয়োজন করার মতন আমাদের নিজেদের জায়গা নেই। তাই স্কুল ব্যবহারের জন্য হেডস্যারের কাছে অনুরোধ করি। উনি রাজি হওয়ার পর স্কুলে আয়োজন করেছি। এর আগেও আমাদের স্কুলে অন্য পরিবারের ভোজকাজের অনুষ্ঠান হয়েছিল।"

গাঁফুলিয়া পশ্চিমপাড়া অবৈতনিক প্রাথমিক বিদ্যালয়ে রয়েছে ১৭২ জন ছাত্রছাত্রী। শিক্ষক শিক্ষিকা মোট ৭ জন। পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, সনৎবাবুরা প্রায় ৬০০ জনের খাওয়া-দাওয়ার আয়োজন করেন। স্কুলের উঠানে ত্রিপল টাঙিয়ে রান্নার পর স্কুলের একটি শ্রেণিকক্ষে রান্না করা খাবার রাখার ব্যবস্থা করা হয়। তবে নিমন্ত্রিতদের তালিকায় স্কুলের পড়ুয়াদেরও রেখেছেন ওই পরিবার। যদিও স্কুলে এনিয়ে ছুটি ঘোষণা করা হয়নি। কিন্তু স্কুলের মধ্যে ভোজের আয়োজন ঘিরে পড়ুয়াদের তেমন পঠনপাঠনে মন ছিল না। তারা উৎসাহের সঙ্গে ভোজের কাজে সহযোগিতা করতেই ব্যস্ত। উল্লেখ্য, এই স্কুলের মধ্যেই চলে ৪২ নম্বর অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র। যদিও কেন্দ্রের কর্মী নমিতা মণ্ডলের দাবি, "আমাদের কেন্দ্রে এদিন স্বাভাবিকভাবে রান্না হয়েছে। সবাই খাবার পেয়েছে।" দাঁইহাট চক্রের অবর বিদ্যালয় পরিদর্শক পিনাকী ঘোষ বলেন,"বিষয়টি সঠিক আমার জানা নেই। খোঁজ নিয়ে দেখছি।"

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

হাইলাইটস

Highlights Heading
  • শ্রাদ্ধানুষ্ঠানের রান্না হচ্ছে গাঁফুলিয়া পশ্চিমপাড়া অবৈতনিক প্রাথমিক বিদ্যালয়ে।
  • এই শ্রাদ্ধানুষ্ঠানের জন্য স্কুল ছুটি দেওয়া হয়নি।
Advertisement