সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: বিয়ে (Marriage) হয়ে যাওয়া মানেই নৃশংস পাশবিক প্রবৃত্তির লাইসেন্স নয়। বৈবাহিক ধর্ষণ নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ এক রায়দানের সময় এমনই মন্তব্য কর্ণাটক হাই কোর্টের (High Court)। আদালত জানিয়ে দিল স্ত্রীর উপরে জোর করে যৌন নির্যাতন চালিয়ে তাঁকে ‘যৌন দাসী’ বানাতে চাইলে অভিযুক্ত স্বামীর বিরুদ্ধেও ধর্ষণের (Marital Rape) অভিযোগ আনা যাবে।
এক মহিলা অভিযোগ করেছিলেন, তাঁর স্বামী বিয়ের পর থেকেই তাঁর সঙ্গে যৌনদাসীর মতো আচরণ করে চলেছেন। নিজের স্বামীকে ‘অমানুষ’ বলে ক্ষোভ উগরে দিয়ে ওই মহিলা জানিয়েছেন, তাঁকে মেয়ের সামনেও যৌনতায় বাধ্য করেছিলেন অভিযুক্ত। এপ্রসঙ্গে এদিন হাই কোর্ট জানিয়েছে, কোনও পুরুষ, স্রেফ স্বামী বলে ধর্ষণের অভিযোগ থেকে ছাড় পেতে পারেন না। তাহলে আইনের অপপ্রয়োগ হয় এবং সংবিধানের উল্লঙ্ঘন করা হয়। যদিও সেই সঙ্গে হাই কোর্ট পরিষ্কার করে দিয়েছে, বৈবাহিক ধর্ষণকে অপরাধ হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া উচিত কিনা তা নিয়ে কোনও মন্তব্য করছে না আদালত।
[আরও পড়ুন: ‘আশা করি রাজ্য সরকার দোষীদের উপযুক্ত শাস্তি দেবে’, রামপুরহাট কাণ্ডে মুখ খুললেন প্রধানমন্ত্রী]
তবে স্ত্রী যে স্বামীর মালিকানাধীন নন, একথা এদিন পরিষ্কার করে দিয়েছেন বিচারপতি এম নাগাপ্রসন্ন। তাঁর কথায়, ”এটা সেই প্রাচীন কালের ধারণা যে স্বামীরা তাঁদের স্ত্রীর মালিক। তাঁদের শরীর, মন ও আত্মা এতে আহত হয়।” সেই সঙ্গেই তাঁর স্পষ্ট মন্তব্য, ”বিয়ে কোনও প্রতিষ্ঠান নয়, হতে পারে না। এবং আমার মতে, নৃশংস পাশবিক প্রবৃত্তি প্রকাশের কোনও বিশেষ পুরুষ অধিকার কিংবা লাইসেন্সও নয়।”
বৈবাহিক ধর্ষণ নিয়ে বিতর্ক আজকের নয়। আমেরিকা, অস্ট্রেলিয়ার বিভিন্ন প্রদেশ, নিউজিল্যান্ড, কানাডা, ইজরায়েল, ফ্রান্স, সুইডেন, ডেনমার্কের মতো বহু দেশে তা শাস্তিযোগ্য অপরাধ হিসেবে গণ্য হলেও ভারতে এখনও এটিকে অপরাধ হিসেবে দেখা হয় না। এই পরিস্থিতিতেই এদিনের মন্তব্য হাই কোর্টের।