সৌরভ মাজি, বর্ধমান: কোলে দুধের শিশু। দীর্ঘক্ষণ ঘোরাঘুরি করছেন ভোটকর্মীদের বণ্টন কেন্দ্রে (ডিসিআরসি)। শিশুটি মাঝে মাঝে কেঁদেও উঠছে। তাকে বুকের দুধ খাওয়ানো প্রয়োজন বুঝতে পারছেন মা। কিন্তু কোথায় খাওয়াবেন শিশুকে বুকের দুধ! কোনও জায়গাই যে খুঁজে পাচ্ছেন না। ডিসিআরসিতে কোনও ‘ব্রেস্ট ফিডিং রুমই যে নেই। একজন মায়ের এমন অসহায়তার আর কে বোঝে!
তিনি পূর্ব বর্ধমানের জামালপুর ব্লকের এক মহিলা ভোটকর্মী (WB Panchayat Vote 2023) মামণি বাজ। পেশায় স্কুল শিক্ষিকা। জামালপুরেরই বিষ্ণুবাটি অবৈতনিক প্রাথমিক বিদ্যালয়ে কর্মরত। আদি বাড়ি বাঁকুড়ায়। তবে কর্মসূত্রে এখন স্বামী রামপ্রসাদ সাঁতরার সঙ্গে বিষ্ণুবাটিতেই থাকেন। তাঁদের ১১ মাসের পুত্রসন্তান রিশান সাঁতরা। দুধের শিশু থাকা সত্ত্বেও এবার তাঁর ভোটের ডিউটি পড়েছে। শুক্রবার জামালপুর হাইস্কুলের ডিসিআরসিতে শিশু কোলে হাজির হয়েছিলেন মামণি। সেখানে চূড়ান্ত অব্যবস্থা নিয়ে অনেক ভোটকর্মীই অভিযোগ করছিলেন। কিন্তু আরও অসহায় লাগছিল এই মহিলা ভোটকর্মীকে।
[আরও পড়ুন: বঙ্গবাসীর মন ছুঁতে পারছে না ‘জয় শ্রী রাম’! ‘জয় মা দুর্গা’, ‘জয় মা কালী’ ধ্বনির ভাবনা বিজেপির]
জানান, প্রথম ভোটের ডিউটির চিঠি আসার পর শিশু সন্তানের কথা জানিয়ে অব্যাহতি দেও আর আবেদন জানিয়েছিলেন। কিন্তু সেটা যে মঞ্জুর হয়নি এদিন ডিসিআরসিতে তাঁর হাজির হওয়াতেই স্পষ্ট। মামণি জানান, শিশুকে কোলে নিয়েই দুইবার ভোটের প্রশিক্ষণ নিয়েছেন। ভোটগ্রহণের মতো একটা ঝুঁকির কাজে শিশুসন্তান সহ মহিলাকে নিয়োগ করা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।
মামণি বলেন, “শিশু আমাকে ছাড়া থাকবে না। এখনও স্তন্যপান করে। ওকে নিয়ে ভোটের ডিউটি করাও সমস্যা। অব্যাহতি চেয়ে আবেদন করেছিলাম। তা মঞ্জুর হয়নি। এখন ডিসিআরসিতে বসে রয়েছি। বাচ্চাটাকে দুধ খাওয়াব একটু জায়গাও নেই। খুবই সমস্যায় পড়েছি।” নির্বাচনী দপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে, এবার জেলায় মোট ৩৯৩৩টি বুথের মধ্যে শুধুমাত্র মহিলা পরিচালিত বুথ করা হয়েছে ২১৬টি। সেই কারণে এবার ভোটে মহিলাকর্মীর সংখ্যাও বেশি নিতে হয়েছে। জামালপুর ব্লকেও মহিলা পরিচালিত বুথ রয়েছে ১২টি।
দেখুন ভিডিও: