অতুলচন্দ্র নাগ, ডোমকল: পঞ্চায়েত নির্বাচন ঘিরে ফের উত্তপ্ত মুর্শিদাবাদের রানিনগর। এবার জোট কর্মীদের আক্রমণে তৃণমূলের চারজন কর্মী জখম হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। জখমদের মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়েছে। শনিবার রাত এগারোটা নাগাদ ওই ঘটনাটি ঘটেছে মুর্শিদাবাদের রানিনগরের মালীবাড়ি ১ গ্রাম পঞ্চায়েতের মরিচা গ্রামে। ওই ঘটনায় ব্যাপক উত্তেজনার সৃষ্টি হয়েছে। তৃণমূল সূত্রে জানা গিয়েছে, জখমদের নাম তাইজুল ইসলাম (৫২), টিয়ারুল ইসলাম (৪৪), তারিকুল ইসলাম (২৬) ও আমগীর শেখ (২৪)। তাদের বাড়ি ওই মরিচাতেই। পুলিশ ওই ঘটনায় ৭ জনকে আটক করেছে বলে জানা গিয়েছে।
রানিনগর ২ ব্লকের যুব তৃণমূলের সভাপতি মিজান হাসান জানান, “আমাদের কর্মীরা ভোটপ্রচার করছিল। তখন কংগ্রেস ও সিপিএম আশ্রিত দুষ্কৃতীরা তাঁদের মারধর করে। লাঠি ও আগ্নেয়াস্ত্রের বাঁট দিয়ে মেরে চারজনেরই মাথা ফাটিয়ে দিয়েছে। তাদের শারীরিক অবস্থা এখন আশঙ্কাজনক।” ওই অবস্থায় তাঁদের উদ্ধার করে রানিনগরের গোধনপাড়া গ্রামীণ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। শারীরিক অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয় তাঁদের। ওই ঘটনায় এলাকায় ব্যাপক উত্তেজনা তৈরি হয়। স্থানীয়রা জানান, ইতস্তত বিক্ষিপ্তভাবে বোমাবাজিও হয়। তার মধ্যেই এলাকায় ব্যাপক পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নেয় ও পরপর সাতজনকে আটক করে।
[আরও পড়ুন: জয়েনিং লেটার নিয়ে তরজার মাঝে রবিবার রাজ্য নির্বাচন কমিশনারকে তলব রাজ্যপালের
এদিকে, কংগ্রেসের রানিনগর ২ নম্বর ব্লকের প্রাক্তন সভাপতি আমজাদ হোসেন জানান, “তৃণমূলের কোনও ভোট প্রচার চলছিল না। মদ খাওয়া নিয়ে ঝামেলার সূত্রপাত। তাই নিয়ে দলাদলি। পরে তৃণমূলের অঞ্চল সভাপতি রেজাউলের নেতৃত্বে বোমাবাজি করা হয়েছে। ভাঙচুর করা হয়েছে সিপিএমের রাষ্ট্রপতি পুরুস্কার প্রাপ্ত প্রাক্তন প্রধান শিক্ষক আতাউর রহমানের বাড়িতেও।” রানিনগর ২ ব্লকের কংগ্রেস সভানেত্রী মমতাজ বেগম হীরা জানান, “শনিবার জোটের সভায় জনতার ঢল দেখে তৃণমূল নেতৃত্বের মাথা খারাপ অবস্থা। আর তাই সারারাত ধরে ব্লকের বিভিন্ন এলাকায় সন্ত্রাস করেছে। মরিচায় ওদের কর্মীরা মদখাওয়া নিয়ে ঝামেলায় জখম হয়েছে। তার পরেই ওই এলাকায় বিরোধীদের বেশ কয়েকটি বাড়িতে ভাঙচুর করেছে। রাস্তায় যত ফ্ল্যাগ, ফেষ্টুন ছিল ছিঁড়ে ফেলেছে। কালীনগর ২ পঞ্চায়েতের মীরপাড়ায় কংগ্রেসের পঞ্চায়েত সমিতির সদস্য মিনুয়ারা বিবি ও গ্রাম পঞ্চায়েত সদস্য সোনা খাতুনের বাড়িতে ভাঙচুর করেছে।”
ঘটনায় এলাকার মানুষের নিরাপত্তা ও সুষ্ঠু নির্বাচনের (Panchayat Election) দাবি জানিয়ে রাজ্যপাল ও নির্বাচন কমিশনের কাছে আবেদন করেছেন কংগ্রেসের রানিনগর ২ ব্লকের নির্বাচন কমিটির চেয়ারম্যান জাহাঙ্গির ফকির। তিনি জানান, “তৃণমূল নেতৃত্ব চেষ্টা করেও বিরোধীদের মনোনয়ন আটকাতে পারেনি। এখন সন্ত্রাস করে ভয় দেখিয়ে প্রার্থীদের নিষ্ক্রিয় করার পরিকল্পনা করেছে। যা প্রতিহত করতে হবে। না হলে মানুষের গণতান্ত্রিক অধিকার ভোটদান সম্পন্ন হবে না।