সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: মায়ের মধ্যেই তো এক অবয়বে একাধিক রূপ দেখতে পায় সন্তানরা। তিনিই যেন সাক্ষাৎ দশভুজা। বড় হওয়ার প্রতি ধাপে মা-কে নতুন করে আবিষ্কার করেন একজন সন্তান। সে তিনি সাধারণ মানুষই হোক কিংবা সেলিব্রিটি। নানা স্তরে নানা উপলব্ধিই শেষপর্যন্ত মায়ের প্রতি অটুট শ্রদ্ধা, ভালবাসা বজায় রাখে। আর সেই মায়ের প্রয়াণে সন্তানের মানসপটে ভেসে ওঠে সেসব ছবি। শুক্রবার ভোররাতে প্রয়াত হয়েছেন প্রধানমন্ত্রী মোদির মা শতায়ু হীরাবেন। আর জীবনের এই আকস্মিক ঘটনার অভিঘাত কাটিয়ে মায়ের জীবনের স্মৃতিচারণা করলেন প্রধানমন্ত্রী মোদি (PM Modi)। কীভাবে ছোট থেকে তিনি নিজের মাকে দেখেছেন, সেকথা প্রকাশ করলেন।
চলতি বছরের জুনে ১০০ বছরে পা রেখেছিলেন হীরাবেন মোদি (Heeraben Modi)। সেসময় একটি ব্লগ লিখেছিলেন প্রধানমন্ত্রী। তাতেই তিনি লেখেন, ”মা সাধারণের চেয়েও সাধারণভাবে থাকতেন। আমি তাঁকে কখনও সোনার গয়না পরতে দেখিনি। সেসবের প্রতি তাঁর কোনও আগ্রহও ছিল না। সারল্য এবং দয়ার মানসিকতায় রীতিমতো স্তম্ভ ছিলেন তিনি।” মোদি এও লিখেছেন, ”মা শুধু একটা শব্দ নয়। এটা অনেক অনুভূতি, আবেগের সংমিশ্রণ, যা ভাষায় প্রকাশ করা যায় না।”
[আরও পড়ুন: বন্দে ভারতের সূচনায় মুখ্যমন্ত্রীকে ‘জয় শ্রীরাম’ স্লোগান বিজেপি কর্মীদের, মঞ্চেই উঠলেন না মমতা]
শুধু তাই নয়। হীরাবেনের নিজের ছোটবেলা সম্পর্কেও নিজের ব্লগে (Blog) লিখেছিলেন প্রধানমন্ত্রী। লিখেছিলেন, তাঁর মায়ের শৈশব ছিল না সেভাবে। মা-বাবাকে হারিয়ে খুব দ্রুত তাঁকে বড় হয়ে যেতে হয়েছিল। বড় মেয়ে হওয়ায় ছোটবেলায় সংসারের দায়িত্বভার তাঁর কাঁধে এসে পড়ে। কিন্তু সেসব সামলে খুব ভালভাবেই তিনি সবদিক যত্ন নিয়েছেন। নিজের এই কষ্টকর, সংগ্রামী জীবনের প্রভাব পড়তে দেননি সন্তানদের উপর। বরং তাঁরা যাতে সুন্দর মানুষ হয়, সেদিকে বরাবর নজর ছিল।
[আরও পড়ুন: ফের গ্রেপ্তার তৃণমূলের জাতীয় মুখপাত্র সাকেত গোখলে, এবার টাকা তছরূপের অভিযোগ]
ষষ্ঠ সন্তান অর্থাৎ নরেন্দ্র মোদির সাফল্য নিয়ে মা হীরাবেন আত্মবিশ্বাসী ছিলেন। ব্লগে এমনই লিখেছিলেন মোদি। ছোটবেলার স্মৃতিচারণা করতে গিয়ে তাঁর মনে হয়েছে, “আমাদের ঘর ছোট ছিল, দারিদ্র্য ছিল। কিন্তু মা-বাবার হৃদয় অনেক বড় ছিল। তাঁদের সবচেয়ে বড় সম্পদ ছিল সততা। সেই পথ থেকে তাঁরা কখনও সরে আসেননি। কঠোর পরিশ্রম, সততাতেই ভরসা রেখেছিলেন তাঁরা।” এমনকী ছেলে প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পরও হীরাবেন নিজের সাধারণ জীবন ছেড়ে এতটুকুও আরাম কিংবা বিলাসিতার মধ্যে নিজেকে ঠেলে দেননি। আর সেটাই তাঁর সবচেয়ে বড় বিশেষত্ব।