ধীমান রায়, কাটোয়া: একদিকে তারস্বরে 'জয় বাংলা' স্লোগান। তার মুখোমুখি জবাবে আওয়াজ উঠছে 'জয় শ্রীরাম।' তৃণমূলের টিম যখন বলছে,"মমতা ব্যানার্জি জিন্দাবাদ।' বিজেপির মিছিল থেকে জবাব আসছে, 'বিজেপি জিন্দাবাদ।' নির্বাচনের ময়দানে যুযুধান দুই পক্ষ একেবারে মুখোমুখি। স্লোগান আর পালটা স্লোগানে রবিবার সন্ধ্যায় পূর্ব বর্ধমান জেলার ভাতার বাজার কার্যত সরগরম থাকে বেশ কিছুক্ষণ। 'জয় বাংলা' ও 'জয় শ্রীরাম' দুই পক্ষের স্লোগান-যুদ্ধের মাঝে যদিও ভাতার থানার পুলিশবাহিনী বেশই তৎপরতার সঙ্গে পরিস্থিতি সামাল দেয়। ঘটনার কিছুক্ষণ পরেই অবশ্য পরিবেশটা আরও শান্ত করে দেন স্বয়ং 'রাধা কৃষ্ণ'! সব মিলে রবিবার সন্ধ্যায় ভাতার বাজারে স্থানীয়রা কার্যত দেখলেন এক চিত্রনাট্য।
এমন চিত্রনাট্যের প্রেক্ষাপট কী? জানা গিয়েছে, শনিবার রাতে ভাতারের বেলেণ্ডা গ্রামের বাসিন্দা বিজেপির এক যুবনেতা সৌমেন কার্ফা পাশের গ্রাম বালসিডাঙ্গায় দলীয় পতাকা টাঙাতে গিয়ে আক্রান্ত হন। তারই প্রতিবাদে এদিন রবিবার বিকেলে ভাতার বাজারে বিক্ষোভ মিছিলের ডাক দেয় বিজেপি। পাশাপাশি তারা ভাতার বাজারে মিছিল করে ভাতার থানা ঘেরাও করে অভিযুক্তদের গ্রেপ্তারের দাবিতে। ডেপুটেশন দেয়।
অন্যদিকে এদিন বিকেলে ভাতার বাজারের নাসিগ্রাম মোড়ে নির্বাচনী প্রচারে পথসভার আয়োজন করে ভাতার ব্লক যুব তৃণমূল কংগ্রেস।
[আরও পড়ুন: ইভিএমে কারচুপির আশঙ্কা, প্রতিবাদে পথে মন্ত্রী স্বপন দেবনাথ, তুঙ্গে রাজনৈতিক তরজা]
কুলচণ্ডা মহাপ্রভুতলার কাছে বিজেপির নির্বাচনী কার্যালয় থেকে বিক্ষোভ মিছিল শুরু হয়। মিছিল নাসিগ্রাম মোড়ের কাছে আসতে তখন প্রায় সন্ধ্যা গড়িয়ে যায়। আর দেখা যায় তৃণমূল কংগ্রেসের কর্মীরা তখনও পথসভা চালিয়ে যাচ্ছেন। বিজেপির মিছিল স্লোগান দিতে দিতে এগিয়ে চলেছে। আগে থেকেই ছিল পুলিশবাহিনী। পুলিশ দুইপক্ষের মাঝে দাঁড়িয়ে থাকে। পুলিশের পাশাপাশি যুব তৃণমূলের রাজ্য কমিটির সাধারণ সম্পাদক শান্তনু কোঁয়ারও মাঝে দাঁড়িয়ে তাদের কর্মীদের দিকে লক্ষ্য রাখেন, যাতে কোনও অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটে।
আর বিজেপির মিছিল তৃণমূলের পথসভার সামনে দিয়ে যাওয়ার সময় দুই পক্ষের কর্মীরা স্লোগান আর পালটা স্লোগান দিতে থাকেন। যদিও বিজেপির মিছিল ধীরে ধীরে থানার দিকে এগিয়ে চলে যায়। দেখা যায় ঠিক তার পরেই ভাতার বাজার রবীন্দ্রপল্লী সেবা সমিতির আয়োজনে হরিনাম সংকীর্তনের দল বাজার পরিক্রমা করছে। সেই শোভাযাত্রায় কৃষ্ণ রাধা সেজে রাস্তায় নৃত্য করতে করতে যাচ্ছেন দুই শিল্পী। সদ্য রাজনৈতিক উত্তাপের পরেই হরিনাম সংকীর্তনের শোভাযাত্রা পরিবেশটাকে অনেকটাই স্বাভাবিক করে দেয়।