মোহনবাগান–২ গোয়া–১
(কামিন্স-পেনাল্টি, সাদিকু) (নোয়া)
সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: আরও একটা ডার্বি। আরও একটা হাইভোল্টেজ ম্যাচ। রবিবাসরীয় যুবভারতী দেখবে বাঙালির চিরআবেগের মোহনবাগান-ইস্টবেঙ্গল (Mohun Bagan vs East Bengal) ম্যাচ। বৃহস্পতিবার ডুরান্ড কাপের সেমিফাইনালে জুয়ান ফেরান্দোর মোহনবাগান (Mohun Bagan) ২-১ গোলে এফসি গোয়াকে মাটি ধরিয়ে পৌঁছে গেল ডুরান্ড কাপের ফাইনালে। ফলে ডুরান্ড ফাইনাল দেখবে দুই স্প্যানিশ কোচের ডুয়েল। ফুটবলপ্রেমীরা চেটেপুটে তার স্বাদ নেবে।
দিনের শুরু দেখে সব সময়ে দিনবিচার করা যায় না। বৃহস্পতিবারের সেমিফাইনালে যেভাবে শুরু করেছিল গোয়া, খেলা যত গড়াতে থাকল ততই ফ্যাকাসে দেখাল গোয়াকে। হারিয়ে গেল গোয়ার পাসিং ফুটবল। পিছিয়ে পড়ে দুরন্ত প্রত্যাবর্তন ঘটাল মোহনবাগান। বিশ্বকাপার জেসন কামিন্স প্রথমে সমতা ফেরালেন। তার পরে আর্মান্দো সাদিক কামান দাগলেন ডান পায়ে। সবুজ-মেরুনের গোলে বিশাল কাইথ ‘বিশাল’ হয়ে উঠলেন। একাধিক বার দলকে বিপন্মুক্ত করলেন। দিনের শেষে গ্যালারিতে শোনা গেল গান। উড়ল আবির।
[আরও পড়ুন: পুত্র সন্তানের বাবা হলেন ‘ক্যাপ্টেন ফ্যান্টাস্টিক’, সোনমের কোল আলো করে এল জুনিয়র ছেত্রী!]
খেলার ২৩ মিনিটে এফসি গোয়া গোল করে প্রথমে এগিয়ে গিয়েছিল। মাঝমাঠে হুগো বুমো বড় সড় ভুল করে বসেন। অন্যান্য দিনের তুলনায় এদিন তাঁকে বিবর্ণই দেখিয়েছে। তাঁর ভুল পাস ধরে দৌড় শুরু করেন এফসি গোয়ার নোয়া। বিপদের গন্ধ তখন মোহনবাগানের রক্ষণে। বিপদের গন্ধ পেয়ে অনিরুদ্ধ থাপা, আনোয়ার আলি, হেক্টর মরিয়া হয়ে ওঠেন। কিন্তু ততক্ষণে নোয়া পৌঁছে যান বিপজ্জনক জায়গায়। তার পরেই গড়ানে শট নেন মোহনবাগানের গোল লক্ষ্য করে। বিশাল কাইথের নাগাল এগিয়ে নোয়ার শট জড়িয়ে যায় মোহনবাগানের জালে। এফসি গোয়া এগিয়ে যায় ১-০ গোলে।
পিছিয়ে পড়ার পরই খেলায় ফেরার মরিয়া চেষ্টা করে মোহনবাগান। তাদেরকে আরও সংঘবদ্ধ দেখায়। এফসি গোয়ার উপরে চাপ বাড়াতে থাকে সবুজ-মেরুন শিবির। ৩৯ মিনিটে সমতা ফেরায় মোহনবাগান। জয় গুপ্তা বিশ্রী ভাবে ফাউল করে বসেন কে আশিককে। রেফারি প্রথমে দ্বিধাদ্বন্দ্বে ভুগলেও লাইন্সম্যানের সঙ্গে আলোচনা করে পেনাল্টি দেন। পেনাল্টি স্পট থেকে গোললাইন পৃথিবীর রহস্যময় সরণী। এই সরণীতে পথ হারিয়েছেন কত তারকা তার ইয়ত্তা নেই। বিশ্বকাপ খেলার অভিজ্ঞতা সম্পন্ন জেসন কামিন্স মাথা ঠাণ্ডা রেখে পেনাল্টি থেকে সমতা ফেরান। গোয়ার গোলকিপার ধীরজ সিংকে অন্য দিকে ফেলে দিয়ে গোল করেন কামিন্স। যদিও এদিন কামিন্স তাঁর সেরা ছন্দে পৌঁছননি। এই ম্যাচের আগেই তিনি ঘোষণা করেছিলেন তাঁরাই ভারতসেরা দল। যে কোনও দলকে হারানোর ক্ষমতা রাখেন। তিনি সমতা ফেরালেন। বাকিটা সারলেন আর্মান্দো সাদিকু।
দ্বিতীয়ার্ধে পরিবর্ত হিসেবে নামা সাদিকুর ম্যাজিক গোল। সন্দেশকে মাটি ধরিয়ে দূরপাল্লার শট নেন তিনি। ধীরজ সিং শরীর ছুঁড়েও বলের নাগাল পাননি। ৬৮ মিনিটে মোহনবাগান এগিয়ে যায় ২-১ গোলে। গোয়া মরিয়া চেষ্টা করেছিল ম্যাচে ফেরার। কিন্তু তাদের আক্রমণ পথ হারায়। বরং বলা ভাল মোহনবাগানের রক্ষণ দাঁত কামড়ে গোয়ার মরিয়া প্রচেষ্টা ব্যর্থ করে। গোলে দুরন্ত হয়ে ওঠেন বিশাল কাইথ। জয় গুপ্তা প্রায়শ্চিত্ত করার চেষ্টা করেছিলেন। তাঁর বিষাক্ত ছোবল বাঁচান বিশাল কাইথ। শেষের কয়েকমিনিট মোহনবাগান ঝড়ঝঞ্ঝা সামলে দিয়ে ফাইনালে পৌঁছে যায়।