সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ঠিক ১৯ বছর আগে এমনই এক ডুরান্ড ফাইনালে দ্বিতীয়ার্ধের ইনজুরি টাইম পর্যন্ত নার্ভ ধরে রাখতে হয়েছিল ফুটবল সমর্থকদের। চন্দন দাসের গোলে ম্যাচের ফল নির্ধারিত হয়। ডুরান্ড কাপ আসে ইস্টবেঙ্গলের ঘরে। স্বপ্নভঙ্গ হয় মোহনবাগানের। ১৯ বছর পর কি সেই ইতিহাসের পুনরাবৃত্তি ঘটবে নাকি এবার ডুরান্ডের রং বদলে দেবে মোহনাবাগান? গত বৃহস্পতিবার সন্ধে থেকে চায়ের ঠেকে কিংবা ট্রেনে-বাসে সেটাই ছিল বাঙালির হট টপিক। অবশেষে মিলল উত্তর। জুয়ান ফেরান্দোর হাত ধরে আরও একটা ট্রফি জয়ের ইতিহাস রচনা করল গঙ্গাপারের ক্লাব।
ইস্ট-মোহন ডার্বি মানেই অ্যাড্রিনালিনের বন্যা। আর রবিবাসরীয় যুবভারতীতে যে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হল, তাতে উত্তেজনা ধরে রাখাই ছিল কঠিন। গত ডার্বিতে মোহনবাগানকে মাটি ধরানোয় আত্মবিশ্বাসে টগবগ করছিলেন লাল-হলুদ সমর্থকরা। কিন্তু মোহনবাগান হুঙ্কার দিয়ে রেখেছিল, ‘এই মাঠেই বদলা নেব’। তাছাড়া শুধু তো ডার্বি জেতাই নয়, ঐতিহ্যের ডুরান্ড জয়ের হাতছানিও ছিল দুই দলের সামনে। সেই শেষবার ২০০০ সালে ডুরান্ড কাপ জিতেছিল সবুজ-মেরুন ব্রিগেড। তারপর গঙ্গা দিয়ে অনেক জল বয়ে গিয়েছে। কিন্তু ট্রফি আসেনি। অবশেষে সে এল। লাখো সমর্থকের প্রার্থনা, ফুটবলারদের প্রতিশোধের তাগিদ আর কোচের অ্যাটাকিং ফুটবলের স্ট্র্যাটেজিতেই হল বাজিমাত। আধ ঘণ্টারও বেশি সময় দশ জনে খেলেও যে প্রতিপক্ষকে আটকে দেওয়া যায়, সেটাই বুঝিয়ে দিলেন হুগো বুমোস, পেত্রাতোসরা। আর পাল তোলা নৌকা পত পত করে ওড়ার দিনই লড়াই করেও নিভল মশাল।
[আরও পড়ুন: উপনির্বাচনের আগে ধূপগুড়ি মহকুমা ঘোষণার আশ্বাস, অভিষেককে নিয়ে কমিশনে নালিশ BJP-র]
২০১৬ সালে বোরদলই ট্রফির ফাইনালে পৌঁছেছিল ইস্টবেঙ্গল। কিন্তু ট্রফি হাতছাড়া হয় সেবার। এরপর ২০১৭ সালে কলকাতা লিগ চ্যাম্পিয়ন হয় তারা। পরের বছর জিটিএ চেয়ারম্যান্স গোল্ড কাপ ঘরে তোলে লাল-হলুদ। কিন্তু দীর্ঘদিন বড় ট্রফি জয়ের আক্ষেপ ঘোচাতে পারেনি দল। আই লিগ থেকে আইএসএল, বারবার হতাশাই জুটেছে। এবার কার্লেস কুয়াদ্রাত দায়িত্ব নিয়েই দলের মধ্যে আত্মবিশ্বাসের ইঞ্জেকশন দিয়ে দিয়েছিলেন। যার ফলস্বরূপ সাড়ে চার বছর পর ডার্বি জয়ের স্বাদ পায় লাল-হলুদ। তাই ট্রফি জয়ের স্বপ্নে বুঁদ হয়ে গিয়েছিলেন সমর্থকরা।
কিন্তু চিরপ্রতিদ্বন্দ্বীরা শেষ হাসি হাসতে দিল কই! আবেগ আর উচ্ছ্বাসের বন্যায় ভাসল গতবারের আইএসএল চ্যাম্পিয়নরাই। আরও একবার স্বপ্নভঙ্গের যন্ত্রণা বুকে নিয়েই সজল নয়নে মাঠ ছাড়লেন লাল-হলুদ সমর্থকরা।