স্টাফ রিপোর্টার: ফের নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেনের (Amartya Sen) বাড়ি নিয়ে কেন্দ্রকে কড়া ভাষায় আক্রমণ শানালেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। জানিয়ে দিলেন, ওই বাড়ি ভাঙার চেষ্টা হলে বুলডোজারের সামনে বসে তা আটকাবেন তিনি। বুধবার নবান্নে সাংবাদিক সম্মেলন করে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘অমর্ত্য সেনের মতো মানুষকে তারা আক্রমণ করছে। অমর্ত্য সেনের বাড়ি বুলডোজার দিয়ে ভেঙে দেবে বলছে। ওদের অর্ডারসিটি দেখে আমি অবাক হয়ে যাচ্ছি। যদি দেখি বুলডোজার চালাচ্ছে আমি হচ্ছি প্রথম যে সেখানে গিয়ে বসে থাকবে। ধরনা দেব। বাংলা শিক্ষা সংস্কৃতির রাজ্য। আমি দেখব, মানবিকতা ক্ষমতাশালী না বুলডোজার ক্ষমতাশালী।’’
উল্লেখ্য, এর আগে বীরভূম সফরে গিয়ে নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেনের বাড়ি ‘প্রতীচী’তে যান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। অমর্ত্য সেনের পাশে দাঁড়িয়ে বিশ্বভারতীয় বিশ্ববিদ্যালয় (Visva Bharati) কর্তৃপক্ষকে কড়া বার্তাও দেন। এদিকে অমর্ত্য সেনের শান্তিনিকেতনের ‘প্রতীচী’ বাড়িতে উচ্ছেদ নোটিস সাঁটিয়ে দেওয়ায় বিশ্বভারতীর অমানবিক আচরণ ও তাঁকে হেনস্তা করার অভিযোগ তুলে ৩০ এপ্রিল থেকে পথে নামতে চলেছেন অধ্যাপক পড়ুয়া থেকে শুরু করে রাজ্যের বিশিষ্টজন, আইনজীবীরা। অভিনেতা থেকে শিল্পী, লেখক, সাহিত্যিক কবি শিক্ষাবিদ সকলেই অমর্ত্য সেনের পাশে দাঁড়িয়েছেন।
[আরও পড়ুন: ‘কথা কম কাজ বেশি’, প্রশাসনিক বৈঠকে রাজ্যের চার মন্ত্রীকে সতর্ক করলেন মুখ্যমন্ত্রী]
তাঁকে উচ্ছেদ করতে বিশ্বভারতীর উপাচার্যর নয়া কৌশল নিয়ে শান্তিনিকেতন এলাকায় আবার উত্তেজনা নতুন করে শুরু হয়েছে। ৬ মে অমর্ত্য সেনের বাড়ির উত্তর পশ্চিমে দখলকৃত ৮ কাঠা জায়গা দখলমুক্ত করা হবে বলে হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়। উপাচার্যর এহেন আচরণে ক্ষুব্ধ শাসকদল থেকে বুদ্ধিজীবীরা। বিরোধী দল সিপিএম, কংগ্রেস ও তৃণমূলের কর্মীরা কলকাতা এবং শান্তিনিকেতনে আলাদা আলাদা করে আন্দোলনের ডাক দিয়েছেন। এই আন্দোলন শুরু হচ্ছে আগামী ৩০ এপ্রিল থেকে। কলকাতায় বামপন্থী বুদ্ধিজীবীরা ২৮ এপ্রিল বিক্ষোভ সমাবেশের ডাক দিয়েছেন। কলকাতা এবং শান্তিনিকেতনে উপাচার্য-বিরোধী একাধিক প্রতিবাদ সভার আয়োজন করা হয়েছে।
[আরও পড়ুন: কলকাতায় বসে চার হাজার কোটি টাকার লেনদেন! বিপুল জালিয়াতির অভিযোগে গ্রেফতার চার]
এদিকে সেই আভাস পেয়ে কৌশলে নতুন এক কর্মসূচি নিচ্ছেন উপাচার্য। বিশ্বভারতীর কর্মকর্তাদের অনুমান, ২০১৯ সালের মতো শান্তিনিকেতনে ঐতিহ্যবাহী ছাতিমতলায় ২৪ ঘণ্টা অনশনে বসবেন। আর ২০০ জন নিরাপত্তা বাহিনী তাকে ঘিরে থাকবেন যাতে কোনওরকম উত্তেজনা সৃষ্টি না হয়। অনশন করেই নাটকীয়ভাবে মোড় ঘোরাতে চাইছেন উপাচার্য। ইতিমধ্যেই বিশ্ববিদ্যালয়ের মঞ্জুরি কমিশন, শিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে উপাচার্য নিরাপত্তা এবং আইনি সাহায্য চেয়েছেন।
এদিকে জেলা প্রশাসন অমর্ত্য সেনের বাড়ি লাগোয়া জায়গায় ১৪৫ ধারা জারি করেছে, অমর্ত্য সেনের বাড়িতে পুলিশ পিকেট বসানো হয়েছে। সিপিআইএমের বীরভূম জেলার সম্পাদক গৌতম ঘোষ জানান, অমর্ত্য সেনকে অপমান শুধু বাঙালি নয়, সমস্ত ভারতীয় এবং বিশ্ববাসীর কাছে মাথা হেঁট করে দিয়েছে।