রঞ্জন মহাপাত্র, কাঁথি: শিশু শিক্ষাকেন্দ্রের শিক্ষিকার অ্যাকাউন্টে ঢুকছে ১০০ দিনের কাজের টাকা। শুধু তিনিই নন, বাড়ির ৩ সদস্যের অ্যাকাউন্টেও এসেছে টাকা। ভোটের ময়দানে এই ইস্যুকেই হাতিয়ার করেছে বিজেপি। কী করে একজন শিশু শিক্ষা কেন্দ্রের প্রধান শিক্ষিকা ১০০ দিনের কাজ না করেও তাঁর ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে টাকা ঢুকছে, প্রশ্ন বিজেপির। তাহলে কি শাসকদলের ঘনিষ্ঠ হলেই ভুয়ো নাম তুলে ১০০ দিনের কাজের টাকা পাওয়া যায়, দাবি গেরুয়া শিবিরের।
পূর্ব মেদিনীপুরের এগরা ২ ব্লকের মঞ্জুশ্রী অঞ্চলের বাসিন্দা মিনতি সেন। বিশরপুর ক্ষুদিরাম শিশুশিক্ষা কেন্দ্রে প্রধান শিক্ষিকার কাজ করেন। কিন্তু ২০২১ সাল থেকে লাগাতার ১০০ দিনের কাজের টাকা পাচ্ছেন বলে অভিযোগ। শিক্ষিকা মিনতি দেবী বলেন, "সরকারি চাকরি করি। তবু আমারা খুব গরিব। ১০ হাজার টাকার বেতন পাই। এই টাকায় সংসার চালানো সম্ভব নয়। তাই সংসার চালাতে অন্য কাজ করতে হয়। সেকারণে অনেকদিন আগে থেকেই জব কার্ড তৈরি করে ছুটির দিনে ১০০ দিনের কাজ করি।"
[আরও পড়ুন: আগামী তিন বছরে ৫ লক্ষ নিয়োগ! ভারতের কর্মসংস্থানে বড়সড় পরিকল্পনা অ্যাপেলের]
এদিকে ১৫ দিন আগে এগরা ২ ব্লকের একজন সিভিক ভলান্টিয়ারের অ্যাকাউন্টে ১০০দিনের টাকা ঢুকেছিল বলে অভিযোগ ওঠে। এবার শিশু শিক্ষাকেন্দ্রের শিক্ষিকা। পরপর দুটি ঘটনাকে হাতিয়ার করেছে বিরোধীরা এগরা ২ ব্লকের সিপিএম নেতা মির্জা নাসের হোসেন বেগ বলেন, "সাধারণ মানুষ তাঁর কাজের টাকা পাচ্ছে না অথচ তৃণমূল 'ঘনিষ্ঠ' সিভিক ও শিক্ষিকারা অবৈধভাবে এই ১০০ দিনের কাজের টাকা পাচ্ছেন। এটা থেকেই স্পষ্ট তৃণমূল সরকার কেন ১০০ দিনের টাকা দেওয়ার জন্যে নিজেরা উদ্যোগ নিয়েছে।"
মেদিনীপুর সাংগঠনিক জেলা বিজেপির সম্পাদক তথা এগরা ২ ব্লকের কনভেনার তন্ময় হাজরা বলেন, "কেন্দ্র সরকার কেন ১০০ টাকা বাকি রেখেছে তা এখন বুঝছেন বাংলার মানুষ। তৃণমূলের উদ্দেশ্য ছিল লোকসভা ভোটের আগে নিজেদের ঘনিষ্ঠদের টাকা পাইয়ে দেওয়া। বাংলায় এক দুর্নীতির আখড়া তৈরি করা। কিন্তু কেন্দ্র সরকার আগাম বুঝতে পেরে টাকার হিসেব চায়। আর তৃণমূল তা দিতে না পেরে কেন্দ্রের বিরুদ্ধে সুর চড়ায়।" যদিও অভিযোগ অস্বীকার করেছে কাঁথি সাংগঠনিক জেলা তৃণমূলের সভাপতি পীযূষকান্তি পন্ডা। তিনি বলেন, "দীর্ঘদিন ধরে ১০০ দিনের কাজ করেন তাই টাকা পেয়েছে। এখানে দুর্নীতির কোন বিষয় নেই। বিজেপি ভোটের মুখে এগুলোকে নিয়ে চটকদারি করে খবরের শিরোনামে আসতে ব্যস্ত হয়ে উঠেছে।"