সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: “সবজির মূল্যবৃদ্ধির জন্য দায়ী মুসলিমরা।” –বেফাঁস মন্তব্য করে বিতর্কে জড়ালেন বিজেপি (BJP) শাসিত অসমের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মা (Himanta Biswa Sarma)। তাঁর এই মন্তব্যের তীব্র বিরোধিতা করেছেন এআইএমআইএম সাংসদ আসাদুদ্দিন ওয়াইসি (Asaduddin Owaisi)।
গত কয়েক সপ্তাহ ধরেই রাজ্যে আনাজ-সবজির দাম আকাশছোঁয়া। এর জন্য সাধারণ মানুষ রাজ্যের ‘ডবল ইঞ্জিন’ সরকারকেই দায়ী করছে। মুখে দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণের কথা বললেও ব্যর্থতা ঢাকতে পারছেন না মুখ্যমন্ত্রী বিশ্বশর্মা। তার মাঝেই মুখ্যমন্ত্রীর সাফাই, “যে সমস্ত বিক্রেতারা সবজির দর বাড়াচ্ছে এবং তাদের বেশিরভাগই মিঞা মুসলিম।” তিনি আরও বলেন, “ফ্লাইওভারের নিচের বাজারটি খালি করা হবে। এখানে মুসলিম সম্প্রদায়ের প্রচুর শাক-সবজি-ফলের দোকান রয়েছে।”
[আরও পড়ুন: বিরোধী জোট-ভয়ে তৎপরতা এনডিএ-তে, শরিকদের নিয়ে বৈঠকে মোদি-নাড্ডা]
শনিবার সবজির মূল্যবৃদ্ধি নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে বিশ্বশর্মা বলেন, “যারা সবজির দাম বাড়িয়েছে তারা কারা? তারা মুসলিম ব্যবসায়ী, যারা বেশি দামে সবজি বিক্রি করছেন। গুয়াহাটিতে ঈদের সময় যানবাহনের সমস্যা দেখা দেয় কেন? কারণ বাস-ক্যাবের অধিকাংশ চালকই মিঞা মুসলিম।” অসমে বাঙালি মুসলিমদের সাধারণত ‘মিঞা’ বলা হয়। এই প্রথম নয়, এর আগেও বিশ্বশর্মা একাধিক ইস্যুতে ‘মিঞা মুসলিম’কে নিশানা করেছেন। গত বছর তিনি একটি ‘মুসলিম মিউজিয়াম’ বন্ধ করে দিয়েছিলেন। তখন তিনি বলেছিলেন, মিঞা জাদুঘরে ‘লুঙ্গি’ ছাড়া কিছুই নেই। আবার মূল্যবৃদ্ধি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “এই মুসলিম ব্যবসায়ীরা অসমের জনগণের কাছ থেকে বেশি দাম নেয়, গ্রামে গ্রামে কম দামে সবজি পাওয়া যাচ্ছে। ব্যবসায়ীরা অসমিয়া হলে অসমের মানুষকে বেশি দামে সবজি কিনতে হত না। তিনি অসমের যুবকদের কাছে সবজি বিক্রি, বাস-ক্যাব চালানোর মতো কাজে সক্রিয়ভাবে অংশ নেওয়ার আবেদন করেছেন।”
[আরও পড়ুন: বর্ষায় বিচ্ছিন্ন দ্বীপ, জল পেরিয়ে স্কুল যেতে পড়ুয়াদের জন্য বিনামূল্যে নৌ পরিষেবা সরকারের]
মুখ্যমন্ত্রীর মন্তব্যের কঠোর প্রতিবাদ করে আসাদুদ্দিন ওয়াইসি বলেন, “এই দেশে এমন একটি দল ক্ষমতায় রয়েছে, তারা যদি তাদের মহিষ দুধ দিচ্ছে না অথবা মুরগি ডিম দিচ্ছে না তাহলেও তারা মুসলমানদের দায়ী করবে। তারা তাদের সকল ব্যর্থতার জন্যই মুসলিম সমাজকে দায়ী করবে।” এআইইউডিএফ সাংসদ বদরুদ্দিন আজমল বলেন, “মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন যে মুসলিমদের গুয়াহাটিতে শাকসবজি এবং মশলা বিক্রি করতে দেওয়া হবে না। তিনি রাজ্যের প্রধান। তার মুখে এই ধরনের কথা শোভা পায় না। তিনি মুসলিম ও অসমিয়াদের মধ্যে বিভাজনের রাজনীতি করছেন। এরপর কোনও অঘটন ঘটলে তার জন্য মুখ্যমন্ত্রী দায়ী থাকবেন।”