সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: পটাশপুরে কেলেঘাই নদীর (Keleghai River) বাঁধ ভেঙে বিপত্তি। ইতিমধ্যেই বাগুই নদীর জলে প্লাবিত পটাশপুর ১ নম্বর ব্লকের একাধিক এলাকা। পূর্ব মেদিনীপুর জেলা পরিষদের বন ও ভূমি কর্মাধ্যক্ষ মৃণালকান্তি দাস জানান, পটাশপুর থানা এলাকা পুরোপুরি জলমগ্ন। ঘরছাড়া অন্তত ৩ হাজার পরিবার। তাঁদের নিরাপদ জায়গায় সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। নদীর জলস্তর বৃদ্ধির ফলে বাড়ছে আতঙ্ক।
২০০৮ সালে কেলেঘাই নদীর বাঁধ ভেঙে প্লাবিত হয় একের পর এক গ্রাম। দুর্ভোগের শিকার হন স্থানীয় বাসিন্দারা। ২০১১ সালে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Mamata Banerjee) নেতৃত্বাধীন তৃণমূল সরকার ক্ষমতায় আসে। তারপর রাজ্য ও কেন্দ্রের যৌথ উদ্যোগে কেলেঘাই নদীর সংস্কার হয়।ফি বছর প্লাবনের সমস্যা দূর হয়। ১০ বছর পর ফিরল সেই স্মৃতি। বাগুই নদীর জলে প্লাবিত পটাশপুর ১ নম্বর ব্লকের একাধিক এলাকা। বৃহস্পতিবার এলাকার বিধায়ক উত্তম বারিক-সহ ব্লক প্রশাসনিক আধিকারিকেরা দিনভর নদী বাঁধ পরিদর্শন করেন। বৈঠকও হয় বিকেলে। তবে রাত থেকে পরিস্থিতির অবনতি হতে শুরু করে। প্লাবিত এলাকার বাসিন্দাদের অন্যত্র সরিয়ে নিয়ে যাওয়ার কাজ শুরু হয়েছে। অযথা আতঙ্কিত না হওয়ার কথা জানিয়েছেন প্রশাসনিক আধিকারিকরা।
[আরও পড়ুন: মমতা ‘দুর্গা’, অনুব্রত ‘অসুর’! সোশ্যাল মিডিয়ায় ছবি পোস্ট করে গ্রেপ্তার বীরভূমের যুবক]
এদিকে, কংসাবতী নদীর (Kangsabati River) বাঁধ ভেঙে ভেসে গেল পাঁশকুড়ার দু’টি গ্রাম পঞ্চায়েতের বিস্তীর্ণ এলাকা।পাঁশকুড়া ব্লকের চৈতন্যপুর ২ গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার উদয়পুর মৌজার জগদীশপুর এলাকায় এই নদীবাঁধ ভেঙে যায়। হু হু করে জল ঢুকে পড়ে লোকালয়ে। স্থানীয় ও প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, ব্যারেজ থেকে জল ছাড়া না হলেও নিম্নচাপের অতি বৃষ্টির জলে পাঁশকুড়ার কংসাবতীর জল চরম বিপদসীমার উপর দিয়ে বইছে।
তার ফলে চৈতন্যপুর ১ ও ২ গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার বিজয় রামচক, রায়বাঁধ, হরিনারায়ণ চক, মুকুন্দ চক, লক্ষকুড়ি, চৈতন্যপুর, কিসমত, হরিরামপুর এলাকা প্লাবিত। শুক্রবার সকাল থেকে নতুন করে চৈতন্যপুর ১ গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার মাগুরি জগন্নাথপুর, পরমানন্দচক, বিজয়নগর, চক রাধাবন, মোহনপুর, কালোই, অর্জুন দা, চাউলা কুড়ি মৌজার বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হতে শুরু করেছে। একইসঙ্গে পাঁশকুড়ার ঘোষপুর গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার সরাইঘাট মৌজারও বানভাসি অবস্থা। সংকট তৈরি হয়েছে পানীয় জলের। বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে গোটা এলাকা।
বন্যা ভাঙন প্রতিরোধ কমিটির জেলা সম্পাদক নারায়ণ চন্দ্র নায়েক বলেন, “যুদ্ধকালীন তৎপরতায় কংসাবতী এবং চণ্ডিয়া নদীবাঁধ মেরামতের কাজ শুরু করতে হবে। না হলে আরও ভয়ংকর কোনও বিপদের সম্মুখীন হতে হবে আমাদের।” এ বিষয়ে সেচ দপ্তরের জেলা আধিকারিক অনির্বাণ ভট্টাচার্য বলেন, “পরিস্থিতি সংকটজনক।তবে যে কোনও রকমের অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে রাতভর যুদ্ধকালীন তৎপরতায় কাজ চলছে।”
দেখুন ভিডিও: