কৃষ্ণকুমার দাস: এবার কলকাতার করোনার সুস্থ রোগী ও তাঁদের পরিবারের সরাসরি প্লাজমা পরীক্ষায় নামছে বিশ্ব স্বাস্থ্যসংস্থা (WHO) ও আইসিএমআর (ICMR)। শুধু তাই নয়, শহরে নন-কোভিড নাগরিকেরও ‘র্যানড্যাম’ পদ্ধতিতে রক্ত সংগ্রহ করবেন WHO’র বিশেষজ্ঞরা। খতিয়ে দেখবেন, করোনায় সুস্থ ব্যক্তির অ্যান্টিবডির ক্ষমতা বেশি না যাঁদের এখনও করোনা ভাইরাসে সংক্রমণ হয়নি তাঁদের শরীরের রোগ প্রতিরোধ শক্তিশালী। জাতীয় করোনা মোকাবিলা নীতি প্রণয়নের আগে বৃহস্পতিবার থেকেই কলকাতার বিভিন্ন সংক্রমিত ওয়ার্ড ও আগের সুপার হটস্পটে শুরু হচ্ছে ভাইরাস বিশেষজ্ঞ ও গবেষকদের নয়া অভিযান। সঙ্গে থাকছেন রাজ্য স্বাস্থ্য দপ্তরের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে করোনা নিয়ে নয়া গবেষণার গতি ও প্রকৃতি নিয়ে বুধবারই পুরভবনে বিস্তারিত বৈঠক করেন কলকাতা পুরসভার মুখ্যপ্রশাসক ও পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম। বৈঠকে চূড়ান্ত হয় কোন পাঁচটি ওয়ার্ডে নন-কোভিড রোগীদের রক্তের ‘র্যানডাম স্যাম্পেল’ সংগ্রহ হবে। পরে পুরমন্ত্রী তথ্য দিয়ে জানান, কোন পথে কলকাতায় করোনা রোগী দ্রুত সুস্থ হচ্ছে, মোকাবিলায় সাফল্য আসছে তা জানতেই WHO’র এই সমীক্ষা। কলকাতার ১৬টি বরোর ১৬টি পয়েন্টে ৪০ জন ব্যক্তির রক্ত সংগ্রহ করবেন WHO’র প্রতিনিধিরা। চিহ্নিত ওয়ার্ডের চার প্রান্ত থেকে ১০জন করে ব্যক্তির রক্ত সংগ্রহ করা হবে। প্লাজমা বিশ্লেষণ করে দেখা হবে ওই ব্যক্তির শরীরে করোনার অ্যান্টিবডি তৈরি হলে কতটা হয়েছে। নাকি আদৌ হয়নি। এছাড়া অন্য ৫টি ওয়ার্ডের বিভিন্ন এলাকা থেকেও ১০০ জনের রক্ত সংগ্রহ করা হবে। দু’টি ক্ষেত্রের তথ্যই সর্বভারতীয়স্তরে চিকিৎসাবিজ্ঞানীরা বিশ্লেষণ করবেন বলে ফিরহাদ জানান। দিন কয়েক আগেই ‘সংবাদ প্রতিদিন’ জানিয়েছিল WHO ও ICMR-এর বাংলায় এসে রক্ত সংগ্রহ করে করোনা মোকাবিলায় গবেষণার খবর।
[ আরও পডুন: উত্তরবঙ্গে বদলি কলকাতা পুলিশের এক কর্তা-সহ ৩ আধিকারিক ]
কলকাতার মধ্যবিত্তের বাড়ি ও বহুতল আবাসনের ফ্ল্যাটে এখন করোনার সংক্রমণ বৃদ্ধি পাওয়া উদ্বিগ্ন পুরসভা। প্রাথমিকভাবে সন্দেহ করা হচ্ছিল, বাজার থেকে সংক্রমণ ঘটছে। বস্তুত এই কারণেই ৬ দিন আগে মুখ্য প্রশাসকের নির্দেশে কাঁকুড়গাছি, বেলেঘাটা-সহ কয়েকটি মার্কেটে বাজার করতে আসা ব্যক্তিদের লালারস সংগ্রহ করে সমীক্ষা চলে। ফিরহাদ জানিয়েছেন, সংগৃহীত ৬০০ জনের লালারসে মাত্র তিনজনের শরীরে করোনা ভাইরাস পাওয়া গিয়েছে। এখন মনে হচ্ছে, বাজার নয়, নিশ্চয়ই অন্য কোনও উৎস থেকে সংক্রমণ ঘটছে। সংক্রমণের সেই ভরকেন্দ্রটাই খুঁজে বের করার চেষ্টা করছে পুরসভা। তবে এদিন থেকে পুরসভা উত্তরের বিভিন্ন আবাসনে শিবির করে হোমিওপ্যাথির ‘আর্সেনিকা অ্যালবামা-৩০’ ডোজ খাইয়ে বাসিন্দাদের ইমিউনিটি বৃদ্ধির কর্মসূচি শুরু করেছে। এদিন রাতে দক্ষিণ কলকাতার বরো-৯ এলাকায় ঘূর্ণিঝড় বিধস্ত ফুটপাতগুলি পরিদর্শনে যান মুখ্যপ্রশাসক। ঝড়ে গাছ উপড়ে পড়ায় ক্ষতিগ্রস্ত ফুটপাতগুলি দ্রুত মেরামতের নির্দেশ দেন বিভাগীয় ডিজিকে।
[ আরও পড়ুন: ‘জুলাইয়ে স্কুল খুলবে না, পরীক্ষা হবে’, ফি না বাড়ানোর আবেদন মুখ্যমন্ত্রীর ]
The post সংগ্রহ করা হবে করোনাজয়ীদের প্লাজমা, কলকাতায় আসছে WHO’র প্রতিনিধি দল appeared first on Sangbad Pratidin.