সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ভোরের আলো ফুটতেই হাজার, হাজার চাকরিজীবী ছোটেন নিজেদের অফিসে। ট্রেন, বাসের ভিড় ঠেলে। তীব্র গরম, বর্ষার জল কিংবা কনকনে ঠান্ডা উপেক্ষা করে যান কর্মক্ষেত্রে। ফের দিনের শেষে বাড়িতে ফেরেন। চাইলে কি অফিসের কাছে তাঁরা থাকতে পারেন না? খুব সহজেই পারেন! কিন্তু পরিবারের সঙ্গে সময় কাটানো, স্ত্রী-সন্তানের মুখ দেখার জন্য পাড়ি দেন বহু কিলোমিটার। কিন্তু পরিবারকে সময় দেওয়ার জন্য অবাক কাণ্ড ঘটালেন ভারতীয় বংশোভূত বধূ। ট্রেন, বাস, অটো নয় প্রতিদিন বিমানে 'ডেলি প্যাসেঞ্জারি' করেন তিনি। শুধু সন্তানদের সময় দেবেন বলে।

রাচেল কৌর। মালয়েশিয়া এয়ার এশিয়া বিমান সংস্থায় অর্থ বিভাগের সহকারি ম্যানেজার হিসাবে কর্মরত। তিনি প্রতিদিন পেনাং বিমানবন্দর থেকে বিমান ধরে কুয়ালালামপুরে পৌঁছন। সেখান থেকে মিনিট পনেরো দূরের অফিসে যান সময় মতো। রাত ৮টায় কাজ শেষ করে ফিরতি বিমান ধরেন। দিনে ৫০-১০০ কিলোমিটার নয়, প্রায় ৭০০ কিলোমিটার পথ পাড়ি দেন রাচেল।
কিছুদিন আগে পর্যন্ত তিনি অফিসের কাছে কুয়ালালামপুরে একটি বাড়ি ভাড়া নিয়ে থাকতেন। সপ্তাহান্তে পেনাংয়ে বাড়িতে ফিরতেন। কিন্তু এর ফলে পরিবার ও দুই সন্তানকে সময় দিতে পারছিলেন না। রাচেলের ১২ ও ১১ বছরের দুই সন্তান রয়েছে। তাঁরা বেড়ে ওঠার সময়ে মায়ের অভাব বোধ করছিল। বাচ্চাদের এই সময়ে তাঁকে ভীষণভাবে দরকার, তা বুঝতে পেরে প্রতিদিন বিমানে অফিস যাওয়া আসার সিদ্ধান্ত নেন রাচেল। আন্তর্জান্তিক সংবাদমাধ্যম সিএনএকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে রাচেল বলেন, "বাচ্চাদের বেড়ে ওঠার সময়ে আমার মনে হয়েছে ওদের পাশে আমাকে দরকার। বিমানে আসা-যাওয়ার ফলে রাতে ওদের সঙ্গে থাকতে পারি।"
কিন্তু এই বিমানে যাতাওয়াত তো খরচ সাপেক্ষ? কিন্তু রাচেল জানিয়েছেন, এই সিদ্ধান্তের ফলে তাঁর খরচ আরও কমে গিয়েছে। আগে ভাড়া বাড়িতে থাকাকালীন মাসে ভারতীয় টাকায় তাঁর খরচ হত প্রায় ৪১ হাজার টাকা। এখন যাতায়াতে তাঁর খরচ ২৭হাজার টাকা।
তবে নির্দিষ্ট সময়ে অফিস পৌঁছতে তাঁকে ভোর ৪টে ঘুম থেকে উঠতে হয়। ৫টার সময় বাড়ি থেকে বেরিয়ে কুয়ালালামপুরে পৌঁছন সাড়ে ৬টায়। অফিসে যান ৭টা ৪৫মিনিটে। ৮টার মধ্যে বেরিয়ে আসেন তিনি। তাঁর সহকর্মী ও অফিস তাঁকে সবসময় সাহায্য করেন বলে জানিয়েছেন রাচেল।