দীপক পাত্র: আশঙ্কা ছিল। ছিল চিন্তার কারণ। কিন্তু সাধারণ বার্ষিক সভায় তার কোনও আঁচ পড়ল না। বরং সদস্যরা বুঝিয়ে দিলেন, ক্লাবের পাশেই তাঁরা রয়েছেন। তাঁদের সিদ্ধান্তকে তাঁরা মন থেকে মেনে নিচ্ছেন এটিকের সঙ্গে সংযুক্তিকরণের পর ক্লাবের কতিপয় সদস্য বিক্ষোভ দেখাতে ছাড়েননি। এও বলেছিলেন, ক্লাবকে বিক্রি করে দেওয়া হল। শনিবার ছিল ক্লাবের বার্ষিক সভা। তাই অনেকে ভেবেছিলেন, সভায় এই নিয়ে ঝড় উঠতে পারে। সদস্যরা ক্ষোভে ফেটে পড়তে পারেন। বাস্তবে দেখা গেল, ঠিক উলটো ছবি। যেখানে সদস্যরা বার্ষিক সভায় জানিয়ে দিলেন, তাঁরা ক্লাবের সঙ্গেই আছেন। এটিকের সঙ্গে সংযুক্তিকরণকে তাঁরা মন থেকে মেনে নিচ্ছেন।
আসলে সভাপতি টুটু বসুর আবেগপূর্ণ বক্তব্য পুরো সভাকে যেন মোহিত করে দিল। “এখনকার মতো ক্লাবকে হয়তো চালিয়ে যেতে পারতাম। সেক্ষেত্রে আমার সমস্যা হত না। কিন্তু যেদিন আইএসএল-কে ভারতীয় ফুটবলে এক নম্বর লিগ করা হল সেদিন বুঝে গেলাম, এই লিগে খেলতেই হবে। মোহনবাগান একটা ঐতিহ্যবাহী ক্লাব। ভারতীয় ফুটবলে এক নম্বর লিগে মোহনবাগান খেলবে না তা কখনও হয়না। সেদিন থেকে নতুন করে ভাবতে শুরু করি। দেশের দু’নম্বর লিগে আমাদের খেলাটা ঠিক মানায় না। তাই আইএসএলে খেলার জন্য এটিকের সঙ্গে যুক্ত হই। ফুটবল বিভাগের ৮০ শতাংশ শেয়ার ছাড়তে তাই বাধ্য হয়েছি। আসলে বছরে ৪০ কোটি টাকা খরচ করার ক্ষমতা আমাদের নেই।”
[আরও পড়ুন: নেরোকাকে গোলের মালা, প্রেমদিবসে লিগ জয়ের আরও কাছে মোহনবাগান]
এই প্রসঙ্গ টেনে টুটু বসু বলেন, “আমরা এমন একজনকে নিয়েছি, যাদের সঙ্গে ক্লাবের নাড়ির সম্পর্ক। যাদের শিকড় কলকাতায়। মালিক পক্ষ ক্লাবের সদস্য। ক্লাবের ঐতিহ্য সম্পর্কে যে ভালমতো জানে।” এবার ইস্টবেঙ্গলকে খোঁচা দিয়ে ক্লাব সভাপতি বলেন, “বাইরের সংস্থাকে এনেছিল ইস্টবেঙ্গল। তাই তারা উড়ে গিয়েছে। আমাদের যে সংস্থা এসেছে তাদের উড়ে যাওয়ার কোনও প্রশ্নই নেই। এখন সতি্য ইস্টবেঙ্গলের অবস্থা সঙ্গীন। মাংস খাওয়ার পরিস্থিতি নেই। এমনকী এঁচোড়ও। আমি চাইব, ওরাও দ্রুত মাংস খাওয়ার ব্যবস্থা করুক। মোহনবাগান-ইস্টবেঙ্গল একসঙ্গে না খেললে মজাটাই থাকবে না।”
মোহনবাগান অ্যাথলেটিক ক্লাবের খরচ দিনকে দিন বাড়ছে। এদিন ২০১৮-১৯ বার্ষিক হিসেব পেশ করায় তা স্পষ্ট। এই মরশুমে ক্লাবের বার্ষিক আয় ৮৯ লক্ষ টাকা। অথচ ব্যয় হয়েছে ১ কোটি ৭ লক্ষ টাকা। অর্থসচিব দেবাশিস দত্ত এই ঘাটতির ব্যাখ্যা দিয়ে বলেন, “ক্লাব তহবিল থেকে ফুটবল কোম্পানিতে দেওয়া হয়েছিল ৭৬ লক্ষ টাকা। নির্বাচনে খরচ হয় ১৭ লক্ষ। আইনি জটিলতা মেটাতে ১৯ লক্ষ। তাই ঘাটতি। ২০১৯-২০-তে সেই ঘাটতি মেটানোর চেষ্টা হচ্ছে।” এবার থেকে সদস্য পদ বা কার্ড রিনিউয়ে ১৮ শতাংশ জিএসটি যুক্ত হল।
The post মোহনবাগানের বার্ষিক সভায় এটিকের সঙ্গে হাত মেলানোকে সমর্থন সদস্যদের appeared first on Sangbad Pratidin.