রূপায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়: মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দেখানো পথেই হাঁটল কেন্দ্র। এবার রাজ্যের দুর্গাপুজোগুলিকে আর্থিক অনুদান দেবে মোদি সরকার। রামমন্দির উদ্বোধনের পর এবার বাংলার ধর্মীয় আবেগ ‘উসকে’ দিতে বড় পদক্ষেপ মোদি সরকারের। সরকারি অনুদানের টাকার অঙ্কটা ৫০ হাজার থেকে ১ লক্ষের মধ্যে থাকবে। তবে রাজ্যের সমস্ত ক্লাব নয়, বাছাই করা মাত্র ৩৫টি ক্লাব পাবে এই অনুদান। কীসের ভিত্তিতে ক্লাব বাছাই হবে তা অবশ্য এখনও অজানা। স্বাভাবিক ভাবেই লোকসভা ভোটের আগে কেন্দ্রের সংস্কৃতি মন্ত্রকের এমন উদ্যোগের নেপথ্যে রাজনীতির গন্ধ পাচ্ছে রাজনৈতিক মহল।
শহরের বিজেপি ঘেঁষা এক সামাজিক সংগঠন মারফত অনুদানের টাকা পৌঁছে যাবে ক্লাবগুলির কাছে। আজ, রবিবার দুপুরে এক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। সেখান থেকেই ৩৫ ক্লাবের হাতে টাকা তুলে দেওয়া হবে। এই তালিকায় কলকাতারও তিনটি নামী পুজো রয়েছে বলে খবর। রামমন্দির উদ্বোধনের পরই এবার বাংলার সবচেয়ে বড় উৎসবকে অনুদান দিতে চলেছে কেন্দ্র। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, “রামই দুর্গাপুজো শুরু করেন বাংলায়। অকাল বোধনই আসল বোধন। তাই অযোধ্যায় রামমন্দির প্রতিষ্ঠার পর পরই বড় সিদ্ধান্ত।” যদিও এই সিদ্ধান্ত নিয়ে তুমুল রাজনৈতিক তরজা শুরু হয়েছে বঙ্গ রাজনীতিতে।
[আরও পড়ুন: বিয়ে করতে টাকা-গয়না নিয়ে চম্পট, ৫ দিন পর সর্ষে খেতে মিলল স্কুল ছাত্রীর নিথর দেহ]
বরাবরই দুর্গাপুজোয় ক্লাবগুলিকে অনুদান দেওয়ার বিরোধিতা করে এসেছে বঙ্গ বিজেপি। আবার পদ্ম শিবিরের কেন্দ্রীয় নেতারা দাবি করেছেন, এ রাজ্যে নাকি দুর্গাপুজো করতে দেওয়া হয় না। এবার সেই মোদি সরকাকেই লোকসভা ভোটের আগে বাঙালির মন জিততে দুর্গাপুজোয় আর্থিক অনুদানের পথে হাঁটতে হল। এ প্রসঙ্গে রাজ্যের শাসকদল তৃণমূলের নেতা অরূপ চক্রবর্তী বলেন, আমাদের দেখানো পথে বিজেপিকে হাঁটতে হবে। তবে কীসের ভিত্তিতে ৩৫টি ক্লাব বাছাই করেছেন তা জানি না। ওইসব ক্লাবগুলি শুভেন্দু অধিকারী নাকি সুকান্ত মজুমদার ঠিক করে দিয়েছেন তা দেখতে বলুন।” কীসের ভিত্তিতে ৩৫ ক্লাবকে বাছাই তা অবশ্য জানেন না রাজ্য বিজেপির মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্যও। তাঁর দাবি, “কেন্দ্র যখন ৩৫টি ক্লাবকে চিহ্নিত করেছেন তখন নিঃসন্দেহে কিছু গাইডলাইনস রয়েছে। কোনও উত্কর্ষতার উপরে ভর করেই দেওয়া হচ্ছে। কেন্দ্রীয় সরকার যেটা করছে সেটা নির্দিষ্ট আঙ্গিকে করছে।” তবে যেভাবে রাম আবেগের সঙ্গে বাঙালির দুর্গা আবেগকে মেশাতে চাইছে বিজেপি, তাতে এটা স্পষ্ট যে লোকসভার আগে ফের একবার বাংলায় ধর্মীয় আবেগকে হাতিয়ার করে ঝাঁপাতে চলেছে বিজেপি।