অভিরূপ দাস: হিন্দু বাবার ঘরে জন্ম নিল রমজান। মুসলিম মায়ের কোল আলো করে এল সৌহার্দ্য। সম্প্রীতির এক উজ্জ্বল নজির মাথা তুলল কলকাতা মেডিক্যাল কলেজের অ্যানেক্স লেডি ডাফরিন হাসপাতালে (Lady Dufferin Victoria Hospital)।
মেয়ে মুসলিম, ছেলে হিন্দু। ফলে তাঁদের ঘর বাঁধায় দুই পরিবারের মত ছিল না। তা নিয়ে দুই পরিবারে চূড়ান্ত ঝামেলা। বাড়ির অমতে গিয়েই দু’বছর আগে বিয়ে সেরেছিলেন নাসির বানু ও রাকেশ দে। উত্তর ২৪ পরগনার বিরাটিতে (Birati) থাকেন দম্পতি। সামান্য ড্রাইভারের কাজ করেন রাকেশ। নাসির বানু নিজে একটি ছোটখাটো বেসরকারি হাসপাতালের নার্স। ঘটনাচক্রে রবিবার পবিত্র রমজানের দিন প্রসব যন্ত্রনা নিয়ে ডাফরিন হাসপাতালের জরুরি বিভাগে স্ত্রীকে নিয়ে গিয়েছিলেন রাকেশ। সেখানে তখন ছিলেন চিকিৎসক রাজেশ বিশ্বাস। স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞ রাজেশ বিশ্বাস জানিয়েছেন, মহিলাকে দ্রুত স্ত্রীরোগ বিভাগে ভরতি করা হয়। ওঁর স্থূলতা সংক্রান্ত সমস্যা ছিল। ওজন ছিল প্রায় ১০৪ কেজি। স্বাভাবিকভাবেই অত্যন্ত সতর্কতার সঙ্গে সিজার করতে হয়েছে।
[আরও পড়ুন: ঝাড়খণ্ডের দুমকায় অস্ত্র কারখানার পাণ্ডা কলকাতার দাগি আসামি! গ্রেপ্তারির পর মিলল তথ্য]
সাধারণত ৩৭ সপ্তাহ থেকে ৪২ সপ্তাহের মধ্যে শিশুর নর্মাল ডেলিভারি বা স্বাভাবিক প্রসব হয়। এখানে নাসির বানুর সন্তান জন্ম নেয় ৩৯ সপ্তাহে। চিকিৎসক জানিয়েছেন, জন্মের সময় শিশুটির ওজন ছিল ২ কেজি ৭০০ গ্রাম। জন্মের পরই ঠিক হয়ে যায় খুদের নাম। ডা. রাজেশ বিশ্বাসের বক্তব্য, “আমিই বলি সন্তানের একটা নাম রমজান রাখতে। তা মেনে নিয়েছেন মা-বাবা।” আবার হিন্দু মুসলিম সম্প্রীতির প্রতীক হিসাবে ছেলের অন্য নাম দিয়েছেন সৌহার্দ্য।
সম্প্রতি পড়শি দেশের ঢাকাতেও ইসকন রাধাকান্ত মন্দিরে হামলা, ভাঙচুর ও লুঠপাট হয়েছে। সেখানে তিলোত্তমার এহেন ঘটনায় সম্প্রীতির উষ্ণতা দেখে খুশি দুই ধর্মের মানুষই। রাকেশ জানিয়েছেন, “প্রেম করার সময়ও হিন্দু-মুসলিম বিষয়টি মাথায় আসেনি। এখনও নেই। তাঁর কথায়, ছেলে বড় হয়ে যে কোনও ধর্ম গ্রহণ করতে পারে। তাতে আমাদের কোনও বাধা থাকবে না।”