সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ‘মঙ্গল গ্রহ থেকেও আপনাকে ফিরিয়ে আনা যেতে পারে৷’ বিদেশমন্ত্রী থাকাকালীন এমনই টুইট করেছিলেন সুষমা স্বরাজ৷ তবে তা কথার কথা ছিল না৷ নিজের অসুস্থতাকে তুচ্ছ করে ভিন দেশে আটকে পড়া ভারতীয়দের উদ্ধার করে প্রকৃতই জননেত্রী হয়ে উঠেছিলেন সুষমা৷ তাই তাঁর মৃত্যুতে চোখে জল উপকৃতদের৷
সময়টা ২০০৩ সাল৷ উপযুক্ত পরিচয়পত্র না দেখাতে পারায় পাকিস্তানে আটকে পড়েছিলেন বছর এগারোর মূক ও বধির কিশোরী গীতা৷ লাহোরে আটকে পড়েন তিনি৷ বরাবরই বিদেশ বিভুঁইয়ে আটকে পড়াদের উদ্ধারে ত্রাতার মতো দাঁড়াতেন বিদেশমন্ত্রী সুষমা স্বরাজ৷ তিনি গীতার ডিএনএ টেস্টের ব্যবস্থা করেন৷ নানা আইনি মারপ্যাঁচের পর গীতাকে ভারতে ফেরানো হয়৷
বয়স বেড়েছে গীতার৷ সুষমার মৃত্যুতে চোখের জল ধরে রাখতে পারছেন না বছর সাতাশের তরুণী৷ ইঙ্গিতেই সুষমার প্রতি ভালবাসা উজাড় করে দেন ‘নির্বাক’ গীতা
[আরও পড়ুন: পরিবারের অমতে বিয়ে, ৪৪ বছর পর সুষমাকে হারিয়ে নিঃসঙ্গ স্বামী]
১৯৯০ সালে ভুলবশত কাঁটাতার পেরিয়ে পাকিস্তানে পৌঁছে গিয়েছিলেন সরবজিৎ। তখনই প্রতিবেশী রাষ্ট্রে এক বিস্ফোরণের সঙ্গে যোগ থাকার অভিযোগ তুলে তাঁকে গ্রেপ্তার করে পাক পুলিশ। এমন অভিযোগেই সরবজিৎকে মৃত্যুদণ্ডের সাজা শুনিয়েছিল পাক আদালত। তাঁর দিদি দলবীর কৌর ভাইকে নির্দোষ প্রমাণের জন্য আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়ে গিয়েছিলেন। ভারতের তরফে বহুবার আবেদন করেও লাভ হয়নি।
সুষমার মৃত্যু পেতে নিতে পারছেন না সরবজিতের দিদি৷ তাঁর মৃত্যুকে অপূরণীয় ক্ষতি বলেই জানান দলবীর কৌর৷
প্রয়াত প্রাক্তন বিদেশমন্ত্রী সুষমা স্বরাজের নিরন্তর চেষ্টায় পাকিস্তানের জেলে বন্দি ভারতীয় ইঞ্জিনিয়ার হামিদ আনসারিকে উদ্ধার করে আনা সম্ভব হয়। সুষমার মৃত্যুতে কান্নায় ভেঙে পড়লেন হামিদ আনসারির মা ফৌজিয়া আনসারি। তিনি বলেন, সুষমা স্বরাজ তাঁর কাছে ‘ঝাঁসির রানি’। শুধু রাজনীতিবিদ নন, ‘মানুষ’ সুষমা স্বরাজের পরিচয় তিনি পেয়েছিলেন বলে জানান। ফৌজিয়া জানান, ‘‘ওনার সঙ্গে প্রথম সাক্ষাত্ আমি কখনই ভুলব না। সুষমাজির বাংলোর সামনে অনেক লোক ছিল। তার মধ্যে তাঁর গাড়ি পর্যন্ত ছুটে গিয়ে কোনওরকমে আমি দেখা করি। বলেছিলাম যে চোখের জল ছাড়া ওনাকে দেওয়ার মতো আমার কাছে কিছুই নেই। তখনই উনি আমাকে সেইদিন বিকেল ৪টেয় ওনার অফিসে দেখা করতে বলেন। আমি অবাক হয়ে গিয়েছিলাম। হামিদ যখন ফিরে এল, তখন আমাদের থেকেও যেন সুষমাজি বেশি খুশি হয়েছিলেন। উনি বলতেন যে হামিদ ওনার ছেলের মতো।’’
[আরও পড়ুন: ‘আগামিকাল ১ টাকা নিয়ে যাবেন’, শেষ ফোনে হরিশ সালভেকে বলেন সুষমা]
একইরকম প্রতিক্রিয়া টেলি তারকা করণজিৎ বোহরারও৷ মস্কোয় গিয়ে পাসপোর্টের সমস্যার জেরে আটকে পড়েছিলেন ওই অভিনেতা৷ বিদেশমন্ত্রী থাকাকালীন টেলি তারকাকে সাহায্য করেছিলেন সুষমা স্বরাজ৷ তাঁর মৃত্যুর খবর শুনেই পুরনো দিনের কথা বড্ড মনে পড়ছে করণজিতের৷ টুইটে শোকজ্ঞাপন করেন টেলিতারকা৷
The post চলে গেলেন সুষমা, ইঙ্গিতেই শোকপ্রকাশ নির্বাক গীতার appeared first on Sangbad Pratidin.