অরূপ বসাক, মালবাজার: ভোটের মুখে নাকা চেকিংয়ের সময় দুই বিজেপি নেতার গাড়ি থেকে উদ্ধার নগদ লাখ লাখ টাকা। বিজেপির মাল বিধানসভার কনভেনার রাকেশ নন্দী এবং বিজেপির মহিলা মোর্চার জেলা সভানেত্রী দীপা বণিকের গাড়িতে টাকার পাহাড়। সব মিলিয়ে মোট ৯ লক্ষ ৫ হাজার টাকা উদ্ধার করা হয়েছে। এই ঘটনা ঘিরে রাজনৈতিক মহলে জোর চাপানউতোর।
শনিবার রাতে মালবাজারে ক্রান্তি এলাকায় নাকা তল্লাশি চলছিল। সেই সময় ওই রাস্তা দিয়ে যাচ্ছিলেন বিজেপির মাল বিধানসভার কনভেনার রাকেশ নন্দী এবং বিজেপির মহিলা মোর্চার জেলা সভানেত্রী দীপা বণিক। সেই সময় গাড়িতে নাকা তল্লাশি করা হয়। রাকেশের গাড়ি থেকে নগদ ৭ লক্ষ ৭৫ হাজার টাকা বাজেয়াপ্ত করা হয়। দীপার কাছ থেকে ১ লক্ষ ৩০ হাজার টাকা উদ্ধার করে ক্রান্তি ফাঁড়ির পুলিশ। ওসি বুদ্ধদেব ঘোষ জানান, তাঁদের কাছ থেকে সবমিলিয়ে মোট ৯ লক্ষ ৫ হাজার টাকা উদ্ধার করা হয়েছে। লোকসভা ভোটের মুখে বিজেপি নেতাদের কাছ থেকে বিপুল পরিমাণ টাকা উদ্ধারের ঘটনায় গোটা এলাকাজুড়ে ব্যাপক চাঞ্চল্য। পুলিশি জেরায় রাকেশ নন্দী জানান, রাজনৈতিক কাজের জন্য ওই টাকা তাঁকে দলীয় নেত্রী দীপা বণিক দিয়েছিলেন। যদিও দীপার থেকে এ বিষয়ে কোনও প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি। বারবার ফোন করা হলেও তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়নি।
[আরও পড়ুন: নির্বাচনী আবহে অভিষেকের হেলিকপ্টার থামিয়ে আয়কর তল্লাশি! কী মিলল?]
জলপাইগুড়ির পুলিশ সুপার খান্ডেবহালে উমেশ গণপত জানান, এমসিসি রুলস অনুযায়ী নির্বাচনের সময় কোনও ব্যক্তি যদি নগদ ৫০ হাজারের বেশি টাকা সঙ্গে বহন করেন তাহলে টাকার উৎস সম্পর্কে তাঁকে প্রয়োজনীয় প্রমাণপত্র দেখাতে হয়। কিন্তু ওইদিন রাতে তাঁরা কেউই প্রমাণপত্র দেখাতে পারেননি। ভারতীয় দণ্ডবিধি ১০২ ধারা অনুসারে টাকাগুলি বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন তিনি।
তৃণমূলের জেলা সভানেত্রী মহুয়া গোপ বলেন, "কেন্দ্রের বিজেপি সরকার বিভিন্ন প্রকল্পে বাংলার সাধারণ মানুষের ন্যায্য পাওনা টাকা দেয় না। সাধারণ মানুষের টাকা আটকে রাখাটাই বিজেপির সংস্কৃতি। ওদের কোনও জনসংযোগ নেই। ভোটের সময় টাকা দিয়ে ভোট কেনাটাই ওদের স্বভাব। জনসমক্ষে বহুদিন ধরে তারা এই কথা বলে আসছেন। লোকসভা ভোটের মুখে বিজেপি নেতাদের কাছ থেকে বিপুল পরিমাণ টাকা উদ্ধারের ঘটনা তার জ্বলন্ত উদাহরণ। টাকা দিয়ে ভোট কেনার জন্যই বিজেপি নেতারা রাতের অন্ধকারে ওই বিপুল পরিমাণ টাকা নিয়ে যাচ্ছিলেন। ভোটাররা সবকিছু দেখছেন। ভোটবাক্সে মানুষ তার জবাব দেবেন।"