সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: গতকালই ধর্মান্ধতার শিকার হয়েছেন মধ্যপ্রদেশের এক প্রবীণ। মুসলমান ভেবে বৃদ্ধকে মারধর করে খুন করা হয়। পরে জানা যায় তাঁর পদবী জৈন। সাম্প্রতিককালে গোটা দেশে জাত-ধর্ম, আচার-প্রচারের ধুঁয়ো তুলে হাজারও অশান্তি চলছে। এর মধ্যেই রাজা রামমোহন রায়ের জন্মদিনে প্রকাশ্যে এল ভিন্ন সংবাদ। বহুকাল ধরে চলা বৈধব্য প্রথা (Widowhood) পালনে নিষেধাজ্ঞা জারির উদ্যোগ নেওয়া হল মহারাষ্ট্রের গ্রামে। খোদ মহারাষ্ট্রের (Maharashtra) গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রী হাসান মুশরিফ (Hasan Mushrif) রাজ্যের সমস্ত গ্রাম পঞ্চায়েতকে এই আহ্বান জানালেন। এই যুগান্তকারী ভাবনার পিছনে রয়েছে শিবাজি মহারাজের দেশের একটি ছোট্ট গ্রাম। যা অনুপ্রাণিত করছে অনেককে।
গ্রামটি হল কোলাপুরের হেরওয়াড় (Herwad)। গত ৪ মে হেরওয়াড় গ্রাম পঞ্চায়েতে বিশেষ প্রস্তাব পাশ হয়। ওই প্রস্তাবে বলা হয়েছে, স্বামীর মৃত্যুর পরে মহিলাদের সিঁদুর মুছে ফেলা, মঙ্গলসূত্র খুলে ফেলতে বাধ্য করা ইত্যাদি প্রথার বিরোধিতা করা হচ্ছে। জানা গিয়েছে, হেরওয়াড়ের মতোই কোলাপুরেরই অন্য গ্রাম মনগাঁও গ্রাম পঞ্চায়েতও একই পদক্ষেপ করেছে। প্রশ্ন হল, রক্ষণশীল সমাজ ভাবনার বিপরীতে এমন পদক্ষেপের শুরুটা কীভাবে?
[আরও পড়ুন: কেন্দ্রের বিরুদ্ধে ক্ষোভ, একদিনে গণছুটির পথে ৩৫ হাজার স্টেশন মাস্টার! স্তব্ধ হতে পারে রেল পরিষেবা]
নেপথ্যে রয়েছেন প্রমোদ জিঞ্জারে। তিনি একটি সমাজ সেবা মণ্ডলের অধ্যক্ষ। যাকে মান্য করেন হেরওয়াড়ের মানুষ। জিঞ্জারেই বোঝান, মহিলাদের বৈধব্য প্রথা মানতে বাধ্য করা আদতে অসম্মানজনক। এমনকী এই বিষয়ে স্টাম্প পেপারে নিজের সিদ্ধান্ত ঘোষণা করেন তিনি। জানিয়ে দেন, জিঞ্জারের মৃত্যুর পর তাঁর স্ত্রীকে বৈধব্য প্রথা মানতে বাধ্য করা যাবে না। এরপরেই হেরওয়াড়ের গ্রামের সরপঞ্চ সুরগোন্ডা পাটিল এই বিষয়ে উদ্যোগ নেন। এবং রক্ষণশীল প্রথার বিরুদ্ধে গ্রাম পঞ্চায়েতে সকলের সম্মতিতে প্রস্তাব পাশও হয়।
[আরও পড়ুন: মাত্র ৪০ ঘণ্টায় ২৩ কর্মসূচি, রাত কাটাবেন বিমানে, কঠোর পরিশ্রমী মোদিকে কুর্নিশ বিজেপির]
এই হেরওয়াড় ও মনগাঁওকেই অনুসরণ করেছে মহারাষ্ট্র সরকার। গত মঙ্গলবারই বিশেষ সার্কুলার জারি করেন মহারাষ্ট্রের গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রী হাসান মুশরিফ। তিনি হেরওয়াড় গ্রামের উদাহরণ দিয়ে বলেন, সকলেরই এই ভাবনাকে অনুসরণ করা উচিত। তাঁর বক্তব্য, বিজ্ঞানের যুগে এমন প্রথার স্থান নেই। বলেন, “অতীতের কুসংস্কারের স্থান নেই বিজ্ঞানের যুগে। অন্য গ্রাম পঞ্চায়েতগুলিরও হেরওয়াড়কে অনুসরণ করা উচিত।” এই বিষয়ে সচেতনতা প্রচারেরও উদ্যোগ নিয়েছে মহারাষ্ট্র সরকার।