অভিরূপ দাস: মাঠে ফুটবল ম্যাচ চলছে৷ নিরাপত্তা বেষ্টনী ভেদ করে আচমকাই মাঠে ঢুকে পড়লেন এক উৎসাহী দর্শক৷ কিন্তু, তাঁর গায়ে সুতো পর্যন্ত নেই! হতবাক পুলিশকর্মীরা৷ কোনওরকমে ওই দর্শককে মাঠ থেকে বের করে দিলেন তাঁরা৷ কথাবার্তায় বোঝা গেল, ওই ব্যক্তি দিব্যি সুস্থ! তাহলে? মনোবিদরা বলছেন, তাঁর নাকি লজ্জাবোধই নেই৷ ‘এগজিবিশনিজম’ নামে এক মানসিক রোগে আক্রান্ত তিনি৷
[কুরুচিকর শব্দেই জমে ওঠে রতিক্রিয়া! কী বলছেন বিশেষজ্ঞরা?]
চলন্ত বাসে এক যুবতীকে দেখে হস্তমৈথুন করছেন এক মধ্যবয়সী৷ তোলপাড় গোটা শহর৷ ঘটনার ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করেছেন প্রিয়াঙ্কা দাস নামে এক তরুণী৷ তাঁকে উদ্দেশ্য করেই এমন আশালীন আচরণ করছিলেন অসিত রাই নামে ওই ব্যক্তি৷ তাঁকে গ্রেপ্তারও করেছে কলকাতা পুলিশ৷ ক্যালকাটা ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজের মনোরোগ বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক সৃজিত ঘোষ জানিয়েছেন, অভিযুক্তের আচরণে ‘এগজিবিশনিজম’ রোগের উপসর্গ দেখা গিয়েছে৷ তিনি বলেন, ‘হস্তমৈথুন আইনগত অপরাধ নয়। কিন্তু জনসমক্ষে কেউ হস্তমৈথুন করছে মানেই বুঝে নিতে হবে বিকৃত মানসিকতা কাজ করছে।’
[রাতে জেগে নেটফ্লিক্সে চোখ, যৌনতায় মন নেই নয়া প্রজন্মের]
মনোবিদরা জানিয়েছেন, প্রত্যেকে মানুষের ন্যূনতম জ্ঞান বা বেসিক সেন্স থাকে৷ রাস্তায় কীভাবে বেরনো উচিত? কোন ধরনের পোশাক পরা শোভনীয়? এই বেসিক সেন্স থেকে তা বুঝতে পারে মানুষ৷ মনোবিজ্ঞানের ভাষায় এই বেসিক সেন্সকে বলা হয় ইগো বাউন্ডারি৷ মনোবিদদের দাবি, বাসে মহিলার সঙ্গে অশালীন আচরণে অভিযুক্ত অসিত রাই এই ইগো বাউন্ডারি পেরিয়ে গিয়েছেন৷ তাই ওই তরুণীকে ভিডিও করতে দেখে আরও উৎসাহিত হয়ে পড়েছিলেন তিনি৷ কার্যত দেখিয়ে দেখিয়েই হস্তমৈথুন করছিলেন তিনি৷ যা ভিডিওতেও স্পষ্ট ধরা পড়েছে৷
[অদম্য যৌন আকাঙ্ক্ষা কি একরকম নেশা? কী বলছেন বিশেষজ্ঞরা?]
এদেশের বা এশহরে বিরল হলেও, বিদেশে আকছারই ‘এগজিবিশনিজম’-এর ঘটনা ঘটে। ১৮৭৭ সালে প্রথম এই রোগটি আবিষ্কার করেন মনোবিদ চার্লস লেসগো৷ এই রোগে আক্রান্তেরা নিজেদের গোপন অঙ্গের প্রদর্শন বা এগজিবিশনে করতে দ্বিধা বোধ করেন না৷ তাই এই রোগের নাম ‘এগজিবিশনিজম’৷ ‘এগজিবিশনিজম’-এর আবার একাধিক স্তর বা বিভাগ আছে৷ কখনও স্রেফ গায়ে কিছু না দিয়ে হেঁটে চলে যান রোগী৷ কখনও আবার জনসমক্ষে নিজের গোপনাঙ্গ প্রদর্শন করেন৷ ক্যালকাটা ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজের মনোরোগ বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক সৃজিত ঘোষ জানিয়েছেন, একাধিক কারণে এই রোগ হয়৷ নারী সম্পর্কে সমাজে অনেক যেমন অনেক ভুল ধারণা আছে, তেমনি অনেকেই আবার মহিলাদের শুধুমাত্র যৌনতার উপকরণ বলে মনে করেন৷ এদিকে, ছোটবেলা থেকে শিশুকে যৌনতা নিয়ে সঠিক শিক্ষা দেওয়া হয় না৷ সঠিক শিক্ষা ছাড়া ‘এগজিবিশনিজম’-র মতো মানসিক রোগ নির্মূল করা সম্ভব নয় বলে জানিয়েছেন মনোরোগের চিকিৎসক-অধ্যাপক সৃজিত ঘোষ৷
[বাবা-মা হওয়ার পরিকল্পনা করছেন? ফাস্টফুডে আসক্তি নেই তো?]
The post লজ্জাবোধই থাকে না! জনসমক্ষে গোপনাঙ্গ প্রদর্শন করেন এই মানসিক রোগীরা appeared first on Sangbad Pratidin.