সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: কবিগুরুর কল্পনায় ‘কাদম্বিনী মরিয়া’ প্রমাণ করেছিল যে ‘সে মরে নাই’। বাস্তবে প্রায় তেমনই অবস্থা হয়েছে মুম্বইয়ের ইমরান শেখের। ‘আমি বেঁচে আছি’। ২৯ সেপ্টেম্বরের পর থেকে এই মন্ত্রই জপে চলেছেন ৩৫ বছরের যুবক। জনে জনে এভাবেই বেঁচে থাকার প্রমাণ দিতে হচ্ছে তাঁকে। কেন? স্থানীয় সংবাদমাধ্যম ও জনৈক নেতার ভুলের জন্য।
[ব্রহ্মতালু ফুঁড়ে বেরিয়ে মস্তিষ্ক, ‘মনস্টার বেবি’ নিয়ে দিশেহারা হাসপাতাল]
মুম্বইয়ের ইতিহাসে কালো অধ্যায় হিসেবেই লেখা থাকবে ২০১৭-র সেপ্টেম্বর মাসের এই ২৯ তারিখ। কেবলমাত্র গুজবের জেরে পদপিষ্ট হয়ে ২৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। আহত ৫০-এরও বেশি। আর এ ঘটনা সম্পূর্ণ পালটে দিয়েছে ইমরান শেখের জীবন। দাদারে কাপড়ের ব্যবসা রয়েছে ইমরানের। রোজ ট্রেনে করে সেখানেই যান তিনি। সঙ্গে যান তাঁর কাকা মাসুদ আলম। মাসুদ নামেন পারেল স্টেশনে। রোজকার এই নিয়মের ব্যতিক্রম হয়নি সেদিনও। কিন্তু সেদিন সকালে এলফিনস্টোন স্টেশনের ভয়াবহ দুর্ঘটনায় গুরুতর আহত হন মাসুদ আলম। অন্যদের মতোই কেইএম হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় তাঁকে। খবর পেয়েই হাসপাতালে ছুটে যান ইমরান। ঘটনাস্থলে পৌঁছে জানতে পারেন হাসপাতালে মৃত্যু হয়েছে মাসুদের। ইতিমধ্যেই মাসুদের মৃত্যুর খবর স্থানীয় সংবাদমাধ্যমের কাছেও পৌঁছায়। খবরের তথ্য হিসেবে ওই সংবাদমাধ্যমের পক্ষ থেকে ইমরানের কাছে মাসুদের একটি ছবি চাওয়া হয়। ইমরান নিজের ও কাকার একটি ছবি পাঠিয়ে দেয়। এতেই হয় বিপত্তি। ভুল করে মৃতদের তালিকায় ইমরানের ছবিও ছাপিয়ে দেয় ওই সংস্থা। পরে অবশ্য সে ভুল শুধরে নেয় ওই সংবাদমাধ্যম। কিন্তু সেই ছবি আবার বড় ব্যানার হিসেবে স্টেশনের পাশে টাঙিয়ে দেওয়া হয় স্থানীয় এক নেতার পক্ষ থেকে। মৃতদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে টাঙানো হয় ব্যানারটি। এতেই অতিষ্ঠ হয়ে ওঠে ইমরানের জীবন।
[ব্রেন টিউমারে আক্রান্ত রোগীর প্রাণ বাঁচালেন ‘বাহুবলী’]
‘বেঁচে আছি’, এই প্রমাণ দিতে দিতে হাঁফিয়ে উঠেছেন মুম্বইয়ের কাপড় ব্যবসায়ী। সমবেদনা জানাতে ফোনের পর ফোন আসছে। অনেক আত্মীয়-বন্ধু আবার বাড়িতেও চলে আসছেন। সকলকে নিজের বেঁচে থাকার প্রমাণ দিতে হচ্ছে। কিন্তু ওই ব্যানার থেকে নিজের ছবি সরাতে গেলে কোথায় যোগাযোগ করতে হবে? এই প্রশ্নের উত্তর এখনও খুঁজে পাচ্ছেন না ইমরান। বিষয়টি রেলের ডিভিশনাল ম্যানেজার মুকুল জৈনকে জানালে তিনি জানান, পুলিশকে বলা হয়েছে বিষয়টি খতিয়ে দেখতে। কিন্তু খতিয়ে দেখার পর ব্যবস্থা কবে নেওয়া হবে? এ প্রশ্নের উত্তর জানা নেই ইমরান শেখের।
[তাজমহল ভেঙে ফেলুন যোগী, প্রস্তাব আজম খানের]