বিপ্লবচন্দ্র দত্ত, কৃষ্ণনগর: সত্যজিৎ বিশ্বাস খুনে দ্বিতীয় সাপ্লিমেন্টারি চার্জশিট পেশ করল সিআইডি। তাতেই মূল ষড়যন্ত্রকারী হিসাবে নাম রয়েছে মুকুল রায়ের। তাঁকে ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩০২ এবং ১২০ বি ধারায় অভিযুক্ত করা হয়েছে। সরকারি আইনজীবী প্রদীপকুমার প্রামাণিক জানিয়েছেন, সাপ্লিমেন্টারি চার্জশিটে সন্দেহভাজন ছিলেন মুকুল রায়। তদন্ত চলছিল। সেই তদন্তের ভিত্তিতেই মুকুল রায়ের (Mukul Roy) নাম দ্বিতীয় সাপ্লিমেন্টারি চার্জশিটে রাখা হয়েছে। যদিও মুকুল রায়ের আইনজীবীর দাবি, ষড়যন্ত্র চলছে। মিথ্যা অভিযোগে ফাঁসানো হয়েছে তাঁকে।
গত বছরের ৯ ফেব্রুয়ারি, সরস্বতী পুজোর উদ্বোধনে গিয়ে হাঁসখালি থানার ফুলবাড়িতে খুন হন কৃষ্ণগঞ্জের বিধায়ক (TMC MLA) তথা যুব তৃণমূল নেতা সত্যজিৎ বিশ্বাস (Satyajit Biswas)। পয়েন্ট ব্ল্যাংক রেঞ্জ থেকে তাঁকে গুলি করা হয়। তদন্তে নেমে পুলিশ অভিজিৎ পুণ্ডারি নামে স্থানীয় এক যুবককে গ্রেপ্তার করে। পরবর্তী সময়ে বিধায়ক খুনের দায়িত্বভার সিআইডি’র হাতে তুলে দেয় রাজ্য সরকার। এরপরই তদন্তে নেমে মূল অভিযুক্ত অভিজিৎ পুণ্ডারি, নির্মল ঘোষ, সুদীপ মণ্ডলকে গ্রেপ্তার করেন তদন্তকারীরা। জানা যায়, ধৃতরা প্রত্যেকেই বিজেপির সক্রিয় কর্মী। যদিও ধৃতদের নিজেদের দলের কর্মী বলে মানতে নারাজ জেলা বিজেপি নেতৃত্ব। তদন্ত এগোতে গিয়ে তদন্তকারীদের স্ক্যানারে আসেন জেলা বিজেপি সভাপতি জগন্নাথ সরকার (Jagannath Sarkar)। এফআইআরে তাঁর নাম ছিল। তাঁকেও জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করেন সিআইডি আধিকারিকরা। তৃণমূল বারবারই তাঁর দিকে অভিযোগের আঙুল তুলেছে।
[আরও পড়ুন: ‘জানুয়ারি থেকেই বাংলাদেশি শরণার্থীদের দেওয়া হবে নাগরিকত্ব’, ভোটের মুখে ঘোষণা কৈলাসের]
ততদিনে লোকসভা ভোটে প্রয়াত বিধায়ক সত্যজিৎ বিশ্বাসের স্ত্রী, তৃণমূল প্রার্থীকে হারিয়ে রানাঘাটের সাংসদ (MP) হয়েছেন জগন্নাথ সরকার। একাধিকবার সিআইডি’র তলবে তিনি ভবানীভবনে গিয়ে জেরার মুখোমুখি হয়েছেন। প্রতিবারই জগন্নাথ সরকারের বক্তব্য ছিল, তদন্তে সহযোগিতা করতে এসেছেন তিনি। ঘটনার দেড় বছরেরও বেশি সময় পর রানাঘাট মহকুমা আদালতে সাপ্লিমেন্টারি চার্জশিট পেশ করে সিআইডি। দেখা যায়, তাতে নাম রয়েছে সাংসদ জগন্নাথ সরকারের। আর এবার দ্বিতীয় সাপ্লিমেন্টারি চার্জশিটে নাম রয়েছে মুকুল রায়। যদিও এটিকে চক্রান্ত বলেই দাবি করেছেন মুকুল রায়। বিজেপি নেতাকে সিআইডি ফাঁসানোর চেষ্টা করছে বলেই অভিযোগ সাংসদ সৌমিত্র খাঁর (Saumitra Khan)।