ধ্রুবজ্যোতি বন্দ্যোপাধ্যায়: ভোটের বছরে যাওয়ার আগে দলে একগুচ্ছ রদবদল করেছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। নতুন অনেক মুখ সামনে আনা হয়েছিল। এবার ‘এক ব্যক্তি এক পদ’–এর নীতি কার্যকর করবেন তিনি। পাশাপাশি দলের বিপুল জয়কে ভিত্তি করেই সমস্ত শাখা সংগঠনে নতুন দায়িত্ব দেওয়ার কাজটা এক দিনে সেরে ফেলতে চাইছেন তৃণমূলনেত্রী (TMC leader)। মূল উদ্দেশ্য, এই জয়ের রেশ ধরে নতুন দায়িত্ব দিয়ে দলকে একে একে ময়দানে নামিয়ে দেওয়া।
যেখানে দলের লক্ষ্য ২০২৪–এর লোকসভা ভোট, সেখানে ‘দিল্লি বহুত দূর হে’ এই স্লোগানকে তারা দূরেই রাখছে। রাজধানীর লড়াইয়ের আগে প্রস্তুতি হিসাবে ত্রিপুরা, উত্তরপ্রদেশের মতো রাজ্যের ভোট নিয়েও ইতিমধ্যে বিস্তারিত আলোচনা শুরু হয়েছে। সেই লক্ষ্যে দলকে ময়দানে নামাতে হলে খোলনলচের বদল কিছু প্রয়োজন। সেই কাজটাই দ্রুত সেরে ফেলার কথা দলে আলোচনা হয়েছে। সম্প্রতি এ নিয়ে সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ও নেত্রীর সঙ্গে একাধিকবার কথা বলেছেন। যতটুকু জানা যাচ্ছে, তাতে মূল সংগঠন থেকে, যুব, ছাত্র, মহিলা, শ্রমিক সংগঠনস্তরে স্থগিত থাকা সমস্ত নতুন সিদ্ধান্ত এর মধ্যেই জানিয়ে দেওয়া হতে পারে। দীর্ঘদিন ধরে এই কাজ করার বদলে একই দিনে সবটা সেরে ফেলতে চান নেত্রী।
[আরও পড়ুন: বকখালিতে ট্রলারডুবির ঘটনায় ৯ জন মৎস্যজীবীর দেহ উদ্ধার, শোকে পাথর পরিজনেরা]
ইতিমধ্যে সংগঠনের বিভিন্ন দায়িত্বে নতুন মুখ আনা হয়েছে। ‘এক ব্যক্তি এক পদ’ নীতি মেনে সেই কাজ আগেই শুরু করে দিয়েছেন মমতা। এবার মন্ত্রীদের মধ্যে যাঁরা একইসঙ্গে একাধিক দায়িত্বে রয়েছেন, তাঁদের কাজের ভার লাঘব করে সংগঠনে নতুন মুখ এনে আরও চাঙ্গা করার উদ্দেশ্য রয়েছে। তাতে জয়ের রেশকে টেনে ময়দানে নামানো সহজ হবে বলেই জানাচ্ছেন এক শীর্ষ নেতা। তবে এক্ষেত্রে নজরে রাখা হচ্ছে সক্রিয় সদস্যদের। তাঁদের নিয়ে সিদ্ধান্তের ক্ষেত্রে দ্বিতীয়বার বিবেচনা করা হয়েছে।
দল ইতিমধ্যে একটি রিপোর্ট তৈরি করেছে। বিশেষ করে উত্তরবঙ্গ নিয়ে। কারণ সেখানে ফল ভাল নয়। দলে থেকেও বহু চক্রান্তের খবর মিলেছে ভোটে। তাঁদের নিয়েও রিপোর্ট জমা পড়েছে। ফলে তাঁদের নিয়ে যে একটা সিদ্ধান্ত হবেই, এটা স্পষ্ট। তবে এই পর্বেও নতুন করে কিছু ক্ষোভ–অভিমানের জন্ম হবে ধরে নিয়েই এগোচ্ছে দল। তাঁদের অন্য কোনওভাবে দলের কাজে লাগানোর প্রস্তাবও দলের পক্ষ থেকে নেত্রীকে দেওয়া হয়েছে। একটি সূত্রের দাবি, নতুন দায়িত্বে কেউ এলে, স্বাভাবিকভাবেই একটা বদল হবে। কিন্তু তাঁরা যেন কোনওভাবে নিজেদের বঞ্চিত মনে না করে, তার জন্য তাঁদেরও কোনও না কোনও দায়িত্বে আনার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে নেত্রীর কাছে। কারণ, যাঁকেই বদল করা হোক, ভোটে তাঁর সক্রিয় ভূমিকা থেকে থাকলে, দলে তাঁরও গুরুত্ব থাকবে।