সম্যক খান, মেদিনীপুর: পঞ্চমীতেই বিষাদের সুর। আবাসনের পুজো মণ্ডপের সামনের পাঁচিলে ব্যানার বাঁধতে গিয়ে পড়ে মৃত্যু এক সাফাইকর্মীর। পুলিশ জানিয়েছে, মৃত ব্যক্তির নাম অমিত বেরা(৩০)। বাড়ি শহরের তাঁতিগেড়িয়াতে। এই ঘটনার পর ওই আবাসনের পুজোর উদ্বোধন অনুষ্ঠান সংক্রান্ত সমস্ত পরিকল্পনা বাতিল করা হয়েছে।
সঙ্গম গার্ডেন আবাসন কমপ্লেক্সে একাধিক টাওয়ারে ১২৮টি ফ্ল্যাট আছে। কমপ্লেক্সের মধ্যেই মণ্ডপ গড়ে প্রতিবছর পুজো হয়। ওই পুজো মণ্ডপের সামনের একটি পাঁচিলের উপর ব্যানার টাঙাতে উঠেছিলেন সাফাইকর্মীদের সুপারভাইজার অমিত বেরা। তখনই দুর্ঘটনা ঘটে। পড়ে গিয়ে মাথায় গুরুতর চোট পান তিনি। পাশেই ট্রান্সফরমার থাকায় বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হন তিনি। তাঁর ডান হাতও পুড়ে গিয়েছে। তাঁকে উদ্ধার করে সঙ্গে সঙ্গে মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে পাঠানো হয়। সেখানেই মৃত্যু হয় তাঁর।
[আরও পড়ুন: পরিবারের ২ সদস্যের মৃত্যু, জয়পুর রাজবাড়িতে এবার আর আসবেন না কনকদুর্গা]
এই ঘটনায় গোটা এলাকায় নেমেছে শোকের ছায়া। মৃতের দাদা সুমিত বেরা বলেন, “তাঁদের জানানো হয় ভাই পাঁচিল থেকে পড়ে মাথায় চোট পান। হাসপাতালে গিয়ে জানতে পারি ভাইয়ের মৃত্যু হয়েছে।” গত ২০১৫ সালে আবাসন নির্মাণের প্রায় সূচনালগ্ন থেকে ওই কমপ্লেক্সে সাফাইকর্মীর কাজ করতেন অমিত বেরা। বর্তমানে সাফাইকর্মীদের সুপারভাইজার ছিলেন। তাঁর অধীনে ৮ থেকে ১০ জন সাফাইকর্মী কাজ করেন। ফ্ল্যাট ওনার্স সোসাইটির সম্পাদক সুদর্শন সিং বলেন, “অমিত প্রতিদিন বেলা দশটার পর কমপ্লেক্সে আসতেন। পঞ্চমীতে কিছুটা আগেই চলে আসেন। ওই পাঁচিল উঠেছিলেন ব্যানার ঠিক করতে। সামাল দিতে না পেরে পড়ে যান।”
অমিতের স্ত্রী পূজাও ওই কমপ্লেক্সে সাফাইকর্মীর কাজ করতেন। তাঁদের একটি পাঁচ বছরের কন্যাসন্তানও আছে। আকস্মিক এই দুর্ঘটনায় ভেঙে পড়েছে গোটা পরিবার। বৃহস্পতিবার পুজোর উদ্বোধনের কথা ছিল। তবে এই দুর্ঘটনার পর তা বাতিল করা হয়। পুজোয় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান এবং এলাহি খাওয়াদাওয়ার আয়োজনও হত। তবে সব কিছুই বাতিল করে দেওয়া হয়েছে। ডাকা হয়েছে পুরোহিতকেও। তাঁর সঙ্গে আলোচনার পর কমপ্লেক্সে ঠাকুর ঢোকানোর সিদ্ধান্ত। ফ্ল্যাট ওনার্স সোসাইটির সম্পাদক সুদর্শন বলেন, “অমিত বেরার পরিবারের পাশে আমরা আছি। সবরকম সহযোগিতা করা হবে ওই পরিবারকে।”