সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: সপ্তম দফা ভোটগ্রহণের ঠিক আগের দিন প্রধানমন্ত্রীর কেদারনাথ ভ্রমণের ছবি দেখেছিল গোটা দেশ। তার কিছুক্ষণ বাদেই চোখে পড়েছিল মূল মন্দিরের এক কিলোমিটার দূরে থাকা একটি গুহার মধ্যে পিঠে বালিশ দিয়ে তাঁর ধ্যানে বসার ছবি।কিন্তু কেউই জানতেন না যে ওই গুহাটি সাধারণ নয়৷ সাধারণভাবে সাধুসন্তরা যে ধরনের গুহায় ধ্যান করেন, মোদির গুহা ছিল তার থেকে একদম আলাদা।
শুধুমাত্র ধ্যানের জন্য পাথর কেটে তৈরি ওই প্রাকৃতিক গুহায় ছিল অ্যাটাচ শৌচালয়, ওয়াই-ফাই, জানলা, একটি টেলিফোন ও সিসিটিভি ক্যামেরা। এমনকী ৮ ফুট বাই ৯ ফুটের ওই গুহায় জামাকাপড় টাঙিয়ে রাখার জন্য হ্যাঙারের ব্যবস্থাও রাখা হয়েছিল। আর বাইরে প্রধানমন্ত্রীর সুরক্ষার জন্য মোতায়েন ছিলেন এসপিজি কমান্ডোরা। জানা গিয়েছিল, শনিবার বিকেল থেকে রবিবার সকাল পর্যন্ত ওই গুহাতে ধ্যান করবেন তিনি। কেউ কেউ ভেবেছিলেন তপস্যার জন্য কত কৃচ্ছসাধন করতে হয়৷ সেখানে দেশের ভাল-র জন্য একদিন না হয় গুহাতেই রাত কাটালেন প্রধানমন্ত্রী। কেউ কেউ চিন্তায় ছিলেন, পাহাড়ি ওই গুহায় রাত কাটাতে গিয়ে তাঁর যেন কোনও ক্ষতি না হয়। কিন্তু, মোদি যতক্ষণ সেখানে ছিলেন ততক্ষণ কোনও পুণ্যার্থীকে ঢুকতে দেওয়া হয়নি বলেও জানা গিয়েছে।
[আরও পড়ুন- ভোটের দিন কেদারনাথে ‘জনসংযোগ’ মোদির, কমিশনে নালিশ তৃণমূলের]
এপ্রসঙ্গে নেহেরু ইনস্টিটিউট অফ মাউন্টেনিয়ারিং(এনআইএম)-এর আধিকারিক জানান, প্রধানমন্ত্রী কেদারনাথে যাওয়ার অনেক আগেই ওই গুহাটিকে তাঁর বাসযোগ্য করে তোলা হয়েছিল। সমুদ্র থেকে ১২ হাজার ফুট উঁচুতে করা হয়েছিল পর্যাপ্ত বিদ্যুত এবং জলের ব্যবস্থাও। আর কয়েকমাস ধরে পাহাড় কেটে ওই গুহাটি বানানো হয়েছিল গত বছরই। তবে এতদিন তালাবন্ধ অবস্থাতেই ছিল। প্রধানমন্ত্রীর সফরে আসার কথা চূড়ান্ত হতেই সিসিটিভি ক্যামেরা ও গুহার বাইরে নিরাপত্তারক্ষীদের জন্য অস্থায়ী ক্যাম্পও তৈরি করা হয়।
[আরও পড়ুন- সাত রাজ্যের ৫৯ আসনে প্রধানমন্ত্রী-সহ একাধিক হেভিওয়েটের ভাগ্য নির্ধারণ]
স্থানীয় জেলা প্রশাসনের এক আধিকারিক বলেন, “ওই গুহায় একটি বিছানার পাশাপাশি ধ্যানের জন্য পর্যাপ্ত ফাঁকা জায়গাও রাখা হয়েছিল। ভিতরের জানালাটি এমনভাবে তৈরি করা হয়েছিল যাতে সেখান থেকে মন্দির দেখতে কোনও সমস্যা না হয় প্রধানমন্ত্রীর।”কেদারনাথ মন্দিরের এক পুরোহিত ভাগবত ভাগওয়ারি বলেন, “প্রধানমন্ত্রীর পরামর্শেই তৈরি করা হয়েছিল ওই গুহাটি। কারণ, তিনি চেয়েছিলেন কেদারনাথ মন্দিরের মতো এত পবিত্র ও সুন্দর পরিবেশে ধ্যান বসার কোনও জায়গা বানাতে। যাতে তীর্থযাত্রীরা চাইলেই এখানে ধ্যান করতে পারেন। এবার তিনি নিজেই সেখানে ধ্যান করে লক্ষ লক্ষ মানুষকে অনুপ্রাণিত করার চেষ্টা করলেন। আশা করি, তাঁর এই প্রচেষ্টা সফল হবে।”
স্থানীয় প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, মোদির পরামর্শে তৈরি করা এই গুহাটিতে একদিন কাটানোর জন্য আগে ৩ হাজার টাকা ধার্য করা হয়েছিল। তার মধ্যে ধরা ছিল সারাদিনের খাবারের দামও। কিন্তু, দুর্গম এই জায়গায় পর্যাপ্ত লোক না হওয়ায় পরে কমে তা ৯৯০ টাকা করা হয়। নিয়ম মেনে তিনদিন আগে প্রশাসনের কাছে আবেদন করলে পিঠে বালিশ দিয়ে ‘মডিফায়েড’ এই গুহায় ধ্যান করতে পারবেন আপনিও।
The post মোদির ধ্যানগুহায় ছিল সিসিটিভি-শৌচালয়,বাইরে পাহারায় এসপিজি appeared first on Sangbad Pratidin.