সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ‘‘যাঁরা পরমাণু শক্তি নিয়ে আমাদের ভয় দেখান, আইএনএস অরিহন্তের সাফল্য তাঁদের জন্য উপযুক্ত জবাব।’’ অরিহন্তের সাফল্যের কথা ঘোষণা করে এমনটাই লিখলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। সেই সঙ্গে শুরু হয়ে গেল ভারতীয় প্রতিরক্ষাক্ষেত্রে এক নয়া যুগ। স্থল ও আকাশে আগেই ভারত পরমাণু অস্ত্রে প্রত্যাঘাতে সফল ছিল এবার জলভাগেও পারমাণবিক অস্ত্র হামলার প্রত্যুত্তর দিতে প্রস্তুত ভারত। আইএনএস অরিহন্ত ভারতের প্রথম পারমাণবিক সাবমেরিন। ১৯৭১-এ ভারত-পাক যুদ্ধের পরই জলপথে পারমাণবিক সক্ষমতার প্রয়োজনীয়তা অনুভব করেছিল ভারত। প্রক্রিয়া শুরু হয় তখনই। অবশেষে ২০১৬ সালে শেষের দিকে প্রথম সেনার হাতে আসে। কিন্তু তখনও অনেকরকমের পরীক্ষানীরিক্ষা বাকি ছিল।
[শুক্রবার ছাড়া তাজমহলে পড়া যাবে না নমাজ, নয়া নির্দেশে বিতর্ক]
অরিহন্ত সফলভাবে জলপথে চলাচল করতে পারছে কিনা, পরমাণু হামলার প্রত্যুত্তর দিতে পারছে কিনা এসবই পরীক্ষা করা বাকি ছিল। অবশেষে সেই প্রক্রিয়া সম্পন্ন হল, সোমবার প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ঘোষণা করলেন, আইএনএস অরিহন্তের সফলভাবে ‘ডেটারেন্স পেট্রোল’- সম্পূর্ণ হল। ভারতীয় জলসীমার ভিতরে এবং আন্তর্জাতিক জলসীমার নানা অংশ ঘুরে অরিহন্ত ফিরে এসেছে নির্দিষ্ট বন্দরে। এই দীর্ঘ মহড়ায় সমুদ্রের তলা থেকে ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়ে প্রতিপক্ষের উপরে পরমাণু হামলা চালানোর মহড়াও অত্যন্ত সফল ভাবে সম্পন্ন করেছে নিউক্লিয়ার সাবমেরিনটি। দেশের তৈরি প্রথম পরমাণু শক্তিচালিত ডুবোজাহাজের এই সফল ‘ডেটারেন্স পেট্রোল’ মহড়া অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, বলছে প্রতিরক্ষা মন্ত্রক।
[ধনতেরাসে লক্ষ্মী-গণেশের সঙ্গে বিকোচ্ছে সোনার মোদি-বাজপেয়ীও]
স্থল এবং আকাশ থেকে পরমাণু হামলা চালানোর ক্ষমতা আগেই ছিল ভারতের। শুধু সমুদ্রগর্ভ থেকে পরমাণু হামলা চালানোর ক্ষমতা ভারতের ছিল না। প্রকৃত পরমাণু শক্তিধর রাষ্ট্রের কাছে এই তিন সক্ষমতা থাকাই জরুরি। কারণ আধুনিক যুদ্ধের কৌশল বলছে, একটি পরমাণু শক্তিধর রাষ্ট্রের উপর অন্য একটি পরমাণু শক্তিধর রাষ্ট্র যদি পরমাণু হামলা চালায়, তা হলে এমন ভাবে হামলা চালানো হবে যাতে প্রতিপক্ষের ভূখণ্ডে যত পারমাণবিক পরিকাঠামো রয়েছে, সেগুলির সব ক’টিকে ধ্বংস করে দেওয়া যায়। সেই কারণেই ‘সেকেন্ড স্ট্রাইক ক্যাপাবিলিটি’ বা পরমাণু হামলা চালানোর বিকল্প পরিকাঠামো হাতে থাকা জরুরি। স্থলভাগে যে সব পরমাণু পরিকাঠামো রয়েছে, সেগুলিতে প্রতিপক্ষ হামলা চালাতে সক্ষম হলেও সমুদ্রের গভীরে লুকিয়ে থাকা পরমাণু অস্ত্রের ক্ষতি করা সম্ভব হয় না। কারণ পরমাণু অস্ত্র নিয়ে নিউক্লিয়ার সাবমেরিন কোথায় কখন লুকিয়ে থাকে, তা প্রতিপক্ষ বুঝতেই পারে না। আইএনএস অরিহন্ত সম্পূর্ণ রূপে প্রস্তুত হয়ে যাওয়ায় ভারত সমুদ্রের গভীরে পরমাণু অস্ত্র এবং মিসাইল মজুত করার সামর্থ্য পেয়ে গেল।
The post সফল আইএনএস অরিহন্ত, সম্পূর্ণ হল ভারতের ‘পারমাণবিক ত্রিশূল’ appeared first on Sangbad Pratidin.