সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: পাঁচ বছর আগে নেপিয়ারের এই মাঠেই ১২৩ রানের ইনিংস খেলেও দলের হার বাঁচাতে পারেননি বিরাট কোহলি। ওই সিরিজে খুব বাজেভাবে হারে ভারতীয় দল। তারপর পাঁচ বছরে অনেক কিছু বদলেছে। বিরাট কোহলির ব্যাটে এখন রানের জোয়ার। মাঠে নামলেই ব্যাট চওড়া হয়ে উঠতে সময় লাগে না। তাই আইসিসি-র বিচারে টেস্ট এবং ওয়ানডে ক্রিকেটে বর্ষসেরা হয়েছেন ভারত অধিনায়ক। তবে তিনি শুধু একা নন। দলে আরও অনেকে আছেন, যাঁরা একার কাঁধে দলকে টেনে নিয়ে যেতে পারেন। নিউজিল্যান্ড দলের সিনিয়র ক্রিকেটার রস টেলর বলছেন, শুধু বিরাটের দিকে ফোকাস রাখলে চলবে না। ওদের ওপেনাররা একবার সেট হয়ে গেলে ভারতকে রোখা মুশকিল। তাই গোটা দলের উপর নজর রাখতে হবে।” অনেকে বলছেন, নিউজিল্যান্ড সহজ হবে না। অস্ট্রেলিয়াকে যত সহজে মেরে দেওয়া গিয়েছে, উইলিয়ামসনদের হারানো ততটাই কঠিন হবে। মঙ্গলবার প্র্যাকটিস শেষে ভারত অধিনায়ক নিজেও বলেন, “যে যাই বলুন না কেন, এবারের লড়াই আমাদের সহজ হবে না। নিউজিল্যান্ড এই ফরম্যাটে ভাল দল। তার উপর নিজেদের মাঠে খেলবে। এই অ্যাডভান্টেজ নিয়ে সাউদি, বোল্টরা শুরুতে ঝড় তুলবে। এ সব মাথায় নিয়ে খেলতে হবে।” তার মানে অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে নামার আগে যে কথা শোনা যায়নি, তা সিরিজের শুরুতে কানে বাজছে।
ভারত অধিনায়ক ভুল বলছেন না। ১৬ বছর আগে বিশ্বকাপের ঠিক আগে ভারত খেলতে গিয়েছিল নিউজিল্যান্ডে। সিম-সুইংয়ের জবাব দিতে না পেরে সিরিজ হারে ভারত। তারপর বিশ্বকাপের লিগ ম্যাচে অবশ্য নিউজিল্যান্ডকে হারিয়ে দেয় ভারত। কী করে এমন হল। নিউজিল্যান্ডে বল বেশি মুভ করে। সেটা দক্ষিণ আফ্রিকার মাঠে দেখা যায়নি। তাই ভারতীয় ব্যাটসম্যানরা সহজে প্রতিপক্ষ বোলারদের খেলে দেয়। সেবার শেহওয়াগ ছাড়া কারোর ব্যাটে রান দেখা যায়নি। এবার কী হবে। কথায় আছে বল নড়লে ভারতীয় ব্যাটসম্যানদের পা নড়ে না। এমন হলে সাউদিদের কীভাবে সামাল দেবেন ব্যাটসম্যানরা? সমস্যা বাড়বে বোল্টের বল ভিতরে এলে অনেকেরই ঝামেলা হবে। রোহিত শর্মা দিয়ে শুরু। তারপর অনেকেই লাইনে আছেন। সাউদির পেসের সঙ্গে স্লোয়ার যেভাবে মিশিয়ে দেন, তা বুঝে ওঠার আগে ব্যাটসম্যান ব্যাট চালিয়ে পতন ডেকে আনে। এই পেস আক্রমণের সঙ্গে নিউজল্যান্ডের স্পিন ডিপার্টমেন্টও খারাপ নয়। স্যান্টনার, সোধিকে আছেন। ওরা রান আটকে দেওয়ার পাশাপাশি উইকেট নিয়ে চাপে ফেলতে পারে ভারতকে। ব্যাটিংয়ে উইলিয়ামসন, টেলর, গুপ্তিলরা আছেন। এমন চ্যালেঞ্জ অস্ট্রেলিয়ার কাছ থেকে পায়নি ভারত। তাই সিরিজ কঠিন হবে বলে সকলে ধরে নিয়েছেন। ভারতীয় দলে ভুবনেশ্বরকে সামলানো কঠিন হবে নিউজিল্যান্ডের। সাউদির মত তাঁর স্লোয়ারও পড়ে ফেলা কঠিন। সঙ্গে সামি আছেন। পাঁচ বছর আগে এখানে হেরে যাওয়া ম্যাচে সামি পেয়েছিলেন চার উইকেট। ভারতীয় স্পিনারদের নিয়েও মাথাব্যথা নিউজিল্যান্ডের। চাহাল-জাদেজা জুটি নাকি চাহাল-কুলদীপকে দেখা যাবে, তা নিয়ে প্রশ্ন রেখে দিয়েছে ম্যানেজমেন্ট। কোন জুটি মাঠে নামবে, তা এখনও ধোঁয়াশা। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ওয়ান ডে ক্রিকেটে অশ্বিন বা জাদেজার বদল জুটি হওয়া উচিত চাহাল-কুলদীপের। দুই রিস্ট স্পিনার খেললে ভারতকে দারুণভাবে ম্যাচে দেখা যাবে। এই ম্যাচে টস গুরুত্বপূর্ণ হবে। দিনরাতের খেলায় পরে ফিল্ডিং করতে গেলে শিশির কতটা থাকছে সেটা নিশ্চয় কোহলিরা প্র্যাকটিসে দেখে নিয়েছেন।
[পাণ্ডিয়ার মানবিক রূপ, অসুস্থ ক্রিকেটারকে দিলেন ব্ল্যাঙ্ক চেক]
বিকেলে খেলা হলেও মাঠে প্রচন্ড হাওয়া চলায় পেসাররা বলকে মুভ করাতে পারবেন। তাই টস জিতলে এই সব সুবিধাগুলি ভারতীয় দল নিতে পারবে। পাঁচ ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজ বলে শুরুর ধাক্কা নিয়ে হতাশ হওয়ার কিছু থাকবে না। হারলেও ফিরে আসার সুযোগ থাকবে। তাই ভারত দেখেশুনে পা ফেলতে চাইছে। ধাওয়ান বলছেন, অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে সিরিজ জয় বিশ্বকাপের আগে আত্মবিশ্বাস বাড়িয়েছে। আর নিউজিল্যান্ডে সিরিজ জিতলে তা আরও বেড়ে যাবে। কারণ, তারপর ঘরের মাঠে কোহলি অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে পাঁচটি ম্যাচ খেলে বিশ্বকাপের প্রস্তুতি সেরে নেবে। বিদেশের মাঠে নিজেদের দেখে নেওয়ার এটাই শেষ সুযোগ।
[আইসিসির বার্ষিক পুরস্কার মঞ্চের সেরা তিন খেতাব, ইতিহাসের খাতায় কোহলি]
The post কিউয়িদের বিরুদ্ধে প্রথম ম্যাচ, মেজাজি ভারতীয় শিবিরে প্রচণ্ড চাপও রয়েছে appeared first on Sangbad Pratidin.