সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ফের সামনে এল সরকারি হাসপাতালের অমানবিক মুখ। আধার কার্ড নেই বলে বের করে দেওয়া হল আসন্ন প্রসবাকে। বিতাড়িত প্রসূতি হাসপাতালের দরজাতেই কন্যাসন্তানের জন্ম দিলেন। একটা চাদর ছাড়া লজ্জা ঢাকার আর কোনও আবরণ ছিল না সদ্য মায়ের। হাসপাতাল চত্বরে রক্তাক্ত অবস্থায় বেশ কিছুক্ষণ পড়েছিলেন মা ও সদ্যোজাত। এরপর মহিলা ওয়ার্ডে দুজনকেই ভরতি নেয় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। চিকিৎসকরা পরীক্ষা করে জানান, সুস্থ আছেন মা ও শিশু। অমানবিক ঘটনাটি ঘটেছে গুরুগ্রামের একটি সরকারি হাসপাতালে।
[উরির কায়দায় জম্মুর সেনাঘাঁটিতে হামলা ৪ জইশ জঙ্গির, মৃত জওয়ানের কন্যা]
জানা গিয়েছে, শুক্রবার সকাল ন’টা নাগাদ প্রসব যন্ত্রণা শুরু হয় গৃহবধূ মুন্নির। আধঘণ্টার মধ্যে স্বামী বাবলু তাঁকে নিকটবর্তী সরকারি হাসপাতালে নিয়ে আসেন। ততক্ষণে মুন্নিদেবীর পরিস্থিতি শোচনীয়। যত তাড়াতাড়ি সম্ভব তাঁর চিকিৎসা যাতে শুরু করা যায়, তার জন্য ছোটাছুটি শুরু করেন বাবলু। তবে আধার কার্ড না থাকায় মুন্নিকে ভর্তি নিতে অস্বীকার করে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। এদিকে সময় যত যাচ্ছে স্ত্রী পরিস্থিতি তত খারাপ হচ্ছে। তাই জরুরি বিভাগে নিয়ে গিয়ে স্ত্রীকে ভরতি নিতে চিকিৎসকদের অনুরোধ উপরোধ করেন তিনি। এমনকী, সঙ্গে থাকা স্ত্রীর আধার নম্বরও দেখান। অন্য কোনও উপায় খুঁজে না পেয়ে নিজের আধার কার্ডও ব্যবহারের চেষ্টা করেন। কিন্তু চিকিৎসকরা অনড়। সাফ জানিয়ে দেওয়া হয়, প্রসূতির আধার নম্বর দিয়ে কাজ হবে না। আধার কার্ড চাই। তার ব্যবস্থা করুন। অসুস্থ স্ত্রীকে বসিয়ে রেখে নিকটবর্তী ক্যাফেতে গিয়েও কোনও সুরাহা হয়নি। হাসপাতালে ফিরে এসে বাবলু দেখেন দরজার সামনে বসে আছেন মুন্নিদেবী। প্রসবয্ন্ত্রণায় কুঁকড়ে যাচ্ছেন। অভিযোগ, বাবলু বেরিয়ে যাওয়ার পরই মুন্নিকে হাসপাতল থেকে বের করে দেওয়া হয়। কিছুক্ষণের মধ্যে সেই প্রবেশপথের মুখেই সন্তানের জন্ম দেন মুন্নিদেবী। সঙ্গে থাকা শাল দিয়ে স্ত্রীর লজ্জা নিবারণের চেষ্টা করেন বাবলু। রক্তে ভরে যায় গোটা হাসপাতাল চত্বর। এরপরেই মা ও শিশুকে ভর্তি নিয়ে নেয় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
এই প্রসঙ্গে হাসপাতালের মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক জানিয়েছেন, ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে ইতিমধ্যেই একটি অভিযোগ দায়ের হয়েছে। প্রসূতির সঙ্গে অমানবিক ব্যবহারের অভিযোগে হাসপাতালের তরফে সংশ্লিষ্ট নার্স ও চিকিৎসককে বরখাস্ত করা হয়েছে। ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে। মুন্নিদেবী ও বাবলুবাবু গুরুগ্রামের শীতলাকলোনির বাসিন্দা। গত সাত আট বছর ধরে তাঁরা এখানেই রয়েছেন। তাঁদের তিন বছরের একটি শিশুপুত্রও রয়েছে। পেশায় শ্রমিক বাবলুবাবুর দেশের বাড়ি উত্তর প্রদেশের গুরদিনপুরায়। তিন চারমাস আগে সেখানে গিয়ে আধার কার্ডের আবেদন জানিয়েছিলেন মুন্নিদেবী। কিন্তু সঙ্গে সঙ্গে আধার কার্ড দেওয়া সম্ভব হয়নি। এদিকে কাজে ফেরার তাড়া ছিল বাবলুবাবুর। শুধু আধার নম্বর নিয়েই চলে আসতে হয়। তাই নম্বর থাকলেও, তাঁদের কাছে আধার কার্ডটি ছিল না।
[পরীক্ষায় বসেছে পড়ুয়ারা, অথচ নেতা-মন্ত্রীর মনোরঞ্জনে স্কুলে চটুল নাচ]
The post আধার না থাকায় প্রসূতিকে ফেরাল হাসপাতাল, গেটের সামনেই প্রসব appeared first on Sangbad Pratidin.