সুমিত বিশ্বাস, পুরুলিয়া: এবারের লোকসভা নির্বাচনের মাঝে সন্ন্যাসীদের রাজনীতির যোগ নিয়ে নতুন করে বিতর্ক তৈরি হল। শনিবার হুগলির কামারপুকুরের নির্বাচনী সভা থেকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee) অভিযোগ তুলেছিলেন, বিজেপির হয়ে প্রচার করছেন রামকৃষ্ণ মিশন, ভারত সেবাশ্রম, ইসকনের সন্ন্যাসীরা। আর রবিবার নির্বাচনী প্রচারে রাজ্যে এসে তৃণমূল নেত্রীর সেই মন্তব্যকে কড়া ভাষায় আক্রমণ করলেন প্রধানমন্ত্রী মোদি। বিশ্ববন্দিত ধর্মীয় ও সেবামূলক সংগঠনগুলির নামে এমন মন্তব্য আসলে ভোটের জন্য নিম্নস্তরের রাজনীতি বলে কটাক্ষ করলেন তিনি।
পুরুলিয়ার (Purulia) গ্যাংগারা ময়দানে বিজেপি প্রার্থী জ্যোতির্ময় সিং মাহাতোর সমর্থনে প্রচারে এসে মমতার এই মন্তব্যের পালটা দিতে গিয়ে শিকাগো ধর্ম মহাসম্মেলনে স্বামী বিবেকানন্দের প্রসঙ্গ তুললেন মোদি (PM Modi)। বললেন, ''স্বামী বিবেকানন্দ আমেরিকায় যখন বক্তৃতা দিতে গিয়েছিলেন, তখন তাঁর অনেক শত্রু ছিল। পরে তাঁরা সবাই অনুগামী হয়ে যান। তার পর থেকে রামকৃষ্ণ মিশনের (RKM) মতো প্রতিষ্ঠান বিশ্ববিখ্যাত হয়ে ওঠে। সারা বিশ্বে এখন তাদের সেবামূলক কাজের খ্যাতি রয়েছে। একই রকমভাবে বিখ্যাত ইসকন, ভারত সেবাশ্রম। আর তৃণমূল নেত্রী তাদেরই নামে নিন্দা করছেন! হুমকির সুরে কথা বলছেন! এটা তাদের অপমান করা। আর ভোটব্যাঙ্কের জন্য তিনি এমন নিম্নস্তরের রাজনীতি করছেন। এর তীব্র প্রতিবাদ জানাই।''
[আরও পড়ুন: ‘তৃণমূলের বিরুদ্ধে লড়তে হলে কংগ্রেস ছাড়ুন’, খাড়গের ‘ধমকে’র পরই অধীরকে বিজেপিতে ডাক সুকান্তর]
লোকসভা ভোটের (Lok Sabha Election 2024) প্রচার করতে গিয়ে শনিবার কামারপুকুরের সভা থেকে বহরমপুরের ভারত সেবাশ্রম সংঘের প্রধান কার্তিক মহারাজের প্রসঙ্গ টেনে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় অভিযোগ করেন, “সব সাধু সমান হন না। এই যে কার্তিক মহারাজ যিনি বলেন তৃণমূলের এজেন্ট বসতে দেবেন না, তাঁদের আমি সাধু বলে মানি না। তিনি সরাসরি রাজনীতি করে দেশটার সর্বনাশ করছেন।” এর পরই নাম করে রামকৃষ্ণ মিশন, ভারত সেবাশ্রম সংঘ, ইসকন মন্দিরের রাজনীতি যোগ নিয়ে তোপ দাগেন মমতা।
[আরও পড়ুন: ধোনির ছক্কায় ম্যাচ জিতেছে আরসিবি! প্লে অফে উঠে ব্যাখ্যা কার্তিকের, কীভাবে?]
এর পর রবিবার মোদির নির্বাচনী মঞ্চে দেখা গেল পুরুলিয়ার ভারত সেবাশ্রম সংঘের প্রধান নিত্যসুধানন্দ মহারাজকে। তার পরও অবশ্য মুখ্যমন্ত্রীকে বাক্যবাণে বিদ্ধ করলেন প্রধানমন্ত্রী। বললেন, ''নিজের ভোটব্যাঙ্ককে খুশি করতে, তোষণ করতে তৃণমূল এত নিচুতে নেমেছে! বাংলার লাখ লাখ মানুষের ভক্তি, ভাবাবেগ নিয়ে এরা ভাবে না। স্বামী বিবেকানন্দ, প্রভুপাদ, প্রণবানন্দ মহারাজের অপমান দেশ সহ্য করবে না। যে সরকার বাংলার মানুষের সংস্কৃতিকে সম্মান করে না, ভোটে তাদের সাজা দিন। যাতে ওরা আর সাধুদের অপমান করতে না পারে।’’