সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: বাবরি মসজিদ ধ্বংসের পরেই স্লোগান উঠেছিল, ‘ইয়ে সিরফ্ ঝাঁকি হ্যায়, কাশী-মথুরা বাকি হ্যায়’। অর্থাৎ এরপর কাশী ও মথুরায় মন্দির ভেঙে মসজিদ তৈরির যে অভিযোগ হিন্দু সংগঠনগুলি তুলেছিল, তারও এভাবেই নিষ্পত্তি করতে চায় তারা। সুপ্রিম কোর্ট অযোধ্যা মামলার রায় দেওয়ার পর তা নিয়ে নতুন করে জল্পনা শুরু হয়েছে। বিশেষত, যেগুলি বহুদিন ধরেই হিন্দু জনবসতির পাশে অবস্থিত, সেগুলি নিয়ে বিতর্ক চলছে বহুদিন ধরেই। কয়েকটি হিন্দু সংগঠনের ইঙ্গিত, এবার সেগুলি নিয়ে তারা সুর চড়াবে। তবে এ সবের মধ্যে রবিবার বিশ্ব হিন্দু পরিষদের তরফে আর্জি, মন্দির এবার দ্রুত নির্মিত হোক। আর তা হোক পুরাতত্ত্ববিদ চন্দ্রকান্ত সোমপুরার তৈরি নকশা অনুসরণ করে।
[আরও পড়ুন: সাতসকালে ভূস্বর্গে ফের গুলির লড়াই, খতম ২ জঙ্গি]
কিন্তু কেন্দ্রের শাসক দল বিজেপির আদর্শগত পথপ্রদর্শক রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘ বা আরএসএস স্পষ্ট করে দিয়েছে, বারাণসী-মথুরায় মসজিদ ভেঙে মন্দির নির্মাণের কোনও আন্দোলনে তাদের সায় নেই। সংঘ প্রধান মোহন ভাগবতের ইঙ্গিত, ‘কাশী-মথুরা বাকি হ্যায়’ স্লোগানে তাঁরা শরিক নন। এবং এই ধরনের কোনও আন্দোলন হলে তাতে সংঘ পরিবার যোগ দেবে না। আরও এই ধরনের সমস্ত বিতর্কের এবার অবসান চান ভাগবত।
এপ্রসঙ্গে সংঘ প্রধান বলেন, যিনি বা যাঁরা বারাণসী ও মথুরায় মসজিদের পরিবর্তে মন্দির তৈরির কথা বলছেন। আমরা তাঁদের সঙ্গে যোগ দেব না। সংঘের কাজ আন্দোলন করা নয়, এর কাজ কেবল মানুষের চরিত্র গঠন করা। কাশী বিশ্বনাথ মন্দিরের পাঁচিলের পাশেই অবস্থিত জ্ঞানবাপী মসজিদ। কয়েক শতকের পুরনো বিশ্বনাথ মন্দির বহুবার আক্রান্ত হয়েছে। শেষবার ১৬৬৯ সালে। বহু ঐতিহাসিক মনে করেন, মুঘল সম্রাট ঔরঙ্গজেব মন্দিরের একাংশ ভেঙে ওই মসজিদ তৈরি করেছিলেন। হিন্দুদের আর এক পবিত্র তীর্থ মথুরায় কৃষ্ণ জন্মভূমি মন্দিরের লাগোয়া শাহি ইদগা মসজিদ।
[আরও পড়ুন: প্রয়াত দেশের প্রাক্তন মুখ্য নির্বাচন কমিশনার টি এন শেষন]
বহু ঐতিহাসিকের ধারণা, ঔরঙ্গজেব এখানেও কেশবনাথ মন্দির ভেঙে ওই মসজিদ তৈরি করেছিলেন। অর্থাৎ, এই মসজিদগুলি নিয়ে হিন্দুত্ববাদী সংগঠনগুলি এবার পথে নামতে পারে বলে আশঙ্কা রয়েছে। কিন্তু, সংঘ প্রধান স্বয়ং এ ব্যাপারে নেতিবাচক মনোভাব ব্যক্ত করায় কিছুটা স্বস্তিতে মুসলিম সংগঠনগুলি।
তবে রবিবার ভিএইচপির তরফে কেন্দ্রের কাছে একটি আবেদন জানানো হয়েছে। আর তাতে বলা হয়েছে, কেন্দ্র দ্রুত অযোধ্যায় রামমন্দির তৈরির কাজ শুরু করুক। তা করতে গিয়ে তারা পুরাতত্ত্ববিদ রামচন্দ্র সোমপুরার তৈরি মন্দিরের নকশা মেনে চলুক। প্রসঙ্গত, ১৯৮৯ সালে পুরাতত্ত্ববিদ এবং প্রখ্যাত মন্দির স্থাপত্যবিদ চন্দ্রকান্ত সোমপুরাকে অযোধ্যায় প্রস্তাবিত মন্দিরের নকশা তৈরি করতে নির্দেশ দিয়েছিলেন সেসময়ের বিশ্ব হিন্দু পরিষদের সভাপতি অশোক সিংঘল। সেকথা মনে করিয়ে সংগঠনের কার্যকরী সভাপতি অলোক কুমার জানিয়েছেন, ‘‘আমরা চাই নতুন মন্দির সঠিকভাবে নির্মিত হোক।’’
The post ‘কাশী-মথুরা বাকি হ্যায়’ স্লোগান থেকে দূরত্ব বজায় রাখছেন সংঘ প্রধান ভাগবত appeared first on Sangbad Pratidin.