সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: লাক্ষাদ্বীপের নিরাপত্তায় এবার ‘জটায়ু’! মিনিকয় দ্বীপে আইএনএস জটায়ু নামে নতুন ঘাঁটি নির্মাণ করল ভারতীয় নৌসেনা। শত্রু দমনে ভারত মহাসাগরে নজরদারি আরও জোরদার করতে এই ঘাঁটি তৈরি করা হয়েছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, নিরাপত্তার স্বার্থে সমুদ্রে চিনের গতিবিধির উপর নজর রাখতেই এই পদক্ষেপ করেছে নয়াদিল্লি। কারণ গত কয়েকমাস ধরে ভারত মহাসগরীয় অঞ্চলে কার্যকলাপ বাড়িয়েছে লালফৌজ।
বুধবার লাক্ষাদ্বীপের মিনিকয়তে নতুন নৌসেনা ঘাঁটির উদ্বোধন করা হয়। এনিয়ে নৌসেনা প্রধান আর হরিকুমার জানিয়েছেন, “রামায়ণে জটায়ুই প্রথম সীতাকে বাঁচাতে এগিয়ে গিয়েছিলেন। তিনি তাঁর জীবনের পরোয়া করেননি। তাঁর এই নিঃস্বার্থ আত্মত্যাগের জন্য ঘাঁটিটির নামকরণ করা হয়েছে জটায়ু। যা নিরাপত্তা, নজরদারি এবং নিঃস্বার্থ সেবা প্রদানের প্রতীক।” তিনি আরও বলেন, “ভারত মহাসাগর বহু সন্ত্রাস, অপরাধ ও জলদস্যুদের আক্রমণের সাক্ষী থেকেছে। ভারতীয় নৌসেনা সব সময় সমস্ত অপরাধের কড়া জবাব দিয়েছে। আরব সাগরে ড্রোন, মিসাইল হামলা ও জলদস্যুদের বিরুদ্ধে অভিযান চালাচ্ছে নৌসেনার রণতরী। বাণিজ্যপথের নিরাপত্তায় সর্বদা নজর রেখেছে।”
[আরও পড়ুন: হাউথিদের হামলায় রক্তাক্ত এডেন উপসাগর, মৃত ৩, উদ্ধারে ভারতীয় রণতরী]
এদিনের অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন নৌসেনা প্রধান আর হরিকুমার, লাক্ষাদ্বীপের প্রশাসক প্রফুল্ল প্যাটেল। সাউদার্ন নেভাল কমান্ডের প্রধান ভাইস অ্যাডমিরাল ভি শ্রীনিবাস এবং ওয়েস্টটার্ন নৌ কমান্ডের প্রধান ভাইস অ্যাডমিরাল সঞ্জয় জে সিং-সহ অন্যান্য উচ্চপদস্থ আধিকারিকরা। এর আগে লাক্ষাদ্বীপের কাভারাত্তিতে তৈরি করা হয়েছিল নৌসেনা ঘাঁটি আইএনএস দ্বীপরক্ষক। আইএনএস জটায়ু দ্বীপপুঞ্জটিতে নির্মিত দ্বিতীয় নৌসেনা ঘাঁটি। এটি পরিচালনা করবেন কমান্ডার ব্রত বাঘেল।
বলে রাখা ভালো, ভারত মহাসাগরে চোখ রাঙাচ্ছে চিন। কয়েকদিন আগেই ভারতের উদ্বেগ বাড়িয়ে মালদ্বীপে প্রবেশ করেছে চিনা ‘নজরদারি’ জাহাজ শিয়াং ইয়াং হং-৩। ভারত মহাসাগরে গবেষণার নামে ‘গুপ্তচর’ মোতায়েন করছে বেজিং বলে একাধিকবার অভিযোগ করেছে নয়াদিল্লি। এর আগে শ্রীলঙ্কাতেও নোঙর করতে চেয়েছিল কমিউনিস্ট দেশটির জাহাজ। কিন্তু ভারতের অনুরোধে সেটিকে হাম্বানটোটা বন্দরে ভিড়তে দেয়নি কলম্বো। সাগরে লালফৌজের গতিবিধি এখন মাথাব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে দিল্লির। বিশ্লেষকদের মতে, চিনের গতিবিধি নজরে রেখেই এই ঘাঁটি তৈরি করা হয়েছে। কোনওরকম বেগতিক বুঝলে দ্রুত এই ঘাঁটি থেকে ‘শত্রু’কে কড়া জবাব দেবেন জওয়ানরা।