বিশেষ সংবাদদাতা, নয়াদিল্লি: বিজেপিকে (BJP) ক্ষমতা থেকে সরাতে সমস্ত বিরোধী দলকে বারবারই ঐক্যবদ্ধ হওয়ার কথা বলেছেন তৃণমূলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেইমতো তৃণমূল কংগ্রেসও বিরোধীদের মধ্যে সমন্বয় তৈরি করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। ইতিমধ্যেই ১৪টি বিরোধী রাজনৈতিক দল একজোট হয়ে কেন্দ্রীয় সংস্থার অপব্যবহার নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছে। এবার বিভিন্ন রাজ্যে বিরোধীদের মধ্যে সমন্বয় তৈরির তোড়জোড় শুরু হল। আগামী সোমবার, ৩ এপ্রিল ডিএমকে প্রধান তথা তামিলনাডুর মুখ্যমন্ত্রী এম কে স্ট্যালিন চেন্নাইয়ে সমস্ত বিরোধী রাজনৈতিক দলকে বৈঠকে আমন্ত্রণ জানিয়েছেন। ‘সামাজিক ন্যায় এবং দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া’ শীর্ষক বিষয়ের উপর আলোচনার ডাক দিয়েছেন তিনি। জানা গিয়েছে, প্রায় কুড়িটি বিরোধী রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধি এই বৈঠকে যোগ দিতে চলেছেন।
বিরোধী নেতাদের মধ্যে অনেকেই সশরীরে, বাকিরা ভারচুয়াল মাধ্যমে হাজির থাকবেন বৈঠকে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সেদিন মেদিনীপুরে পূর্ব নির্ধারিত কর্মসূচি রয়েছে। তাই তৃণমূলের প্রতিনিধি হিসাবে ভারচুয়াল মাধ্যমে বৈঠকে রাজ্যসভার দলনেতা ডেরেক ও ব্রায়েন উপস্থিত থাকবেন। উল্লেখ্য, এই বৈঠকে প্রথমবার বিজেডি এবং ওয়াইএসআর কংগ্রেসের প্রতিনিধিও হাজির থাকবেন বলেই জানা গিয়েছে। বৈঠকে বিজেডি-র প্রতিনিধি থাকা তাৎপর্যপূর্ণ।
[আরও পড়ুন: পর্ন তারকার মুখ বন্ধ রাখতে ঘুষ! প্রথম প্রাক্তন মার্কিন প্রেসিডেন্ট হিসেবে আদালতে অভিযুক্ত ট্রাম্প]
কেন্দ্রীয় সরকার তথা বিজেপির ‘বন্ধুদল’ হিসাবেই পরিচিতি রয়েছে বিজেডির। তৃণমূলনেত্রী কিছুদিন আগেই বিজেডি প্রধান, ওড়িশার মুখ্যমন্ত্রী নবীন পট্টনায়েকের সঙ্গে দেখা করেছিলেন। সেই বৈঠকের সঙ্গে বিরোধী শিবিরের বৈঠকে বিজেডির যোগ দেওয়ার সংযোগ থাকতে পারে বলেই অনেকে মনে করছেন। বিরোধীদের মধ্যে এই ধরনের বৈঠক ধারাবাহিকভাবে চলবে এবং একেক বার একেকটি রাজনৈতিক দলকে প্রধান উদ্যোক্তা হিসাবে দেখা যাবে বলেই জানা গিয়েছে। এবারের বৈঠক প্রসঙ্গে ডেরেক জানিয়েছেন, “বিরোধী ঐক্য তো এমনটা নয় যে, সুইচ টিপলেই হয়ে যাবে। ধারাবাহিক প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে যেতে হবে। সেখানে সবাই নিজের নিজের ইস্যু তুলে ধরবে। এবারে যেমন ‘অল ইন্ডিয়া ফেডারেশন ফর সোশ্যাল জাস্টিস’–এই ছাতার নিচে বিরোধীদের মধ্যে সমন্বয় তৈরি হচ্ছে। আর আমাদের নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তো বুধবারই বলেছেন, বিজেপিকে ক্ষমতা থেকে সরাতে সবাইকে একজোট হতে হবে।”
জানা গিয়েছে, কংগ্রেসের পাশাপাশি ঝাড়খণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী তথা ঝাড়খণ্ড মুক্তি মোর্চার প্রধান হেমন্ত সোরেন, আরজেডি নেতা তেজস্বী যাদব, সমাজবাদী পার্টির নেতা অখিলেশ যাদব, ন্যাশনাল কনফারেন্স নেতা ফারুক আবদুল্লা, সিপিএমের সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরি, আম আদমি পার্টির রাজ্যসভার দলনেতা সঞ্জয় সিং, বিআরএস-এর কেশব রাও, এনসিপি বিধায়ক ছগন ভুজবল-সহ দেশের বড় বিরোধী দল এবং এমডিএমকে, আরইউএমএল-এর মতো ছোট দলের প্রতিনিধিরাও বৈঠকে যোগ দেবেন।