সৌরভ মাজি, বর্ধমান: শর্মিলা সরকারের লড়াই শর্মিলা সরকারের সঙ্গে। অবাক লাগলেও বর্ধমান পূর্ব কেন্দ্র এবার এমন লড়াইয়ের সাক্ষী হতে চলেছে। এক শর্মিলা সরকার পেশায় চিকিৎসক। সর্বোচ্চ শিক্ষাগত যোগ্যতা 'ডক্টর অফ মেডিসিন ইন সাইকিয়াট্রি'। আরেক শর্মিলা গৃহবধূ। সর্বোচ্চ শিক্ষাগত যোগ্যতা সপ্তম শ্রেণি পাশ। চিকিৎসক শর্মিলা ইংরেজিতে স্বাক্ষর করেন। অন্যজন বাংলায়।
চিকিৎসক শর্মিলা তৃণমূল কংগ্রেস প্রার্থী এই কেন্দ্রের। কয়েকদিন আগেই তিনি মনোনয়ন দাখিল করেছেন। বৃহস্পতিবার ছিল মনোনয়ন দাখিলের শেষ দিন। এদিন বেলা ৩টেয় মনোনয়ন জমার শেষ সময় ছিল। ঠিক তার ৫ মিনিট আগে মনোনয়ন জমা দিতে ঢোকেন ৩৮ বছর বয়সি গৃহবধূ শর্মিলা। নির্দল প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন দাখিল করেছেন তিনি। দলহীন এই শর্মিলার বাড়ি বীরভূমের সাহেবডাঙার উষাহারে। তাঁর স্বামী বলরাম সরকার। নির্দল শর্মিলার নির্বাচন কমিশনে দাখিল করা এফিডেভিট অনুযায়ী, তিনি জামদহ হাইস্কুল থেকে ১৯৯৬ সালে সপ্তম শ্রেণি পাশ করেছেন।
বোলপুর বিধানসভা এলাকার ১৩৮ নম্বর পার্টের ৮২০ সিরিয়াল নম্বরের ভোটার। এই নির্দল প্রার্থীর হাতে নগদ আছে ৫০ হাজার ৩০০ টাকা। স্বামীর হাতে নগদ আছে ৬২ হাজার ৭০০ টাকা। স্বর্ণালঙ্কার আছে ১৫ গ্রাম। যার বাজার মূল্য ১ লক্ষ ২ হাজার ৫৩১ টাকা। মোট অস্থাবর সম্পত্তি ১ লক্ষ ৫৬ হাজার ১০৬ টাকা। স্বামীর ৬৩ হাজার ৯৭৩ টাকার অস্থাবর সম্পত্তি আছে। নির্দল শর্মিলার কোনও স্থাবর সম্পত্তি নেই। স্বামীর নামে ১৫ লক্ষ টাকার স্থাবর সম্পত্তি আছে।
[আরও পড়ুন: বাম আমলে বঞ্চিত, প্রাথমিকে ৮০০ শিক্ষক নিয়োগের নির্দেশ কোর্টের]
বীরভূমের বাসিন্দা হয়েও বর্ধমান পূর্ব কেন্দ্রের নির্দল প্রার্থী কেন? এদিন রাতে তাঁর সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ করা হলেও কোনও সদুত্তর দিতে পারেননি। তিনি বলেন, "প্রার্থী হয়েছি। এখনই সব বলছি না। পরে সব জানাব।" নির্দল প্রার্থী হওয়ার আগে কোনও রাজনৈতিক জল করতেন কি না বা কোনও রাজনৈতিক দলের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন কি না সেই সব প্রশ্ন এড়িয়ে গিয়েছেন শর্মিলা। তৃণমূল প্রার্থীর 'নেমসেক'কে প্রার্থী করার পিছনে বিরোধী কোনও দলের হাত থাকতে পারে বলেও চর্চা শুরু হয়েছে রাজনৈতিক মহলে। একই নামের দুই প্রার্থী থাকায় ভোটাররা বিভ্রান্ত হতে পারেন। ফলে ভোট কাটার আশঙ্কা থেকেই যায়। যদিও নির্দল শর্মিলা সেই প্রশ্নের উত্তর এখনই দিতে নারাজ। তিনি বলেন, "প্রার্থী যখন হয়েছি। প্রচারও করব। ভোটে লড়াইও দেব।"
তৃণমূল প্রার্থী শর্মিলা সরকার বলেন, "যদিও আমার এই বিষয়ে এখনও জানা নেই। তবে একই নামে প্রার্থী হলে মানুষের মধ্যে বিভ্রান্তি তৈরি হতে পারে। মানুষ অনেক সময় বুঝতে পারবেন না। তবে তৃণমূলের জোড়া ফুল চিহ্ন মানুষের মনে গেঁথে গিয়েছে। মানুষ চিহ্ন দেখে ভোট দেবেন।" একইসঙ্গে ভোট কেটে যাওয়ার আশঙ্কা করছেন তৃণমূল প্রার্থী। তিনি বলেন, "ভোটারদের মধ্যে নাম বিভ্রান্তির কারণে কিছু ভোট কেটে যেতে পারে।"