সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: দূষণের গ্রাস জনজীবন তো বিপর্যস্তই। এর হাত থেকে তাজমহলকে বাঁচানোও এখন বড়সড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে উত্তরপ্রদেশ প্রশাসনের কাছে। তাই রাজ্যের দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের তরফে এই স্থাপত্যের সামনে বসানো হল এয়ার পিউরিফায়ার। এতে দূষিত বায়ু কিছুটা পরিশোধিত হয়ে তবেই তাজমহলের মার্বেলের সংস্পর্শে আসবে। যাতে বিক্রিয়ার মাত্রা কমে শ্বেত স্মৃতিসৌধের জৌলুস হারানোর আশঙ্কা খানিকটা হলেও কম হবে।
উত্তরপ্রদেশ দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ সূত্রে খবর, তাজমহলের সামনে এয়ার পিউরিফায়ার ভ্যান বসানো হচ্ছে। যা অন্তত ৩০০ মিটার ব্যাসার্ধের এলাকাজুড়ে ১৫ লক্ষ ঘনমিটার বায়ু পরিশোধন করবে। ভ্যানটি কাজ করবে অন্তত ৮ঘণ্টা। দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের আঞ্চলিক অধিকর্তা ভুবন যাদবের কথায়, ‘এখানকার পরিস্থিতির দিন দিন যেভাবে অবনতি হচ্ছে, তাতে তাজমহল নিয়ে আমরা চিন্তিত। তাই তাজের পশ্চিমদিকে একটি এয়ার পিউফায়ার ভ্যান বসানো হয়েছে।’ রাজধানীর অদূরে বিশ্বের সপ্তম আশ্চর্য তাজমহলের শ্বেতশুভ্র মার্বেল পাথরে বেশ কয়েক বছর আগেই লেগেছে দূষণের অভিশাপ। দূষিত বায়ুকণার সংস্পর্শে মার্বেলের রাসায়নিক বিক্রিয়ায় শুভ্রতা হারিয়ে যাচ্ছে বলে পরিবেশবিদরা সচেতন করেছিলেন বহুদিন আগেই। সেইমতো তাজের চারপাশের এলাকাকে দূষণমুক্ত রাখার চেষ্টার ত্রুটি ছিল না প্রশাসনের।
[ আরও পড়ুন: NRC ভবিষ্যতের ভিত্তি, মন্তব্য প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈর]
কিন্তু সাম্প্রতিক পরিস্থিতি প্রায় হাতের বাইরে। গোটা শহর কার্যত গ্যাস চেম্বারে পরিণত হয়েছে। এই প্রভাব কাটাতে পারে না তাজমহলও। আগ্রা নগর নিগম, দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের পাশাপাশি দুটি টেলিকম সংস্থাও তাজমহলকে বাঁচাতে উদ্যোগী হয়েছে। যৌথ উদ্যোগে দুটি এয়ার পিউরিফায়ার বসানো হয়েছে ঐতিহাসিক স্মৃতিসৌধের সামনে। দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের তরফে জানানো হয়েছে, এই মুহূর্তে তাজমহলের সামনে এয়ার কোয়ালিটি ইনডেক্স মাপার জন্য কোনও যন্ত্র নেই। তাই ওই দুটি এয়ার পিউরিফায়ার কতটা কাজ করছে, কতটা বায়ু পরশোধিত হচ্ছে, তার চুলচেরা হিসেব এখনই পাওয়া সম্ভব নয়। তবে রবিবার বিকেল পর্যন্ত দিল্লির এয়ার কোয়ালিটি ইনডেক্স প্রায় ৫০০ ছুঁয়েছে।
[ আরও পড়ুন: বই চুরির দায়ে ধৃত প্রাক্তন সেনা আধিকারিক, উঠছে চরবৃত্তিরও অভিযোগ]
এদিকে, রাজধানী শহরের বায়ুদূষণ চরম পর্যায়ে পৌঁছনোয় আজ থেকে ফের জোড়-বিজোড় ফর্মুলা শুরু হল। রাস্তায় গাড়ি বেরনো নিয়ে কেজরিওয়াল সরকারের বহু পুরনো নিয়ম ফিরছে নতুন সপ্তাহ থেকে। এতে খুব ভালভাবে নজরদারির জন্য ট্রাফিক পুলিশের পাশাপাশি অন্তত ৫ হাজার স্বেচ্ছাসেবককে প্রশিক্ষণ দিয়ে রাস্তায় নামানো হয়েছে। সতর্ক হয়েছেন মন্ত্রীরাও। উপমুখ্যমন্ত্রী মণীশ শিশোদিয়া নিজে সাইকেল নিয়ে কার্যালয়ে যাচ্ছেন। এই পরিস্থিতিতে জোড়-বিজোড় ফর্মুলা প্রয়োগ করে দূষণ কতটা নিয়ন্ত্রণ করা যায়, তা নিয়ে সংশয় পরিবেশবিদরা।
The post দূষণের বিরুদ্ধে কোমর বেঁধে লড়াইয়ে নামল দিল্লি, চালু জোড়-বিজোড় ফর্মুলা appeared first on Sangbad Pratidin.