কলহার মুখোপাধ্যায়, বিধাননগর: পান-গুটকা-খৈনির নেশা চলবে না। যেখানে সেখানে থুতু ফেলতে দেখলে পত্রপাঠ বিদায়। আবাসনের ভিতর খোশগল্পের আসর বসানো নিষেধ। স্বাস্থ্যবিধি মেনে স্যানটাইজ করা হবে আবাসন। দিনে দু’বার করে থার্মাল গান দিয়ে মাপা হবে দেহের তাপমাত্রা।
করোনা আবহে পরিচারিকা, গাড়ি চালকদের ক্ষেত্রে একগুচ্ছ নির্দেশিকা জারি করে তবে তাঁদের প্রবেশে ছাড়পত্র দিল বিধাননগরের অভিজাত আবাসনগুলি। সেসব বিধিনিষেধ মেনে পয়লা জুন থেকে কাজে যোগ দেওয়া শুরু করলেন কয়েক হাজার পরিচারিকা ও গাড়িচালক। টানা প্রায় ৭০ দিন কর্মহীন জীবন কাটানোর পর গেরস্থালির কাজকর্ম, শুশ্রূষার কাজে যোগ দিলেন তাঁরা।
[আরও পড়ুন: করোনার থাবায় বাবা-ছেলের সাক্ষাতে ছেদ, মুশকিল আসান করল হাই কোর্ট]
নিউটাউন রেসিডেন্স ওয়েলফেয়ার ফোরামের যুগ্ম আহ্বায়ক সমীর গুপ্ত জানিয়েছেন, “পুলিশ ও নিউটাউন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে পরিচারিকা ও গাড়ি চালকদের জন্য দরজা পুনরায় খুলে দেওয়া হলো। কিন্তু কোথাও কোনও নিয়মভঙ্গের ঘটনা যাতে না ঘটে, তার জন্য প্রতিটি আবাসনকে সতর্কতামূলক পদক্ষেপ করতে বলা হয়েছে। থার্মাল গান দিয়ে পরীক্ষা বাধ্যতামূলক। তবে পরিচারিকাদের প্রবেশ নিয়ে বাকি সিদ্ধান্ত নেবে আবাসন কমিটি।”
নিউটাউন বাসস্ট্যান্ডের কাছে ‘উৎসা লাক্সারি কমপ্লেক্স’। তেরো তলা উঁচু চারটি টাওয়ারে রয়েছে ২৩৮ ফ্ল্যাট। সেই আবাসনের সভাপতি ডাক্তার কল্লোল দাস জানিয়েছেন, “পান,গুটকা, খৈনি খাওয়ায় এবং থুতু ফেলায় নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। সকাল সাতটা থেকে বিকেল চারটে পর্যন্ত পরিচারিকাদের আসার সময়। ওই সময়ে প্রতিটি বাড়ি ৪ থেকে ৬ বার করে জীবাণুমুক্ত করা হচ্ছে। সঙ্গে অন্যান্য সতর্কতামূলক ব্যবস্থা বলবৎ করেছে আবাসন কর্তৃপক্ষ।” সল্টলেকের সৌরভ আবাসনের সভাপতি অশোক ভদ্র জানিয়েছেন, “মাস্ক না পরে এলে ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না । প্রবেশ পথে বেসিন লাগানো হয়েছে। সেখানে সাবান-স্যানিটাইজার বিনামূল্যে ব্যবহার করছেন পরিচারিকারা।”
নিউটাউনের ‘সংকল্প ফোর’ আবাসনে রয়েছে ১৫০ টি ফ্ল্যাট। সেখানে পরিচারিকাদের দু’বার থার্মাল গান দিয়ে শরীরের তাপমাত্রা মাপা হচ্ছে। তারপর প্রবেশে ছাড়পত্র মিলছে। আবাসনের সভাপতি সৌমেন দাস জানিয়েছেন, “প্রতি ঘন্টায় প্রবেশপথ স্যানিটাইজ করছেন কর্মীরা”। ‘হাইল্যান্ড উডস’এর কর্মকর্তা সায়ন্তন দাস বলছেন, “কনটেন্টমেন্ট জোন বাদে বাকি ফ্ল্যাটের জন্য ছাড়পত্র দেওয়া হয়েছে। প্রবেশপথে পরিচারিকাদের জীবাণুমুক্ত করা হচ্ছে আবাসনের পক্ষ থেকে।”
[আরও পড়ুন: বাথরুমে যাওয়া নিয়ে গোলমাল, প্রতিবেশীদের পিটুনিতে খুন যুবক]
এই পদ্ধতিতে খুশি পরিচারিকারাও। রেকজোয়ানীর অনিমা হালদার আসেন নিউটাউনে কাজ করতে। তিনি জানিয়েছেন, “লকডাউনে মাইনে অনিয়মিত ছিল। কাজে যেতে পারায় এখন নিশ্চিন্ত লাগছে।” আবাসনের ব্যবস্থাপনায় তিনি নিরাপত্তাবোধ করছেন বলেও জানিয়েছেন।
আবাসনগুলির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, কোন পরিচারিকা বা কোন গাড়িচালকের শরীরে যদি তাপমাত্রা দেখা দেয় তাহলে তাদের করোনা পরীক্ষা করানোর জন্য উদ্যোগ নেওয়া হবে । এবং বাধ্যতামূলকভাবে তাদের ১৫ দিনের জন্য বাড়িতে কোয়ারান্টিনে থাকতে বলা হবে। রিপোর্ট যদি পজিটিভ আসে তাহলে যে বাড়িতে তিনি কাজ করতে গিয়েছিলেন, সেই বাড়ির সদস্যদের সতর্ক করে বিষয়টি স্বাস্থ্য বিভাগকে জানানো হবে।
The post নেশা, আড্ডা ছাড়লে তবেই কাজ,পরিচারিকাদের জন্য কড়া নিয়ম সল্টলেকের আবাসনগুলিতে appeared first on Sangbad Pratidin.