সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়, দুর্গাপুর: শুভেন্দু অধিকারী (Subhendu Adhikary) মন্ত্রিত্ব ত্যাগ করেছেন সদ্য। এখনও তাঁর দলবদলের জল্পনা জিইয়ে রেখেছেন। এই পরিস্থিতিতে ঘাসফুল শিবিরের অন্দরে ক্রমশ বাড়ছে বেসুরোদের ভিড়। এবার সেই তালিকায় নাম লেখালেন বর্ধমান পূর্বের সাংসদ সুনীল মণ্ডল। গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব থাকার কথা স্বীকার করে তৃণমূলের অন্দরে বাড়ালেন অস্বস্তি।
শুভেন্দু অধিকারী ও বর্ধমান পূর্বের সাংসদ সুনীল মণ্ডলের (Sunil Mandal) ছবি দিয়ে ব্যানার দেখা যাচ্ছে দুর্গাপুরে। মঙ্গলবার সকালে দুর্গাপুরের ২৭ নম্বর ওয়ার্ডের বিধাননগরের বিভিন্ন জায়গায় সুনীল মণ্ডল ও শুভেন্দু অধিকারীর এই ব্যানার দেখা যায়। নয়া এই ব্যানার দেখে প্রবল চাঞ্চল্য দুর্গাপুরে। এর আগে শুভেন্দু অনুগামীদের ‘দাদা’ কে নিয়ে পোস্টারে ছেয়ে গিয়েছিল শহর। এবার সেই তুলনায় কম হলেও শুভেন্দুর দোসর ‘গোদের উপর বিষফোঁড়া’র মতো হাজির সাংসদ সুনীল মণ্ডল। ব্যানারে লেখা ‘সুনীলদা আমরা শুভেন্দুদার সঙ্গে তোমাকেও চাই’। আর এই ব্যানার নিয়েই পালটা দলেরই তুমুল সমালোচনা করেন সাংসদ সুনীল মণ্ডল।
[আরও পড়ুন: ‘কুৎসা রটাতে নিজেরাই দলীয় কর্মীদের হত্যা করছে’, উলেন রায় মৃত্যু প্রসঙ্গে বিজেপিকে কটাক্ষ মুখ্যমন্ত্রীর]
‘বেসুরো’ সাংসদ বলেন, “পোস্টার লিখতে কাকে বারণ করব? এগুলো মানুষের ক্ষোভের প্রকাশ। যে যাকে ভালবাসে তার নামেই পোস্টার পড়ছে। দলে গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব রয়েছে। দলের এটা দেখা উচিত। নেতাদেরই মাথাব্যথা বেশি হওয়া উচিত। সবাইকে নিয়ে লড়তে হবে।” দলের পরিকাঠামোগত সমস্যার জন্যেও ক্ষোভ বাড়ছে বলে জানান বর্ধমান পূর্বের সাংসদ সুনীল মণ্ডল। এরপরই তিনি দলের বিরুদ্ধে বিস্ফোরক মন্তব্য করে বলেন, “দলটাতে তাড়াতাড়ি ভাঙন ধরবে। গুরুত্ব দিয়ে না দেখলে বিপদ বাড়বে।”
দলে যে ফাটল ধরেছে সেকথা আগে অনেকের মুখেই শোনা গিয়েছে। কোচবিহার দক্ষিণের বিধায়ক মিহির গোস্বামী বহুদিন ধরে তৃণমূল নেতৃত্বের বিরুদ্ধে সোশ্যাল মিডিয়ায় মুখ খুলেছিলেন। শেষ পর্যন্ত যদিও তিনি দলবদল করেন। নাম লেখান গেরুয়া শিবিরে। জটু লাহিড়ী, শীলভদ্র দত্ত, রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়-সহ অনেকেই দলের বিরুদ্ধেই চড়িয়েছেন ক্ষোভের সুর। অরূপ রায় আবার সুর চড়িয়েছেন বনমন্ত্রী রাজীবের বিরুদ্ধে। তাই এখান থেকেও দলীয় কোন্দলের বিষয়টি কিছুটা স্পষ্ট। এই প্রেক্ষাপটে ফের সুনীল মণ্ডলের বিস্ফোরক মন্তব্যে স্বাভাবিকভাবে ঘাসফুলের অন্দরে যে নতুন করে চাপ তৈরি হল তা বলাই যায়। এদিকে, খুনের চক্রান্তের অভিযোগ তুলে শুভেন্দু অধিকারীর নিরাপত্তার দাবিতে রাজ্যপালের কাছে যাচ্ছেন তাঁর অনুগামীদের একাংশ।