ধ্রুবজ্যোতি বন্দ্যোপাধ্যায়: বিধানসভা ভোটের আগে ঘরে ভাঙন অব্যাহত শাসকশিবিরে। প্রতিদিনই তৃণমূলের কোনও না কোনও মন্ত্রী, বিধায়ক, সাংসদ ‘বেসুরো’ হচ্ছেন। দলত্যাগও ইদানিং আর খুব একটা ব্যতিক্রমী ঘটনা নয়। এই আবহে দলের অন্দরের পরিস্থিতি ভালভাবে বুঝে নিতে শুক্রবার সব জনপ্রতিনিধিকে নিয়ে কোর কমিটির বৈঠকে বসতে চলেছেন তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। সাধারণত মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কালীঘাটের বাড়িতে কোর কমিটির বৈঠক শুক্রবার করে হয়েই থাকে। কিন্তু আজকের বৈঠক তার চেয়ে কিছুটা আলাদা এবং অধিক গুরুত্বপূর্ণ।
শুক্রবার বিকেলে কালীঘাটে তৃণমূল সুপ্রিমোর বাড়ির বৈঠকে ডাকা হয়েছে দলের সব বিধায়ক, সাংসদকে। আর তাঁদের উপস্থিতি দেখেই মমতা বুঝে নিতে চান, আসন্ন নির্বাচনী লড়াইয়ে তাঁর আসল সৈন্য কারা। বিশেষ নজর থাকবে মন্ত্রিসভা থেকে বেরিয়ে যাওয়া রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়, লক্ষ্মীরতন শুক্লা, প্রবীর ঘোষালের উপর। সম্প্রতি এঁরা সকলেই বিক্ষুব্ধ। উত্তরপাড়ার বিধায়ক প্রবীর ঘোষাল নিজে হুগলি জেলার কোর কমিটির সদস্য এবং মুখপাত্রের পদ থেকে ইস্তফা দিয়েছেন। হুইপ জারি থাকা সত্ত্বেও বৃহস্পতিবার বিধানসভায় কেন্দ্রীয় কৃষি আইন খারিজ প্রস্তাব পেশের মতো গুরুত্বপূর্ণ পর্বে অংশ নিতে গরহাজির ছিলেন রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়, প্রবীর ঘোষাল। জোর জল্পনা, খুব সম্প্রতি অন্যান্যদের সঙ্গে তিনিও বিজেপিতে নাম লেখাবেন। তাই তাঁরা শুক্রবারের বৈঠকে হাজির থাকেন কি না, সেদিকে কড়া নজর তৃণমূলের শীর্ষ নেতৃত্বের।এদিন রাতেই রাজ্যে আসছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ (Amit Shah)। সূত্রের খবর, ৩০ এবং ৩১ তারিখ তাঁর হাত ধরেই তৃণমূলের একাধিক বিধায়ক, মন্ত্রী বিজেপিতে যোগ দিতে পারেন। তার আগেই কোর কমিটির বৈঠক করে নিতে চাইছেন মমতা।
[আরও পড়ুন: ফেব্রুয়ারিতেই চালু হতে পারে নোয়াপাড়া-দক্ষিণেশ্বর মেট্রো, জানালেন আধিকারিকরা]
ইতিমধ্যেই যদিও তৃণমূল সুপ্রিমো নিজে বার্তা দিয়েছেন, যাঁরা দল ছেড়ে চলে যেতে চায়, তাঁরা চলেই যাক। যাঁরা থাকবেন, তাঁদের নিয়েই লড়াই হবে। দলত্যাগীদের আর ফেরানো হবে না বলেও হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তিনি। এই অবস্থায় শুক্রবার বিকেল ৪টেয় কালীঘাটের বৈঠক নানাদিক থেকেই গুরুত্বপূর্ণ শাসকদলের কাছে। এদিন বিধানসভা নির্বাচনের রণকৌশল নিয়েও আলোচনা হতে পারে। এমনিতেই রাজ্যে বিজেপির শক্তিবৃদ্ধির ছবিটা স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে. প্রায় সময়েই দিল্লির নেতারা এসে একুশে বাংলা দখলের মন্ত্রে দলকে চাঙ্গা করে তুলছেন। ফলে লড়াই এবার খানিকটা কঠিন নিঃসন্দেহে। সেই লড়াই জিততে স্ট্র্যাটেজি ঠিক করে দিতে পারেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তবে তার চেয়েও এদিনের বৈঠকে যোগদানকারী কারা, সেদিকেই নজর থাকবে বেশি।