সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: বিগত ১০০ বছর ধরে দেশে শান্তি ও সামাজিক সম্প্রীতি রক্ষায় কাজ করেছে গীতা প্রেস (Gita Press)। সেই কারণেই তাদের গান্ধী শান্তি পুরস্কারের (Gandhi Peace Prize) জন্য বেছে নেওয়া হয়েছে, জানিয়েছে কেন্দ্রের সংস্কৃতি মন্ত্রক। যদিও কংগ্রেসের (Congress) কটাক্ষ করেছে, “গীতা প্রেসকে পুরস্কার দেওয়া সাভারকর বা গডসেকে পুরস্কার দেওয়ার সমতুল্য।” গীতা প্রেসের প্রতিষ্ঠাতা অক্ষয় মুকলের গান্ধী বিরোধিতার প্রসঙ্গ তুলে ধরেন কংগ্রেস নেতা জয়রাম রমেশ। বিতর্কের এই আবহে গীতা প্রেসের তরফে এক বিবৃতিতে জানানো হল, সম্মান গ্রহণ করলেও পুরস্কার বাবদ ১ কোটি টাকার নগদ অর্থ তারা নেবে না।
১৯৯৫ সালে মহাত্মা গান্ধীর ১২৫তম জন্মবার্ষিকীতে গান্ধী শান্তি পুরস্কার চালু করে তৎকালীন ভারত সরকার। জাতি, ধর্ম, বর্ণ, ভাষা, শ্রেণি, লিঙ্গভেদে শান্তি রক্ষায় যাঁরা কাজ করেন, তাঁদেরই এই পুরস্কার দেওয়া হয়। এই পুরস্কারের অর্থমূল্য ১ কোটি টাকা। সেই সঙ্গে একটি শংসাপত্র, একটি ফলক এবং একটি ভারতীয় ঐতিহ্যের হস্তশিল্প বা হ্যান্ডলুমের তৈরি জিনিস উপহার দেওয়া হয়। এর আগে ইসরো, রামকৃষ্ণ মিশনের মতো বড় সংস্থা এই পুরস্কার পেয়েছে। ২০২১ সালের জন্য পুরস্কার প্রাপক হিসেবে গীতা প্রেসকে বেছে নিয়েছে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বাধীন জুরি কমিটি। এর বিরুদ্ধেই সরব হয়েছে কংগ্রেস।
[আরও পড়ুন: প্রবল বৃষ্টিতে বন্যার কবলে অসম, প্রভাবিত কমপক্ষে ৩৪ হাজার মানুষ]
কেন্দ্রের এই সিদ্ধান্তকে তীব্র কটাক্ষ করেন কংগ্রেস নেতা জয়রাম রমেশ (Jairam Ramesh)। তাঁর কথায়, “গীতা প্রেসকে পুরস্কার দেওয়া সাভারকর বা গডসেকে পুরস্কার দেওয়ার সমতুল্য।” রমেশ টুইট করেছেন, “২০২১ সাল গান্ধী শান্তি পুরস্কারটি গোরক্ষপুরের গীতা প্রেসকে প্রদান করা হচ্ছে, যারা চলতি বছর শতবর্ষ উদযাপন করছে। ২০১৫ সালে প্রকাশিত হয়েছে গীতা প্রেসের প্রতিষ্ঠাতা অক্ষয় মুকুলের আত্মজীবনী (গীতা প্রেস এবং হিন্দু ভারত গঠন)। যেখানে তিনি মহাত্মা গান্ধীর সঙ্গে চরম সংঘাতপূর্ণ সম্পর্কের কথা উল্লেখ করেছেন। নেপথ্যে উভয়ের রাজনৈতিক, ধর্মীয় এবং সামাজিক ভাবনার বিপরীতমুখীতা। অতএব কেন্দ্রের সিদ্ধান্ত প্রতারণামূলক। সাভারকর এবং গডসেকে পুরস্কার দেওয়ার সমতুল্য।”
[আরও পড়ুন: তামিলনাড়ুতে ভয়াবহ পথ দুর্ঘটনা, দু’টি বাসের মুখোমুখি সংঘর্ষে মৃত ৪, আহত বহু]
বিতর্কের এই আবহে পুরস্কারের অর্থমূল্য গ্রহণ করবে না বলে জানিয়ে দিল গীতা প্রেস কর্তৃপক্ষ। তারা জানিয়েছে সম্মান গ্রহণ করলেও অর্থমূল্য নেবে না। আরও জানানো হয়েছে, সরকার ওই অর্থ অন্য খাতে ব্যবহার করুক। উল্লেখ্য, চলতি বছরেই শতবর্ষ পূর্ণ হয়েছে গীতা প্রেসের। মূলত হিন্দু ধর্মীয় গ্রন্থের প্রকাশক তারা। তার মধ্যে রয়েছে রামায়ণ, মহাভারত থেকে পুরাণ কিংবা গীতা। এখনও পর্যন্ত ১৪টি ভাষায় ৪১ কোটি ৭০ লাখ বই ছেপেছে গীতা প্রেস। এরমধ্যে ১৬ কোটি ২১ লক্ষ শ্রীমদ্ভগবত গীতা।