সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: করোনার (Coronavirus) দ্বিতীয় ঢেউয়ে হু হু করে দেশজুড়ে ছড়াচ্ছে সংক্রমণ। মৃতের সংখ্যাও বাড়ছে দ্রুত হারে। জায়গা না পেয়ে অস্থায়ী শ্মশান তৈরি করে দাহ করতে হচ্ছে দেহ। পরিস্থিতি দেখে দিল্লি হাই কোর্ট আজ জানিয়েছে, এটা করোনার ঢেউ নয়, সুনামি। এমন ভয়াবহ পরিস্থিতিতে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে লড়াই করতে দেখা গিয়েছে অনেক হৃদয়বানকে। কেউ অক্সিজেন সিলিন্ডার জোগাড় করে দিচ্ছেন। কেউ বা সোশ্যাল মিডিয়ায় লাগাতার শেয়ার করে যাচ্ছেন কোন হাসপাতালে কত বেড ফাঁকা আছে সেই তথ্য। অতিমারীর সর্বগ্রাসী আক্রমণের সামনে দাঁড়িয়েও তাঁরা চেষ্টা করছেন আক্রান্ত ও তাঁদের পরিবারের পাশে দাঁড়াতে। যার যতটুকু সাধ্য।
তেমনই এক নাম ন্যান্সি আয়েজা মিস্ত্রি। গুজরাটের সুরাট শহরের বাসিন্দা আয়েজা হয়ে উঠেছেন করোনাকালে নিঃস্বার্থ ভাবে দেশের হয়ে কাজ করা মানুষদের এক মুখ। আয়েজা এই মুহূর্তে চার মাসের অন্তঃসত্ত্বা। ধর্মপ্রাণ এই তরুণী এমাসে রোজাও পালন করছেন। কিন্তু এত কিছুর মধ্যেও তিনি দায়িত্বে অবিচল। অটল কোভিড-১৯ কেন্দ্রে নার্স হিসেবে কাজ করছেন। তাঁর কথায়, ‘‘আমার গর্ভে একটি শিশু রয়েছে। কিন্তু আমার দায়িত্বও আমার কাছে গুরুত্বপূর্ণ। ঈশ্বরের দয়ায় আমি পবিত্র রমজানের মাসে রোগীদের সেবা করার সুযোগ পেয়েছি।’’
প্রসঙ্গত, গত বছর করোনার প্রথম ঢেউয়ের সময়ও করোনা রোগীর শুশ্রুষা করেছিলেন আয়েজা। এবারও তিনি ঝাঁপিয়ে পড়েছেন কর্মযজ্ঞে। নিরলস ভাবে দিনে আট থেকে দশ ঘণ্টার খাটনি। সবই হাসিমুখে করছেন তিনি। বুঝিয়ে দিচ্ছেন, মানুষের পাশে দাঁড়াতে পারার কর্তব্যে কোনও ফাঁকি দিতে চান না তিনি।
[আরও পড়ুন: করোনা ভ্যাকসিন ও অক্সিজেন উৎপাদন সামগ্রীতে মকুব আমদানি শুল্ক, বড় ঘোষণা কেন্দ্রের]
আরেকটি নাম ভগৎ হালওয়াই। উত্তরপ্রদেশের আগ্রায় অবস্থিত এই রেস্তোরাঁ দু’বেলা স্বাস্থ্যকর খাবারের বন্দোবস্ত করছে কোভিড (COVID-19) রোগী ও তাঁদের পরিবারের জন্য। এবং একেবারে বিনামূল্যে। যাঁরা সংক্রমিত হওয়ার পরে বাড়িতেই রয়েছেন আইসোলেশনে, তাঁদের জন্য এমন ব্যবস্থা। একেবারে বাড়ি পর্যন্ত পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে খাবার।
রেস্তোরাঁর মালিক শিবম ভগত জানাচ্ছেন, এ এক এমন কঠিন সময়, যখন সকলেরই উচিত একে অপরকে সাহায্য করা। কিন্তু কীভাবে মিলছে কোভিড রোগীর সন্ধান? শিবম বলছেন, ‘‘আমরা ইনস্টাগ্রাম ব্লগারদের সঙ্গে যোগাযোগ রেখেছি। তাঁরাই সোশ্যাল মিডিয়ায় খবর ছড়িয়ে দিচ্ছেন। তাঁদের মাধ্যমে জানতে পেরে লোকেরা আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করছেন।’’ আপাতত একদিনে সারা শহরে ২৪০টি খাবারের প্যাকেট ডেলিভারি করছেন তাঁরা।